facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

রফতানি খাতে জুনের প্রভাব


০৫ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার, ১১:১৯  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


রফতানি খাতে জুনের প্রভাব

সদ্য সমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭শ’ কোটি মার্কিন ডলার। আর আলোচ্য সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৭ কোটি ডলারের সমপরিমাণ। অর্থাত্ আলোচ্য সময়ে রপ্তানি কম হয়েছে ৮৩ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ বা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে। ইপিবি’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত জুন মাসে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৯ শতাংশ কমেছে। শুধু তাই নয়, পূর্বের অর্থবছরের জুনের চাইতে রপ্তানি কমেছে প্রায় তিন শতাংশ। মূলত জুন মাসের রপ্তানি কমে যাওয়ায় এর পুরো প্রভাব পড়েছে রপ্তানি খাতে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জুন মাসে ঈদের ছুটি থাকায় মূলত এর প্রভাব পড়েছে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে।

প্রধান পণ্য তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি গত জুন মাসে কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশ। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানও মনে করছেন, ঈদের ছুটির কারনেই মূলত রপ্তানি কম দেখা যাচ্ছে। ইত্তেফাককে তিনি বলেন, ঈদের ছুটির পর কারখানা খোলা হলেও অনেক শ্রমিকই আসতে দেরি করেন। ফলে ঈদকেন্দ্রিক ছুটির পর পুরোদমে কারখানা চালু হতে লম্বা সময় লেগে যায়। এর প্রভাব পড়েছে জুনের রপ্তানিতে। তবে জুলাই থেকে রপ্তানি ফের স্বাভাবিক গতি পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে শুরু হওয়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরেও গার্মেন্টসের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। অবশ্য গার্মেন্টস রপ্তানিতে অপেক্ষাকৃত ভালো প্রবৃদ্ধি থাকলেও রপ্তানির অন্যতম বড় তিনটি খাত হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বাড়েনি। উল্টো আগের অর্থবছরের চেয়ে তিনটি খাতে রপ্তানি কমেছে যথাক্রমে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ, ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ ও ১২ শতাংশ। গার্মেন্টসের পরে এ তিনটি অন্যতম বড় রপ্তানি খাত। এর বাইরে গত অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ বেড়েছে।

ইপিবি’র পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি ৩ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে গামেন্টস পণ্য রপ্তানি বেড়েছে পূর্বের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় পৌনে ৯ শতাংশ। এই সময়ে ৩ হাজার ১৬ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিটওয়্যার ও ওভেন মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৬১ কোটি ডলারের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর আগের অর্থবছর অর্থাত্ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ২ হাজার ৮১৫ কোটি ডলারের। ওই বছর রপ্তানি বেড়েছিল মাত্র এক শতাংশ।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, রানা প্লাজা ও তাজরীন দুর্ঘটনার পর বিদেশী ক্রেতাগোষ্ঠী ও আইএলও’র (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) সহযোগিতায় গত পাঁচ বছর ধরে গার্মেন্টস কারখানার সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানির তালিকায় থাকা কারখানাগুলো সংস্কারকাজ প্রায় সম্পন্ন করেছে। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের আস্থা ফিরছে। এর ফল দেখা যাচ্ছে গার্মেন্টস রপ্তানি তথা সামগ্রিক রপ্তানির চিত্রে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাতীয় পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ। আগের অর্থবছর এটি ছিল ১২৩ কোটি ডলারের বেশি। দেশের অন্যতম বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল লেদার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিএফএলএলএফইএ’র সাবেক সভাপতি টিপু সুলতান ইত্তেফাককে বলেন, চামড়া শিল্প হাজারীবাগে গেলেও সিইটিপিসহ নানা সমস্যার কারনে পরিবেশবান্ধব চামড়াপণ্য এখনো তৈরি হচ্ছে না। এসব কারনে ইউরোপের দেশগুলোর অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা আছে ব্রান্ডদের প্রতি। ফলে এখান থেকে চামড়াজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে তারা আস্থা পাচ্ছে না। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী চামড়াজাত পণ্যের চাহিদাও বাড়েনি। এসব কারনে আমাদের চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে।

রপ্তানি কমার তালিকায় রয়েছে কাঠ ও কাঠজাতীয় পণ্য, উল জাতীয় পণ্য, সিল্ক, প্রিন্টেট ম্যাটারিয়েল, রাবার, পেট্রোলিয়াম উপজাত পণ্য, কার্পেট, সমুদ্রগামী জাহাজ, প্রকৌশল পণ্য। এর বাইরে পাটসহ সামান্য কিছু পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: