facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল বুধবার, ২০২৪

Walton

শর্তসাপেক্ষে শেয়ার বিক্রিতে আরো ছয়মাস পেল ডিএসই


২৩ জুন ২০১৭ শুক্রবার, ০৩:২০  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


শর্তসাপেক্ষে শেয়ার বিক্রিতে আরো ছয়মাস পেল ডিএসই

স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর বা কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে পেতে আরো ছয় মাস সময় দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠান স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, ব্যবসা ও কারিগরি দিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে, শুধু এমন প্রতিষ্ঠানের কাছেই এ শেয়ার বিক্রি করতে হবে। এক্ষেত্রে বিদেশি স্বনামখ্যাত প্রতিষ্ঠানকেই প্রাধান্য দিতে হবে। দেশি কোনো কোম্পানির এমন যোগ্যতা না থাকলে সেগুলো যত দরই প্রস্তাব করুক তাদের কাছে শেয়ার বিক্রি করা যাবে না।
 
বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করতে গেলে এ সময়সীমা বাড়ানোর কথা জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা-দৈনিক সমকালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর নির্বাচনের বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করেছে কমিশন।

এ সময় ডিএসইর পক্ষ থেকে এখনই স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার বিক্রির জন্য আইপিওতে যাওয়ার প্রস্তাব করা হয়। তবে বিএসইসি স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর নেওয়ার পরই আইপিওতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন, কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী, আমজাদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডিএসইর প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাশেম। সঙ্গে ছিলেন পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান মিঞা, রকিবুর রহমান, শাকিল রিজভী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাজেদুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

২০১৩ সালে মালিকানা বিভাগ থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগকে পৃথক করতে ডিমিউচুয়ালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জের আইন পাস হয় সংসদে। এই আইন অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান থেকে মুনাফাকেন্দ্রিক কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। এতে স্টক এক্সচেঞ্জের মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টরদের জন্য সংরক্ষণে রাখতে বলা হয়। আইন অনুযায়ী ২০১৫ সালের শেষে পরবর্তী এক বছরের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক শেয়ার বিক্রির নির্দেশ দেয় বিএসইসি। ওই সময়সীমা গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হয়। এরপর স্টক এক্সচেঞ্জের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস সময় বাড়িয়ে দিয়েছিল বিএসইসি। গত চলতি জুনে তা শেষ হচ্ছে।

এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার বৈঠকে স্ট্র্যাটেজিক শেয়ার বিক্রির বিষয়ে ডিএসইর পদক্ষেপ কমিশন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। স্টক এক্সচেঞ্জটির পক্ষ থেকে বলা হয়, দুই দফা চেষ্টা করেও স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর হতে পারে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভালো প্রস্তাব পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় ডিএসইর পর্ষদ স্ট্র্যাটেজিক শেয়ার এখনই বিক্রি করতে রাজি হয়নি।

এ সময় ডিএসইর পর্ষদ জানায়, স্ট্র্যাটেজিক শেয়ারহোল্ডার হতে আগ্রহপত্র আহ্বান করার পর কিছু দেশীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান একাধিক গ্রুপে দরপ্রস্তাব করে। এর মধ্যে লংকাবাংলা ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স গ্রুপটি ডিএসইর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের জন্য সর্বোচ্চ সাড়ে ৩৩ টাকা দরে দরপ্রস্তাব করেছে। নরডিক দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের সমন্বিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ব্র্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্সের নেতৃত্বাধীন একটি বিদেশি গ্রুপ ডিএসইর স্ট্র্যাটেজিক শেয়ার কিনতে আগ্রহ দেখালেও দরপ্রস্তাব করেছে মাত্র ১২ টাকা হারে।

সূত্র জানায়, ডিএসইর যুক্তি আমলে নিয়েছে বিএসইসি। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্ট্র্যাটেজিক শেয়ার ইনস্টিটিউশনাল শেয়ার নয়। তাই যত বেশিই দরপ্রস্তাব করুক না কেন দেশীয় এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে স্ট্র্যাটেজিক শেয়ার বিক্রি করা যাবে না, যারা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে না।

ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, `স্ট্র্যাটেজিক শেয়ার বিক্রির চেষ্টা চলবে। তবে ভালো প্রস্তাব পাওয়া যায়নি। কমিশনকে এটা অবহিত করা হয়েছে। সব শুনে বিএসইসি ভালো স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর খুঁজে পেতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়ার কথা বলেছেন। এর আগে ক্লিয়ারিং করপোরেশন, স্মলক্যাপ মার্কেট প্রতিষ্ঠান ও ইটিএফ চালুর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।`

নতুন সময়সীমার মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর পাওয়া না গেলে কি হবে- এমন প্রশ্নে রকিবুর রহমান বলেন, `ডিএসই সাধ্যমতো চেষ্টা করবে। না পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই কমিশন তা বিবেচনা করবে।`

ডিএসইর বিদ্যমান পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৮০৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মোট শেয়ারের ৪০ শতাংশ বিদ্যমান ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মালিকরা প্রাথমিক শেয়ারহোল্ডার হিসেবে সমহারে পেয়েছেন। ২৫ শতাংশ শেয়ার স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টরদের জন্য এবং বাকি ৩৫ শতাংশ আইপিও প্রক্রিয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করা আছে। গত ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত বছরে স্টক এক্সচেঞ্জটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৬৬ পয়সা। এর মধ্যে পরিচালন মুনাফা ছিল মাত্র ৬ পয়সা। এ কারণে বিদেশি স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টররা শেয়ার পেতে আগ্রহী হননি বা ভালো দরপ্রস্তাব করেননি বলে জানা গেছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: