facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

যেসব কারণে ইতালীয় কোম্পানিতে বিনিয়োগ বাড়বে শাশা ডেনিমস


১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শনিবার, ১০:৫১  এএম


যেসব কারণে ইতালীয় কোম্পানিতে বিনিয়োগ বাড়বে শাশা ডেনিমস

ইতালীয় কোম্পানি বার্তো ইজি ইন্ডাস্ট্রিয়া তেসিলে এসআরএলের সিস্টার কনসার্ন ইওএস টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডকে ১৫ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১২০ কোটি টাকায় (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসেবে) অধিগ্রহণের জন্য গত বছর সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি (এসএসপিএ) স্বাক্ষর করেছিল শাশা ডেনিমস লিমিটেড। অধিগ্রহণ শেষে ইওএস টেক্সটাইলের ৪০ শতাংশ শেয়ার তালিকাভুক্ত কোম্পানি শাশা ডেনিমসের কাছে আর বাকি ৬০ শতাংশ শেয়ার শাশা স্পিনিংসের কাছে থাকার কথা ছিল। তবে বর্তমানে শেয়ার ধারণ পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছে কোম্পানিটির পর্ষদ।

সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে ইওএস টেক্সটাইলের আরো ৪০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেবে তালিকাভুক্ত কোম্পানি শাশা ডেনিমস। এর ফলে কোম্পানিটির কাছে ইওএস টেক্সটাইলের মোট শেয়ার ৮০ শতাংশে দাঁড়াবে। আর বাকি ২০ শতাংশ শেয়ার থাকবে তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি শাশা স্পিনিংসের কাছে। ১২ মিলিয়ন ডলার বা ৯৬ কোটি টাকায় ৮০ শতাংশ শেয়ার কিনবে শাশা ডেনিমস। এরই মধ্যে এজন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) তহবিল থেকে ৩০ কোটি টাকা দিয়েছে কোম্পানিটি। আর অবশিষ্ট ৬৬ কোটি টাকা কোম্পানির নগদ প্রবাদ থেকে বিনিয়োগ করা হবে।

জানতে চাইলে শাশা ডেনিমসের কোম্পানি সচিব আসলাম আহমেদ খান বলেন, ঢাকা ইপিজেডে শাশা ডেনিমস ও ইওএস টেক্সটাইলের কারখানা প্রায় কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থিত। দুই কোম্পানির ব্যবসার ধরনও প্রায় একই ধরনের। তাছাড়া ইওএস টেক্সটাইলের কারখানায় পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে, যা ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের কাজে লাগানো যাবে। আর তাই সবকিছু মিলিয়েই আমাদের পর্ষদ ইওএস টেক্সটাইলের অধিকাংশ শেয়ার তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির হাতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টসহ অধিগ্রহণ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠিয়েছি। আশা করছি, এ বছরের জুনের মধ্যে আনুষঙ্গিক সব প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গত, সাভারের গণকবাড়ীতে ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) ১২টি প্লটের ওপর ইওএস টেক্সটাইল মিলসের কারখানা অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে ইতালির বিনিয়োগকারীদের উদ্যোগে শতভাগ রফতানিমুখী এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। এর বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক গুইসেপ্পে বার্তো। কোম্পানিটির বর্তমান মাসিক উৎপাদন সক্ষমতা ১২ লাখ গজ। তবে বিদ্যমান সক্ষমতার ৫০ শতাংশ ব্যবহার করছে তারা। অর্থাৎ বর্তমানে কোম্পানিটি প্রতি মাসে ছয় লাখ গজ কাপড় উৎপাদন করছে। কোম্পানিটির বার্ষিক রেভিনিউর পরিমাণ বর্তমানে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।

অন্যদিকে ২০১৭-১৮ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, শাশা ডেনিমসের বর্তমান বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ২ কোটি ১৬ লাখ গজ। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত রেভিনিউ হয়েছে ৭৫১ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরে ছিল ৬২৫ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরে ছিল ৫৯ কোটি টাকা।

শাশা ডেনিমস মূলত সব ধরনের ডেনিমজাতীয় কাপড় উৎপাদন করে থাকে। আর অন্যদিকে ইওএস টেক্সটাইল মিলস উৎপাদন করে টুইল কাপড়। উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও গুণগত মানসম্পন্ন টুইল কাপড় উৎপাদনের মাধ্যমে ইওএস টেক্সটাইল মিলসের বর্তমান রেভিনিউ ১৫০ কোটি টাকা থেকে ৩০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা সম্ভব বলে জানান শাশা ডেনিমসের কর্মকর্তারা। এতে ভবিষ্যতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির বিক্রি ও মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানান তারা।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ ও ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে রফতানিমুখী ডেনিম কোম্পানিটি। বার্ষিক ইপিএস ছিল ৪ টাকা ৬৪ পয়সা ও এনএভিপিএস ৪৯ টাকা ৬৯ পয়সা।

এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ, ১২ দশমিক ৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ ও ৬ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয় শাশা ডেনিমস। সে বছর প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয় ৫ টাকা ২৩ পয়সা।

২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত শাশা ডেনিমসের অনুমোদিত মূলধন ২২৫ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ১২৭ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, রিজার্ভ ৩১২ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রতিষ্ঠান ১৬ দশমিক ৬৬, বিদেশী ৩ দশমিক ৪৫ ও বাকি ৪২ দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

ডিএসইতে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার এ শেয়ারের দর ১ দশমিক ২৮ শতাংশ বা ৭০ পয়সা বেড়ে ৫৫ টাকা ৩০ পয়সায় দাঁড়ায়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা ও সর্বোচ্চ দর ৮০ টাকা ৯০ পয়সা।

বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ১২ দশমিক ৬৬, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে যা ১২ দশমিক ৮০।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: