facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

মশার খাদ্য রাজধানীবাসী, কে নেবে দায়?


২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বুধবার, ০৩:০৪  এএম

স্টাফ করেসপনডেন্ট

শেয়ার বিজনেস24.কম


মশার খাদ্য রাজধানীবাসী, কে নেবে দায়?

চলছে মশার প্রজনন মৌসুম। এসময় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়ার কথা। কথা অনুযায়ী প্রস্তুতির ঢাকঢোল বেশ জোরেশোরেই বেজেছিল। বলা হয়েছিল_ এবার ‘মশার বংশ নির্বংশ করা হবে’। সেই বাজনা তাল হারিয়ে এখন বেতাল। কারণ মশার মাত্রারিক্ত কামড় হারে হারে টের পাচ্ছেন নগরবাসী। এ কামড় আরো যন্ত্রণার হয় তখন_ যখন মশার কামড়ে অতিষ্ট নগরবাসীর ভোগান্তির দায় নিতে নারাজ সংশ্লিষ্ট সবাই।

রাজধানীতে মাত্রারিক্ত মশার উপদ্রব বৃদ্ধির জন্য কাউন্সিরা বলছেন, তারা শুধু স্বাক্ষর করেন। এর বাইরে আর কোন কাজ করেন না। কারণ তারা বুঝেন না।

রাজধানীতে মশার উপদ্রব চলছে প্রায় এক মাসের অধিক সময় ধরে। ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলের কিছু সময় মশার স্বাভাবিক প্রজননের সময়। এ সময় কিউলেক্স মশার বংশ বিস্তার হয়।

রাজধানীর বাড্ডার বাসিন্দা মাহফুজা খানম জানান, সারা বছর মশারি ছাড়া ঘুমিয়েছি। কিন্তু জানুয়ারির শেষ দিক থেকে অতিরিক্ত মশার জন্য মশারি টানাতে হচ্ছে।

এমন অভিযোগ খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা সুজন মাহমুদের। তিনি বলেন, মশার উৎপাতে চায়ের দোকানে দাঁড়াতে পারি না। বসায়ও একই সমস্যা। হাত নাড়লেই মশা মরছে।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান ভাণ্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয় নতুন সময়ের। তারা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ মশা নিধনের ওষুধ মজুদ রয়েছে। প্রতিদিন তা সরবরাহ করা হচ্ছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ড়িএসসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালাহউদ্দিন আহমেদ নতুন সময়কে বলেন, চলতি বছর মশা নিধনের জন্য বিগত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কাউন্সিলরা সুপারভাইজারের দায়িত্বে আছেন। তাদের কাছে ওষুধ পাঠানো হয়। তারা মনিটরিং করেন।

তিনি জানান, প্রতিদিন ১৮০০ লিটার মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এছাড়া এ বছর থেকে নতুন টেলিফোস (মাত্রা-৫০) নামক লার্বি সাইডিং ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এমনটি বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে।

গত বছর রাজধানীবাসীদের ভুগিয়েছে মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়া। এ বছর এমন কোন আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, আশঙ্কা মাথায় নিয়েই কাজ করছি। আশা করি নগরবাসীদের এ ধরনের আপদের সম্মুখীন হতে হবে না।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির হোসেন বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মশা নিধনের জন্য ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি, যা চলমান রয়েছে।

তিনি জানান, কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া বিভিন্ন সোসাইটির লোকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তারা মশা নিধনে আমাদের সহায়তা করবেন। আশা করি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।


ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এ এস এম মামুন জানান, ডিএনসিসি এলাকায় মশার উৎপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নগরবাসীদের সহায়তায় হটলাইন চালু করা হয়েছে। ওই হটলাইন নম্বরে যে কোনো মোবাইল ফোন থেকে কল করা হলেই কর্তৃপক্ষ মশা নিধনের ওষুধ ছিটিয়ে আসবেন।

মশার ওষুধ ছিটানোর বিষয় কাউন্সিলদের হাতে নেই বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর মশা নিধনের দায়িত্বে থাকা মহিলা কাউন্সিলর (৪৫, ৪৬ ও ৪৭) হেলেনা আক্তার।

তিনি বলেন, আমি শুধু স্বাক্ষর দিই। এরপর তারা কী করে জানা নেই। কোন সময় ফোন দিলে আসে, এরপর ওষুধ ছিটিয়ে চলে যায়। এছাড়া আমাদের কিছু করার থাকে না।

এদিকে প্রধান ভাণ্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, এডালটি সাইডিং মশা নিধনের ওষুধ ৭০ হাজার মজুদ রয়েছে। এছাড়া লার্বি সাইড মশার ওষুধ পর্যাপ্ত রয়েছে।

ডিএনসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান ভাণ্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা রবিন্দ্রশ্রী বড়ুয়া জানান, এক লাখ লিটার মজুদ আছে এডিলটি সাইড ওষুধ। আর ৪ হাজার লিটার মজুদ আছে লার্বি সাইড ওষুধ।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: