facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪

Walton

রিং শাইনে ১০ টাকা বিনিয়োগে মালিকানা ১৮.৬৩ টাকার


২৮ আগস্ট ২০১৯ বুধবার, ০৩:৫৩  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


রিং শাইনে ১০ টাকা বিনিয়োগে মালিকানা ১৮.৬৩ টাকার

রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেড বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের রাস্তা খুলতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির সচিব আশরাফ আলী। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নে ইপিজেডে ব্যাপক এলাকাজুড়ে এটি ব্যবসা পরিচালনা করছে। আরো ব্যবসা বাড়াতে কোম্পানিটির বড় ধরনের সুযোগ রয়েছে। সেজন্য অর্থের প্রয়োজন। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে করলে সুদবাবদ বড় অংকের টাকা চলে যাবে। তাই পুঁজিবাজার থেকে এই অর্থ আমরা সংগ্রহ করছি। ফলে কোম্পানির ব্যাপক মুনাফা হবে। মুনাফা হলে ভবিষ্যতে ভালো মুনাফা দিতে পারবে রিং শাইন। এতে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। একই সঙ্গে একটি কমপ্লায়েন্ট কোম্পানি হিসাবে শেয়ারবাজারে আসার তাগিদও রয়েছে কোম্পানিটির।

ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরন অঞ্চলে (ডিইপিজেড) ব্যাপক কর্মযজ্ঞ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা রিং সাইন টেক্সটাইল বিদেশি পরিচালকদের দ্বারা পরিচালিত। আধুনিক সব মেশিনারিজে উৎপাদন হচ্ছে পণ্য। শতভাগ রপ্তানি করা কোম্পানিটির ব্যবসা দিন দিন বাড়ছেই।

১৯৯৭ সালে রিং সাইন টেক্সটাইল প্রাইভেট কোম্পানি গঠিত হয়। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। কোম্পানিটি ব্যবসা বাড়ানোর জন্য শেয়ারবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা তুলবে। এর মধ্যে ৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা দিয়ে নতুন মেশিনারিজ ক্রয়, ৫০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ ও আইপিওতে ব্যয় করা হবে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

ডিইপিজেডে রিং শাইনের রেজিস্টার্ড অফিস ও কারখানা। সেখানে ৩০০টি প্লটের মধ্যে ৬০টি প্লট বা ২০ শতাংশ নিয়ে ৩০ বছর মেয়াদে ইজারা নিয়ে ব্যবসা করছে রিং সাইন। ১৯৯৮ সালের ১ মার্চ যা শুরু হয়। ইজারার মেয়াদ শেষ হলে তা নবায়নেরও সুযোগ রয়েছে। ইপিজেডে মোট ২১ হাজার ৪৩৪ শতাংশ জায়গা রয়েছে। এরমধ্যে রিং সাইনের ইজারা নেওয়া আছে ৩ হাজার ৩৮ শতাংশ বা ৯২ বিঘা। যা ইপিজেডের মোট জায়গার ১৪.১৭ শতাংশ। এই ৯২ বিঘা জমিতে রিং সাইনের ১২টি নিজস্ব ভবন রয়েছে। এই ভবনগুলোর আয়তন ১১ লাখ ২৮ হাজার ২৭৪ স্কয়ার ফুট। যেখানে নতুন মেশিনারিজজ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে।

রিং সাইনে ইয়ার্ন, স্পিনিং, ফ্লিচ ফেব্রিক নিটিং ও ফ্লিচ ফেব্রিক ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করা হয়। এই কোম্পানিটিতে ২ হাজার ৪৯৮ জনের কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।

কোম্পানিটির ২০১৩ সালের ৭৮০ কোটি টাকার বিক্রয় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। এ সময় বিক্রয় বেড়েছে ২২০ কোটি টাকার বা ২৮ শতাংশ। এই বিক্রয়ের সঙ্গে কোম্পানিটির ২০১৩ সালের ৪০ কোটি টাকার মুনাফা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে মুনাফা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ।

২৮৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের রিং সাইনে ৬৬০ কোটি টাকার নিট সম্পদ রয়েছে। এই অবস্থায় কোম্পানিটি ১৮ টাকা প্রিমিয়াম পাওয়ার যোগ্য হলেও শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে শেয়ারবাজারে আসবে। যাতে কোম্পানিটির আইপিওতে বিনিয়োগকারীরা শুরুতে প্রতিটি শেয়ারে ১০ টাকা বিনিয়োগ করলেও মালিকানা পাবে ১৮.৬৩ টাকার।

রিং সাইনের পরিচালনা পর্ষদের শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের সবাই বিদেশি। চেয়ারম্যান হিসাবে সুং জি মিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুং ওয়ে মিন রয়েছেন। এছাড়া পরিচালক হিসাবে হেং সিউ লাই, হসিয়াও হায় হে, সুং ওয়েন লি এঞ্জেলা, সু চুং আও, সিয়াও ইয়েন সিন, হসিয়াও লিউ ই চি ও চুক কাউন রয়েছেন। তারা সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান ও হংকংয়ের নাগরিক। আর স্বতন্ত্র পরিচালক হিসাবে বাংলাদেশ থেকে রয়েছেন মো. নিয়ামুল হাসান কামাল, মো. হুসাইন শাহ জাবেদ ও মোহাম্মদ মনিরুল হক।

রিং সাইনের বর্তমান ২৮৫ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিতে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের মালিকানা রয়েছে ৪৮.১৪ শতাংশ। যেসব শেয়ার বিক্রয় উপযুক্ত হতে লেনদেনের প্রথম দিন থেকে ৩ বছর লাগবে।

রিং সাইনের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মাহফুজার রহমান বলেন, কোম্পানির সব পরিচালকের আন্তরিকতায় ব্যবসা এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘ পথচলায় গড়ে উঠেছে দক্ষ কর্মী বাহিনী। তাদের নিরলস পরিশ্রমে রিং শাইনের ব্যবসা এগিয়ে যাচ্ছে। বিদেশিদের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ায় কোম্পানিটি সব কমপ্লায়েন্স মেনে চলে। সবচেয়ে আধুনিক তরল বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি প্ল্যান্ট রয়েছে এ কোম্পানির।

রিং সাইনে রয়েছে দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ আধুনিক তরল বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি প্ল্যান্ট। যার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেমিক্যালযুক্ত ময়লা পানি ব্যবহারযোগ্য করা হচ্ছে। এছাড়া রয়েছে ১০ তলা বিশিষ্ট আধুনিক ওয়ার হাউজ। যেখানে মেশিনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মালামাল উঠা-নামানো করা হয়।

২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। তবে কোম্পানিতে অনেক আগে থেকেই ভবিষ্যতে শেয়ার ইস্যুর জন্য শেয়ার মানি ডিপোজিটবাবদ ২৬৭ কোটি ২ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। যা দিয়ে কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারন করা হয়। আর সেই অর্থদাতাদের অন্যান্য কোম্পানির ন্যায় রিং সাইন কর্তৃপক্ষও শেয়ারবাজারে আসার আগে শেয়ার মানি ডিপোজিটবাবদ সংগ্রহ করা অর্থের বিপরীতে শেয়ার ইস্যু করে। যাতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পরিশোধিত মূলধন বেড়ে হয় ২৮৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শেয়ার ইস্যুর জন্য ৮ কোটি ৮ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: