facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল বুধবার, ২০২৪

Walton

বড় ব্রোকারেজ থেকে বিদেশিদের শেয়ার বিক্রি বেড়েছে


২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার, ০১:৫১  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


বড় ব্রোকারেজ থেকে বিদেশিদের শেয়ার বিক্রি বেড়েছে

দেশের শেয়ারবাজারে শুরু হওয়া দরপতন থামছে না। ভালো খবরেও সাড়া দিচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। সাম্প্রতিক সময়ে দরপতনের কারণ ছিল ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডিআর কমানো ও স্টক এক্সচেঞ্জের কৌশলগত অংশীদার নির্বাচনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপের বিষয়গুলো। এছাড়া সরকারি ব্যাংকের অতিরিক্ত আমানত ফেরত দিতে গিয়ে আইসিবির শেয়ার বিক্রির চাপেও দরপতন মাত্রা ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে সবর ইস্যুর সমাধান হয়েছে। তারপরও শেয়ারদর ও সূচকের পতন থামছে না।

কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে, শুধু শেয়ারদর বা সূচকই নয়, টানা পতনে লেনদেনও তলানিতে নেমেছে। চলতি সপ্তাহের শেষ কার্য দিবসে গতকাল ডিএসইতে মাত্র ২৮৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা গত সাড়ে ১৯ মাসের সর্বনিম্ন। ডিএসইতে এর আগে ২০৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছিল ২০১৬ সালের ১০ জুলাই। অথচ ১৩ মাস আগে এ বাজারেই একদিনে প্রায় ২২শ` কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। আর সর্বশেষ ছয় মাসে গড়ে দৈনিক পৌনে সাতশ` কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।

দরপতন দীর্ঘায়িত হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লেনদেনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এখনকার ঘটনা তার ব্যতিক্রম নয় বলে জানান মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

শীর্ষ এক ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের বেশিরভাগ বড় বিনিয়োগকারীর পরামর্শে শেয়ার কেনাবেচা করেন। বড় বিনিয়োগকারীদের অনেকেই নিষ্ফ্ক্রিয়। এর কারণ আর্থিক খাতের বড় ধরনের টানাপড়েন। বড়দের থেকে দিকনির্দেশনা না থাকায় ছোট বিনিয়োগকারী অনেকে হাত গুটিয়ে আছেন। আবার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে চলতি দরপতনে বড় লোকসানে পড়েছেন। এরা নতুন করে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারছেন না। এ কারণে লেনদেন কমছে।

বড় বিনিয়োগকারীদের নিষ্ফ্ক্রিয়তার ক্ষেত্রে ব্যাংক খাতে সংকট নিয়ে বিভিন্ন খবরকে প্রধান কারণ বলছেন বাজার-সংশ্নিষ্টরা। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখনও বড় বিনিয়োগে আসেনি। এমনটি জানিয়েছেন অপর এক মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা। তিনি জানান, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের পর অনেকে ব্যাংকের পরিচালক পদে নিজ পরিবার সদস্যদের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনায় আছেন। তারা কম দামে শেয়ার কিনতে চান। সাম্প্রতিক দরপতনের সঙ্গে এ বিষয়টির সংযোগ থাকা অস্বাভাবিক নয় বলে মন্তব্য তার।

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজনেস অনুষদের ডিন মোহাম্মদ মূসা বলেন, ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগাম ঘোষণা এবং ব্যাংক খাতে এর নেতিবাচক প্রভাবই সাম্প্রতিক দরপতনের বড় কারণ। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে নীতি শিথিল করে এডিআর সমন্বয়ে ব্যাংকগুলোকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়ার পরও দরপতনের কারণ বোধগম্য নয় বলে জানান তিনি। রাজনীতিসহ অন্য ইস্যুগুলোরও প্রভাব থাকতে পারে।

এদিকে শেয়ারবাজারের এক সূত্র জানায়, বিশেষ একটি গোষ্ঠী ক্রমাগত শেয়ার বিক্রি করে দরপতনকে উস্কে দিচ্ছে। তারা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে শেয়ার বিক্রি করছে। এ ছাড়া একটি বড় ব্রোকারেজ হাউস থেকে বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে। এতে বহুজাতিকসহ দেশীয় বৃহৎ মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কমছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া দরপতনের ধারা টানা পঞ্চম কার্য দিবসে গড়িয়েছে। প্রতিদিনই কমছে শেয়ারদর, তার সঙ্গে কমছে বাজার সূচক। নতুন করে যুক্ত হয়েছে লেনদেনে পতন। গতকাল পর্যন্ত ডিএসইর ৮০ শতাংশেরও বেশি শেয়ার দর হারানোয় এ বাজারের প্রধান সূচক ১৯৫ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৯০৬ পয়েন্টে নেমেছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: