২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শুক্রবার, ১০:২৫ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মা উজলা বেগম। প্রায় ৪০ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর তার চোখেমুখে অন্ধকার নেমে আসেন। পাঁচ সন্তানের মুখে তিন বেলা খাবার যোগাতে তিনি দিনরাতের তফাৎ বুঝতেন না। নিজেকে তিলে তিলে নিঃশ্বেষ করে বড় করেছেন সন্তানদের। কখনও সন্তানদের বুঝতে দেননি নিজে না খেয়ে সেই খাবার তুলে দিয়েছেন তাদের মুখে। নিজের শরীরকে যাদের জন্য ধ্বংস করলেন উজলা বেগম। সেই আদরের সন্তানরাই তার প্রতি এমন অবিচার করলেন যা খুবই জঘন্য। তিনি এখন বেঁচে থেকেও এক ধরনের লাশ হয়ে গেছেন।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের কুচিয়াবাড়ি গ্রামের উজলা বেগমকে রাতের আঁধারে বাঁশ বাগানের মধ্যে ফেলে গেছেন তার সন্তানরা।
বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে ছেলে ডাকু শেখের বাড়িতে রেখেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, ৪০ বছর আগে বৃদ্ধার স্বামী ছামাদ শেখ মারা যান। পরে অনেক কষ্টে ৩ ছেলে ও দুই মেয়েকে বড় করেন তিনি। ছেলে-মেয়েরা বিয়ে করে সবাই আলাদা বসবাস করছেন। বুধবার গভীর রাতে বৃদ্ধাকে বাঁশ বাগানে ফেলে দেয় ছেলেরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বড় ছেলে ডাকু শেখের বাড়িতে রেখে যান। ছেলের কাঁচা ঘরের বারান্দায় পড়ে আছেন ওই বৃদ্ধা। যেন জীবন্ত লাশ।
বার্ধক্যজনিত নানা রোগে অক্রান্ত হয়ে উজলা দীর্ঘদিন বিছানায় পড়ে রয়েছেন। তাই সন্তানদের কাছে তিনি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। আর তিন ছেলের কেউই মায়ের খাবার ও সেবা দিতে নারাজ।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী বনি আমিন বিষয়টি শুনেছেন জানিয়ে বলেন, তিনি জরুরি কাজে বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন। এলাকায় ফিরে তিনি বিষয়টি দেখবেন।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।