০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ রবিবার, ০৭:৪১ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের দুই শেয়ারবাজারে বেশ কয়েক সপ্তাহ পর গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনসহ ভালো মৌলভিত্তির বেশ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। একই সঙ্গে রুগ্ণ ও বন্ধ, বিশেষত অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচের বেশ কিছু শেয়ারের দরে বেশ উল্লম্ম্ফন দেখা গেছে। সার্বিক বিচারে গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৪৭ কোম্পানির শেয়ারদর কমপক্ষে ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বিপরীতে মাত্র তিন কোম্পানির শেয়ার ১০ শতাংশের ওপর দর হারিয়েছে।
খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শুধু তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের প্রায় সব শেয়ারদর হারিয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংক, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা, প্রকৌশল, সিমেন্ট, পাট, কাগজ ও ছাপাখানা খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ডিএসইতে গত সপ্তাহে তালিকাভুক্ত ৩৪৯ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৪৬টির কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ২২৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ১০০টির এবং অপরিবর্তিত বাকি ২২টির দর। চট্টগ্রামকেন্দ্রিক দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতে গত সপ্তাহে ২৮৯ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ১৮২টির দর বেড়েছে, বিপরীতে দর হারিয়েছে ৮৯টি এবং অপরিবর্তিত ১৮টির দর।
অধিকাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধির কারণে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ বেড়ে ৫৩৩২ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। তবে বেঞ্চমার্ক ও শরিয়াহ সূচকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ছিল না। অন্যদিকে সিএসইর প্রধান সূচক ৬৮ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে ৯৮৭৮ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে।
ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে প্রায় ৪৯ শতাংশ দর বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল পাট খাতের কোম্পানি সোনালি আঁশ। শেয়ারটির দর ৭৩১ টাকা ছাড়িয়েছে। এরপরের অবস্থানে থাকা অলটেক্সের শেয়ারদর ৪২ শতাংশ বেড়েছে, সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ১১ টাকা ১০ পয়সায়। তৃতীয় অবস্থানে থাকা তুংহাই নিটিংয়ের শেয়ারদর ৪০ শতাংশ বেড়ে ৫ টাকা ৩০ পয়সায় উঠেছে। চতুর্থ অবস্থানে ওঠা আরএন স্পিনিংয়ের দর ২৯ শতাংশ বেড়ে ৯ টাকা ৭০ পয়সায় এবং খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের দর ২৯ শতাংশ বেড়ে ২১ টাকা ৬০ পয়সায় উঠেছে।
এ ছাড়া ২০ থেকে ২৬ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে সিএনএটেক্স, গল্গ্যাক্সোস্মিথক্লাইন, নর্দার্ন জুট, তাল্লু স্পিনিং ও ফার কেমিক্যালের। ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে জাহিনটেক্স, জিবিবি পাওয়ার, এমারেল্ড অয়েল, বঙ্গজ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এমবি ফার্মা, ঢাকা ডাইং, প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, পিপলস লিজিং ও ফ্যামিলিটেক্সের।
গত সপ্তাহে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে ফারইস্ট ফাইন্যান্স, বিডি অটোকার, আনলিমা ইয়ার্ন, অ্যাপোলো ইস্পাত, আলিফ ম্যানুফ্যাক্টারিং, জাহিন স্পিনিং, বিবিএস কেবলস, কেয়া কসমেটিক্স, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন সন, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, ডেল্টা স্পিনার্স, জুট স্পিনার্স, বেক্সিমকো সিনথেটিক্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপার, স্যোসাল ইসলামী ব্যাংক, ইস্টার্ন কেবলস, ইয়াকিন পলিমার, শ্যামপুর সুগার, ওয়াটা কেমিক্যাল ও জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস।
বিপরীতে সর্বাধিক ১৭ শতাংশ দর হারিয়ে দরপতনের শীর্ষে ছিল এমএল ডাইং। কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ ৪৬ টাকা ৬০ পয়সায় নেমেছে। সাড়ে ১৫ শতাংশ দর হারিয়েছে মুন্নু স্টাফেলার্স, সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ১ হাজার ৭২৫ টাকা ৯০ পয়সায়। দরপতনের তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ারদর সাড়ে ১০ শতাংশ কমে ১৫ টাকা ৩০ পয়সায় নেমেছে। দরপতনে এর পরের অবস্থানে থাকা প্রাইম টেক্সটাইল, ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং, কুইন সাউথ টেক্সটাইল এবং আইটি কনসালট্যান্টসের শেয়ারদর ৮ থেকে ৯ শতাংশ কমেছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে তিন হাজার তিন কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। দৈনিক গড়ে কেনাবেচা হয়েছে ৬০০ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় দেড়শ কোটি টাকা বা পৌনে ৫ শতাংশ কম। লেনদেনের শীর্ষে থাকা সায়হাম কটনের ৭৯ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। যদিও সপ্তাহজুড়ে এ শেয়ারটির দর বেড়েছে আড়াই শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এমএল ডাইংয়ের প্রায় ৭৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। তবে শেয়ারটি বাজারদর হারিয়েছে ১৭ শতাংশ। লেনদেনের তৃতীয় অবস্থানে থাকা ড্রাগন সোয়েটারের বাজারদর অপরিবর্তিত, কিন্তু লেনদেন হয়েছে প্রায় ৭৩ কোটি টাকার শেয়ার।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।