facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

যেকোনো ছাড়ে ডিএসইর অংশীদার হতে রাজী চীনা জোট


০৬ মার্চ ২০১৮ মঙ্গলবার, ০২:৪৩  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


যেকোনো ছাড়ে ডিএসইর অংশীদার হতে রাজী চীনা জোট

প্রয়োজনে শর্তে ছাড় দিয়ে হলেও চীনা জোট দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত অংশীদার হতে চায়। বিএসইসির চিঠির পর জোটটি অংশীদার হওয়ার প্রশ্নে যেসব শর্ত দিয়েছিল তার অনেকগুলোই প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সংশ্নিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্র আরও জানায়, চীনা জোটের এমন মনোভাবের বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবহিত করেছে ডিএসই।

সূত্র আরও জানায়, ডিএসই এবং চীনের সেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম পরীক্ষা করে দেখেছে, অংশীদার হতে শেয়ার কেনাবেচার যে চুক্তি করতে হবে, তা তৃতীয় কোনো দেশের আইনে হতে বাধা নেই। তারপরও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠির পর জোটটি এ শর্ত থেকে সরে এসে বাংলাদেশের আইনেই শেয়ার কেনার চুক্তি করতে রাজি। তবে এ নিয়ে ভবিষ্যতে উভয়পক্ষের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দিলে অবশ্যই তা তৃতীয় কোনো দেশে সালিশ আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কোনো সালিশ আদালত না থাকায় এ শর্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেনে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে চীনা জোটের দরপ্রস্তাব গ্রহণ করে তাদের ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার করার অনুমোদন চেয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি বিএসইসির কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল ডিএসই। ওই প্রস্তাব পর্যালোচনায় চীনা জোটের কিছু শর্তের ব্যাখা চেয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চিঠি দিয়েছিল বিএসইসি।

গত রোববার লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার পরদিন ডিএসইর একটি প্রতিনিধি দল সরাসরি বিএসইসির কমিটির সামনে উপস্থিত হয়ে ফের ব্যাখ্যা দিয়েছে। প্রতিনিধি দলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাজেদুর রহমান ও আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজিবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসির এক কর্মকর্তা বলেন, ডিএসইর প্রস্তাবে কিছু শর্তের ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়ার পর চীনা জোট তাদের অনেক শর্ত প্রত্যাহার করেছে। এর অর্থ ডিএসই কর্তৃপক্ষ তাদের স্বার্থ রক্ষায় যথেষ্ট দরকষাকষি করেনি। সূত্র জানায়, এখন ডিএসইর ব্যাখ্যাটি পর্যালোচনা করছে কমিটি। এর পর তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। কমিশনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এদিকে সংস্থাটির শীর্ষ আরেক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, আইনগত কোনো জটিলতা না থাকলে ডিএসইর প্রস্তাবে সায় দেবে বিএসইসি।

ডিএসইর ব্যাখ্যার বিষয়ে জানতে চাইলে অপর এক সূত্র জানায়, চীনা জোট ডিএসইর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের দাম ২২ টাকা করে দিতে দরপ্রস্তাব করেছে। বিএসইসির কমিটি প্রশ্ন তুলে বলেছিল, এটি চূড়ান্ত দর নয়, বরং শর্তসাপেক্ষ।

এর ব্যাখ্যায় ডিএসই জানিয়েছে, চীনা জোট ডিএসইর বর্তমান সম্পদ ও শেয়ার সংখ্যার হিসাবে দরপ্রস্তাব করেছে। শেয়ার কেনাবেচা সম্পন্ন হওয়ার আগে সম্পদ হস্তান্তর বা বিক্রি বা লভ্যাংশ হিসেবে নতুন শেয়ার ইস্যু করার মাধ্যমে সম্পদ মূল্য কমানো ঠেকাতেই শর্তটি দিয়েছে চীনা জোট।

অংশীদার হলে চীনা জোট ১০ বছরের জন্য ডিএসইকে বিনামূল্যে ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের কারিগরি ও পরামর্শক সেবা প্রদানের অঙ্গীকার করেছে। এ ক্ষেত্রে এই সহায়তার আর্থিক মূল্যের যৌক্তিকতা জানতে চেয়েছিল বিএসইসি। ডিএসইর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিনামূল্যে কারিগরি ও পরামর্শক সেবা সহায়তা প্রদানের বিষয়টি কোনোভাবেই শেয়ারের দরের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। কেউ কোনো পণ্য বা সেবা ফ্রি বা উপহার হিসেবে দিতে চাইলে, তার মূল্যের যৌক্তিকতা জানতে চাওয়া যৌক্তিক নয়। তবে প্রতিটি সহায়তার আর্থিক মূল্য রয়েছে।

এ ছাড়া সেটেলমেন্ট গ্যারান্টি ফান্ডে ডিএসইর অর্থ প্রদান বন্ধ করার শর্ত দিয়েছিল জোটটি। আবার মেধাসম্পদ, যেমন সফটওয়্যার, পেটেন্ট ইত্যাদি কেনার ক্ষেত্রে পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনুমোদন নেওয়ার শর্ত দিয়েছিল চীনা জোট। এসব শর্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে তারা। তবে ১০ কোটি টাকা বা তার বেশি মূল্যের যে কোনো ধরনের চুক্তি করার আগে অনুমোদন নেওয়ার শর্ত শিথিল করে তা ১০০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: