facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি:পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা


২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শুক্রবার, ১০:৪০  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি:পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা

সরকার ব্যাংকের সুদহার আমানত ও ঋণের ক্ষেত্রে ছয় ও ৯ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। এক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল সঞ্চয়পত্রের সুদহারের ওপর। কারণ ব্যাংকের আমানত চলে যাবে সঞ্চয়পত্রের দিকে। ফলে ব্যাংকের মধ্যে একটি ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হবে। ব্যাংকগুলো আগে আমানতের সুদহার ১০ থেকে ১২ শতাংশ দিয়েছে। সেক্ষেত্রে চাইলেও তারা এখন কম সুদে ঋণ দিতে পারবে না। এতে করে ব্যাংকের মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বৃহস্পতিবার এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ওমেরা ফুয়েলস লিমিটেডের সিইও মো. আকতার হোসেন সান্নামাত এবং লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এসএম নাসির উদ্দীন।

মো. আকতার হোসেন সান্নামাত বলেন, সম্প্রতি ব্যাংক খাতের কিছুটা তারল্য সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে এ খাতের ডিপোজিট রেট বাড়িয়ে দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিট থেকে আবার ডাবল ডিজিটে চলে গিয়েছে। তাই এটিকে আবার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার জন্য সরকার ছয় শতাংশ ডিপোজিট রেট ও ৯ শতাংশ লেন্ডিং রেট করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এখনও অনেক ব্যাংকই তা করেনি। আর এ নিয়মটি দেশের শিল্প-কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে করা হয়েছে। তাই এটি কার্যকর করতে পারলে দেশের জন্য অবশ্যই ভালো হবে। যদিও এটি সময়ের ব্যাপার। তাছাড়া অনেক ব্যাংকই ইতোমধ্যে ১২ শতাংশ রেটে দীর্ঘমেয়াদি ডিপোজিট করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে-তাদের ক্ষেত্রে কি হবে? অন্যদিকে সঞ্চয়পত্রের সুদহার এখনও কমানো হয়নি। ফলে এখন যদি ব্যাংকের সুদহার ছয় শতাংশে নিয়ে আসে তাহলে সবাই সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকবে। তখন ব্যাংক খাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তারল্যে সংকটের সৃষ্টি হবে। আর তারল্য সংকট মানেই লেন্ডিং রেটের ওপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাপ পড়া। কাজেই এটি একটি সময়ের ব্যাপার। যদিও এটি দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য করা হয়েছে। কিন্তু এখনও যারা এ নিয়মটি অনুসরণ করছে না-তাদের জন্য এটি রাতারাতি করা সম্ভব নয়।

এসএম নাসির উদ্দীন বলেন, সরকার ব্যাংকের সুদহার ডিপোজিট ও লেন্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ছয় ও ৯ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। আমি মনে করি সেক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল সঞ্চয়পত্রের সুদহারের ওপর। কারণ ব্যাংকের ডিপোজিট চলে যাবে সঞ্চয়পত্রের দিকে। ফলে ব্যাংকের মধ্যে একটি ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হবে। ব্যাংকগুলো আগে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ডিপোজিট রেট দিয়েছে। সেক্ষেত্রে চাইলেও তারা এখন কম রেটে লেন্ডিং করতে পারবে না। এক্ষেত্রে ব্যাংকের প্রফিটে একটি প্রভাব পড়বে। তাছাড়া গত ১০ থেকে ১২ বছরে পরিচালন ব্যয় বেড়েছে। ব্যাংকের মূল ব্যবসা হচ্ছে ডিপোজিট ও লেন্ডিং। লেন্ডিং রেট যদি কমে আসে সেক্ষেত্রে ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যা হবে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বে যদি পরিচালন ব্যয় কমাতে না পারে। এটি এখন সময়ের ব্যাপার। ব্যাংকগুলোকে সময় দিতে হবে। এটি সমাধানের জন্য দুই থেকে তিন বছর লাগবে।

সম্প্রতি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ ১০ থেকে ২০ বছর বাড়ানো হয়েছে। এক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে দুটি প্রভাব পড়বে। প্রথমত: শেয়ার বিক্রির ফলে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ফান্ড পরিচালনার জন্য তেমন তারল্য নেই। তাই অর্থ সরবরাহে বড় ধরনের ধস নামতে পারে। অন্যদিকে যারা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছে তাদের আস্থা কিছুটা কমে যাবে। সর্বোপরি মিউচুয়াল ফান্ড খাতকে যদি ভালো করে ঢেলে সাজানো না হয় তাহলে দেশের পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে যেতে পারবে না। অন্য দেশের দিকে থাকালে দেখবেন সে দেশের মিউচুয়াল ফান্ড অনেক উন্নত এবং তাদের পুঁজিবাজারও অনেক শক্তিশালী। কারণ মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে তাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। পুঁজিবাজার থেকে অর্থ নিয়ে তারা বড় বড় শিল্প-কারখানা গড়ছে। ফলে বিনিয়োগের বড় একটি জায়গা বিনিয়োগকারীরা পেয়েছে এবং সেসব দেশ পুঁজিবাজার থেকে বড় পুঁজি সংগ্রহ করতে পারছে। আমাদের দেশে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য ঢেলে সাজানো না হয় তাহলে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হবে না।

সাম্প্রতিক সময়ে চীনের দুই স্টক একচেঞ্জ দেশের স্টক একচেঞ্জে অংশীদার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটি আমাদের পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক দিক। এতে ভালো ভালো কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত হবে এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হবেন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: