১৬ জানুয়ারি ২০১৭ সোমবার, ০৬:৪৬ পিএম
এমএ ওয়াদুদ মিয়া, শরীয়তপুর
শেয়ার বিজনেস24.কম
শাহজাহান শিকদার |
গোসাইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহজাহান শিকদারের বিরুদ্ধে কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচির আওতায় বিশেষ বরাদ্দকৃত ১০ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যার বর্তমান বাজার দাম ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, বরাদ্দকৃত ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার হিসাব এখনও কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেননি তিনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার কারণে অফিস প্রধানরা ওই কাজের হিসাব চাইতেও বিব্রতবোধ করছেন। এদিকে শাহজাহান শিকদার কাজ না করায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষকসহ অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ণ অফিস সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের বিশেষ কোঠা থেকে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করার জন্য গোসাইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান শিকদারকে ১০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। শর্তে বলা হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু কাজের সময় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি ওই বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট সম্পন্ন না করেই পুরো টাকা আত্মসাৎ করেন।
সরেজমিনে গোসাইর হাটের নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে কোনো মাটি ফেলা হয়নি। দুই বছর আগে মাঠটি যেমন ছিলো আজও মাঠটি তেমনি রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্র বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠ বর্ষায় পানিতে ভরে যায়। আমরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারি না। তাই সরকার এ মাঠ ভরাট করার জন্য দশ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছিল। শুনেছি ওই ১০ টন চাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান শিকদার হজম করে ফেলেছেন। আবার কবে নাগাদ এ মাঠ ভরাট হবে জানি না।
নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনসার উদ্দিন বেপারী বলেন, এ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করার জন্য ১০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। ওই টাকা দিয়ে মাঠটিতে আংশিক মাটি ফেলা হয়েছে। পাইপ কেটে ফেলার কারণে পুরো মাটি ফেলতে পারেনি। পরবর্তীতে পুরো মাটি ফেলা হবে।
এ ব্যাপারে গোসাইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান শিকদার বলেন, নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করার জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ণ অফিস কাজের বিনিময় খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্প থেকে ১০ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছিল। বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট করার জন্য ড্রেজারের পাইপ বসানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে কে বা কাহারা ওই পাইপ ভেঙ্গে ফেলে। যার কারণে মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি। শিগগিরই বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করে দেব।
এ ব্যাপারে গোসাইরহাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ণ কর্মকর্তা তাহমিনা চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু বলবো না। আপনারা গোসাইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান শিকদারের সঙ্গে আলাপ করেন। তিনিই সব কিছু বলতে পারবেন।
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছগির হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে আমি তেমন কিছুই জানি না।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।