০৪ আগস্ট ২০১৯ রবিবার, ০৪:০৩ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
নানা কারসাজিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন সোমবার ৫ আগস্ট থেকে দেশের শেয়ারবাজারে শুরু হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আর্থিক হিসাবে ‘মনগড়া’ তথ্য দিয়ে আইপিও অনুমোদন নেওয়ার পর পুঁজিবাজারে কোম্পানিটি সম্পর্কে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর মধ্যেই নানামুখী চাপে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয় ডিএসই।
পুঁজিবাজারের ইতিহাসে যেসব কোম্পানি ভুয়া তথ্য দিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছে তার সবগুলোই এখন হয় লাপাত্তা নয় সেসব কোম্পানির অবস্থা এতই খারাপ যে যারা ওইসব কোম্পানিতে না বুঝে বিনিয়োগ করেছিলেন তারা নিঃশ্ব হয়ে খালি হাতে ফিরে গেছেন। এ কোম্পানির ব্যাপারে বাজার বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকতে বলেছেন। একই সঙ্গে কারসাজিরও সন্দেহ করছেন। কারণ যেহেতু কোম্পানিটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ ওঠেছে সেহেতু কারসাজি চক্র ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে শেয়ার ছেড়ে দিয়ে কেটে পড়তে পারে।
গত ৯ জুন কোম্পানিটির বরাদ্দ পাওয়া শেয়ার শেয়ারহোল্ডারদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবে জমা প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে ৩১ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদন গ্রহণ করা হয়। গত ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬৭০তম সভায় কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়।
কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজার থেকে ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করে। এ জন্য প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নেয়া হয়েছে ১০ টাকা।
কোম্পানিটি প্লান্ট ও যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্থাপন, ভবন ও সিভিল ওয়ার্ক খাত, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয়ের জন্য শেয়ারবাজার থেকে এ পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করে।
৩০ জুন ২০১৮ সমাপ্ত বছরের সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী পুন:মূল্যায়ন ছাড়া নীট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস রিভ্যালুয়েশন ছাড়া) দাঁড়িয়েছে ১২.০৬ টাকা (কোম্পানিটি কোনো সম্পদ পুন:মূল্যায়ন করেনি) এবং শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.৬০ টাকা ও ডায়লুটেড শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.০৩ টাকা। ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.৮৭ টাকা।
আইপিওতে কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেড।
আইন লঙ্ঘন করে এখন কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্তি অনুমোদন দিলেও আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়মের অভিযোগে এর আগে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্ত না করায় গো ধরেছিল ডিএসই।
এমনকি ডিএসইর পক্ষ থেকে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) কাছে অভিযোগও করা হয়। অভিযোগ পেয়ে তা তদন্তের জন্য এফআরসি থেকে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশকে (আইসিএবি) দায়িত্ব দেয়া হয়। আইসিএবি’র তদন্তে অসহযোগিতা করায় কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আক্তারকে লাইসেন্স হারাতে হয়েছে।
ডিএসইর পর্ষদের বেঁকে বসার কারণে যে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ কাণ্ডে এতো কিছু হলো, এখন সেই ডিএসইর পর্ষদই আইন লঙ্ঘন করে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয়।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।