facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

লোকসান গুনেও বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেনি জিএসকে


২৯ জুন ২০১৯ শনিবার, ০১:৪৮  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


লোকসান গুনেও বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেনি জিএসকে

ওষুধ ব্যবসায় অনেক বছর ধরে লোকসান দিচ্ছিল গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশ লিমিটেড। তাই ওষুধের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে কোম্পানিটি। এর জন্য কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকাসহ মোট ২০১ কোটি টাকা সমন্বয় করতে হয়েছে। এতে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটি বড় ধরনের লোকসানে পড়েছে। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।

লোকসান করলেও ওই বছর শেয়ারহোল্ডারদের তারা ৫৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। মূলত রিজার্ভ থেকে এ লভ্যাংশ দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ শেষে কোম্পানিটির মোট ৪৮১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে হরলিকস, বুস্ট ও গ্লুকোজ বিক্রি হয়েছে ৪৫৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকার এবং টুথপেস্টসহ ওরাল পণ্য বিক্রি হয়েছে ২৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার। এর আগের বছর মোট ৪৬৫ কোটি ৭২ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৩৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকার হরলিকস, বুস্ট ও গ্লুকোজ বিক্রি হয়েছিল এবং ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকার ওরাল বিক্রি হয়েছিল।

ওই বছর কর পরিশোধের আগে মুনাফা হয়েছে ১১৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। তবে ওষুধ ব্যবসা বন্ধ করায় ওখানে মোট ২০৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা লোকসান সমন্বয় করতে হয়েছে। এর মধ্যে ১৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত কর্মচারীদের সহায়তা দেয়া হয়েছে। তাই কোম্পানিটির নিট লোকসান হয়েছে ৭১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এর আগের বছর ওষুধ ব্যবসায় ১৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা সমন্বয় করতে হয়েছিল। আর নিট মুনাফা হয়েছিল ৬৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

চলমান ব্যবসা থেকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১১৫ টাকা ৯২ পয়সা। এর আগের বছর ইপিএস হয়েছিল ৬৭ টাকা ৮৮ পয়সা।

আর ওষুধ ব্যবসা যোগ করে ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫২ দশমিক ৭৫ টাকা। এর আগের বছর শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছিল ৫৫ টাকা ৫৬ পয়সা।

উল্লেখ্য, ২০১৮-এর ২৬ জুলাই জিএসকের পরিচালনা পর্ষদ বাংলাদেশে ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৮-এর ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিশেষ সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডাররা এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।

বাংলাদেশে স্বাস্থ্যকর পানীয়ের বাজার ৩৮০ কোটি টাকার। এর ৯৫ দশমিক ৮ শতাংশ জিএসকের দখলে, যা ২০১৭ বছরের প্রবৃদ্ধির চেয়ে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। এদিকে টুথপেস্ট ক্যাটাগরিতে কোম্পানিটির সেনসোডাইন পেস্টের বিক্রি পাঁচ গুণ বেড়েছে। হরলিকস বিক্রি বেড়েছে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।

তবে ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করলেও কোম্পানিটি কনজিউমার পণ্যের ব্যবসা বাড়াতে জোর দিয়েছে। এ সময় তারা হরলিকস গ্রোথ প্লাস এবং বুস্টের নতুন মিক্স বাজারে আনতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এছাড়া ২০১৮ হিসাব বছরে তারা চারটি নতুন পণ্য বাজারে এনেছে। প্রতিটি পণ্যই প্রত্যাশিত ব্যবসা করেছে।

এদিকে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ১৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১১ টাকা ৬ পয়সা। এর আগের বছর একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং ইপিএস ১১ টাকা ৪৯ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০১৯ শেষে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১১৫ টাকা ১৬ পয়সা।

প্রসঙ্গত, সেটফার্স্ট লিমিটেডের কাছে থাকা জিএসকের সব শেয়ার ইউনিলিভারের কাছে বিক্রি করে দেয়ার জন্য চুক্তি করেছে। ২০১৮-এর ৩ ডিসেম্বর মূল্যসংবেদনশীল তথ্য হিসেবে কোম্পানিটি এ তথ্য প্রকাশ করে।

কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১২ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং মোট শেয়ারের ৮১ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার ১৪৪টি শেয়ার যুক্তরাজ্যের সেটফার্স্ট লিমিটেডের কাছে, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও তার মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর কাছে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বা ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৬৪৪টি শেয়ার, স্থানীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ২ দশমিক ৯২ শতাংশ বা ৩ লাখ ৫২ হাজার ৩২০টি শেয়ার, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বা ৮৪ হাজার ২৯৫টি শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বা ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৬টি শেয়ার রয়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: