facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

যেসব কারণে তিন মাস ধরে পুঁজি প্রত্যাহার বিদেশিদের


০৩ জুন ২০১৯ সোমবার, ০১:৫৬  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


যেসব কারণে তিন মাস ধরে পুঁজি প্রত্যাহার বিদেশিদের

পুঁজিবাজারের মন্দায় স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশিরাও শেয়ার বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছেন। টানা তিন মাস ধরে তারা যে পরিমাণের শেয়ার ক্রয় করছেন তারচেয়ে বেশি বিক্রি করছেন, যা পুঁজিবাজার পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাচ্ছে। আগের দুই মাসের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসেও বিদেশিরা পুঁজিবাজার থেকে ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ নিয়ে টানা তিন মাসে বিদেশিরা মোট ৩৪২ কোটি ১৭ লাখ টাকার বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নতুন বছরের শুরু থেকেই দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগে নিট প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। স্থানীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ তলানিতে নেমে এলেও জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন সিকিউরিটিজে বিদেশিদের নিট বিনিয়োগ ছিল প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। তবে বিএটিবিসিসহ কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি ও ব্যাংকিং খাত থেকে মুনাফা তুলে নেওয়ায় মার্চ থেকেই বিদেশিদের নিট বিনিয়োগে উল্টো চিত্র দেখা যায়। মার্চে বিদেশিরা বিভিন্ন শেয়ার থেকে ১২৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়। আর এপ্রিল মাসে ১৫৪ কোটি টাকার বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে তারা। মে মাসেও একই চিত্র দেখা দিলেও চলতি বছর বিদেশিদের বিনিয়োগে এখনো নিট প্রবৃদ্ধি রয়েছে। ডিএসই সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের মে মাসে দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশিদের মোট লেনদেন ছিল ৭০৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ৩৬ কোটি টাকা বেশি। মে মাসে বিদেশিরা মোট ৩১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার কিনে। বিপরীতে বিক্রি করে ৩৮৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার। শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে তারা ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়। ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার শঙ্কায় পুঁজিবাজার থেকে প্রায় ৪৯৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয় বিদেশিরা।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত বিদেশিরা মোট ৩ হাজার ৯১০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। এরমধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন ২ হাজার ৩৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার। বিপরীতে বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৮৭৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার। এ হিসেবে চলতি বছরে এখনো তাদের ১৫৭ কোটি টাকার নিট বিনিয়োগ রয়েছে।

সব মিলিয়ে ২০০৪ সাল থেকে দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশিদের নিট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। বর্তমানে ডিএসইর মোট লেনদেনের মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ আসে বিদেশিদের শেয়ার কেনাবেচা থেকে। যেটা ভারতে ৩৫ শতাংশের বেশি। দেশের শেয়ারবাজারে যেসব বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে তাদের সিংহভাগই যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিনিয়োগ কোম্পানি। এছাড়া সিঙ্গাপুর, দুবাইভিত্তিক কিছু বিনিয়োগ কোম্পানিরও বিনিয়োগ রয়েছে। নর্ডিক দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের সমন্বিত বিনিয়োগ কোম্পানি ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্স দেশের শেয়ারবাজারে প্রায় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার না কমায় বাংলাদেশসহ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো থেকে গত এক বছর ধরেই বিনিয়োগ প্রত্যাহার হচ্ছে। বাংলাদেশেও গত তিন মাস ধরে এ চিত্র দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্ষমতা না থাকায় বিদেশিদের শেয়ার বিক্রি চাপ নিতে পারছে না পুঁজিবাজার। আবার সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও ২০১৮ সাল থেকে লোকসানে থাকায় তাদের বিনিয়োগ সক্ষমতাও তলানিতে ঠেকেছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: