facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

‘ভয়ে’ পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব


১৫ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার, ১০:১৩  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


‘ভয়ে’ পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব

পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে রবি থেকে বৃহস্পতিবার এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ নামে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরা হলো:

আমাদের দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কখনও পুঁজিবাজারবান্ধব হতে দেখা যায়নি। যখনই তারা একটি সিদ্ধান্ত নেয় তখনই বাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পুঁজিবাজারের জন্য ভালো ফল আনতে পারে-এরকম সিদ্ধান্ত খুব কমই নিয়েছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি উঠে আসে। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহজাহান মিনা এবং আইনজীবী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব।

অধ্যাপক শাহজাহান মিনা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পুঁজিবাজারের পতন হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোর প্রতি নতুন নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদানের হার কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ব্যাংকগুলোর যে পরিমাণ ডিপোজিট থাকে এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ আগে ঋণ হিসেবে দিতে পারত কিন্তু নতুন নিয়মে এখন ৮০ শতাংশ দিতে পারবে। বাজার পতনের এটি একটি বড় কারণ। এ পাঁচ শতাংশের ব্যবধান সমগ্র ব্যাংক খাতকে প্রভাবিত করবে। ব্যাংক খাতে নন-পারফরমিং লোন বেড়েছে। অর্থাৎ যে পরিমাণ টাকা ঋণ দেয়, সে পরিমাণ আদায় করতে পারছে না। এতে করে ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এতে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।

আরেকটি কারণ হচ্ছে, যখন শেয়ারের দাম কমতে থাকে তখন বিনিয়োগকারীরা মনে করেন এটির দাম আরও কমবে। ভয়ে তারা শেয়ার বিক্রি করে দেন। এতে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কখনও পুঁজিবাজারবান্ধব হতে দেখা যায়নি। অর্থাৎ পুঁজিবাজারের জন্য ভালো ফল আনতে পারে-এরকম সিদ্ধান্ত খুব কমই নিয়েছে। পুঁজিবাজারে ৫৭টির মতো মার্চেন্ট ব্যাংক আছে। বাজারে এদের ভূমিকা অত্যন্ত নগণ্য। এদের সাধারণত তিনটা কাজ। প্রথমত, ইস্যু ম্যানেজমেন্ট। ইস্যু ম্যানেজারের কাজ মার্কেটে নতুন নতুন আইপিও আনা কিন্তু সেটা তারা যথাযথভাবে পালন করছে না। আইনানুসারে, একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের বছরে এক থেকে দুটি আইপিও আনার কথা। কয়টি মার্চেন্ট ব্যাংক এ কাজটি করতে পারছে? আরেকটি হচ্ছে, তাদের পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ করা কিন্তু তাদের মূলধন অনেক কম। মাত্র ২৫ কোটি টাকা। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো যদি তাদের ক্যাপিটাল না বাড়ায় তাহলে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় সহজে ফিরে আসতে পারবে না।

২০১৭ সালে বাজার যখন একটু ভালোর দিকে যাচ্ছিল, তখন কয়েকটি ব্যাংককে শাস্তি দেওয়া হলো। এর কারণে গত কয়েক মাস ধরে বাজারে ধীরগতি ছিল। আবার এখন যা ঘটছে তাতে করে আবার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। শুধু গভর্নর পরিবর্তন হলেই হবে না, এর সঙ্গে আরও অনেক লোক কাজ করে।

হাসান মাহমুদ বিল্পব বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ২০২৩ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এখানে প্রায় ১০০ বিলিয়নের মতো ইকুইটি প্রয়োজন। এতে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বড় হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের চেয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যানের মর্যাদা একটু কম। এটা সমান করতে হবে। আমাদের মতো ছোট একটি দেশে এতগুলো ব্যাংকের কোনো প্রয়োজন ছিল না। এর মধ্যে কিছু ব্যাংকের মূলধন অনেক বেশি। আবার বেশিরভাগ ব্যাংকের মূলধন অনেক কম। এতে করে দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়ে। পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি কয়টি আছে? পুঁজিবাজারের রেশিও কত? আমদের জিডিপি কত? এখনও অনেক সমস্যার সমাধান করতে হবে। তাহলে ভালো মানের বিদেশি কোম্পানি আসবে আমাদের পুঁজিবাজারে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: