১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার, ০৯:০৯ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার ধারণের প্রকাশিত তথ্যে বড় ধরনের ভুল ছিল- এমন খবর জানাজানির পর তালিকাভুক্ত গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের আরও দরপতন হয়েছে। গতকাল সোমবার শেয়ারটি সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দর ২১ টাকা ২০ পয়সায় কেনাবেচা হয়। রোববার ২৬ টাকা ২০ পয়সায় ওঠার পর থেকে যে দরপতন শুরু হয়েছে, তা গতকাল লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। গত দুই দিনে শেয়ারটি দর হারিয়েছে ১৯ শতাংশ। গতকাল শেয়ারটির প্রচুর বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতা ছিল হাতেগোনা। এর আগে এটি টানা বেড়েছিল।
ভুল তথ্যে বিনিয়োগ করে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন, তাদের ক্ষতির দায় কে নেবে- গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ধারণের তথ্য নিয়ে গরমিলের পর এমন প্রশ্ন আবার উঠেছে। বাজারে গত দু`দিন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এমন আলোচনার পর এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কর্মকর্তারা জানান, বৈধ কোনো উৎস থেকে প্রাপ্ত ভুল তথ্যে বিনিয়োগ করে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন তিনি।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অধ্যাদেশ ১৯৬৯-এর ২৩ ধারা উল্লেখ করে বিএসইসির কর্মকর্তারা জানান, আইনি বিধান অনুযায়ী, শেয়ারবাজার সংশ্নিষ্ট পক্ষগুলোকে যে তথ্য বা প্রতিবেদন দিতে হয়, তা কোনোভাবে ভুল হওয়া যাবে না। কারও তথ্যে ভুল থাকলে এবং ওই ভুল তথ্যকে সঠিক মনে করে বিনিয়োগ করায় কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবেন। যিনি বা যারা ভুল তথ্য দিয়েছেন, তারা এই ক্ষতিপূরণ দেবেন।
এদিকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান জানান, কার কারণে এবং কীভাবে শেয়ার ধারণের ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে সংশ্নিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে কারও দায় থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারে ভুল তথ্য দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অন্যান্য দেশে ভুল তথ্যে কোনো বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বা আদায় করে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এ বিষয়ে তৎপর হতে হবে। তাতে আর্থিক প্রতিবেদনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানে কোম্পানিসহ সংশ্নিষ্ট সকলে আরও সতর্ক ও যত্নবান হবে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে এসে বড় দরপতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। ডিএসইতে ২০ শতাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৭০ শতাংশ দর হারিয়েছে। সিএসইতে ২৬ শতাংশের দর বেড়েছে ও দর হারিয়েছে ৬৬ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারগুলোর দর ছিল অপরিবর্তিত।
খাতওয়ারী লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল প্রায় সব খাতের শেয়ারদর কমেছে। এর মধ্যে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা খাতের ১০০ কোম্পানির মধ্যে ৮৫টিই দর হারিয়েছে, বেড়েছিল মাত্র সাতটির দর, যা বাজারের মূল্য সূচকে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে খাতওয়ারী হিসাবে সর্বাধিক তিন শতাংশ দরপতন হয়েছে বীমা খাতের। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৭২৪ পয়েন্টে নেমেছে। এর মধ্যে তিন আর্থিক খাতের দরপতনে সূচক হারিয়েছে প্রায় ৩০ পয়েন্ট।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।