facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

বড় দরপতনের অন্যতম কারণ


২২ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার, ০২:২৮  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


বড় দরপতনের অন্যতম কারণ

শেয়ারবাজারে বড় দরপতন এখন নিত্যনৈমত্যিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইর ৭৬ শতাংশ এবং সিএসইর ৬৬ শতাংশ শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫০ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ। সিএসইর প্রধান সূচক সিএসসিএক্সের ৭৮ পয়েন্ট বা পৌনে ১ শতাংশ পতন হয়েছে। এর আগে গত সোমবার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। ওই দিন ৬৭ শতাংশ শেয়ারের দরপতন হলে ডিএসইএক্স সূচক ৬২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৪ শতাংশ কমে যায়।

গতকাল শেয়ারদর ও সূচক পতনের পাশাপাশি লেনদেনও বেশ খানিকটা কমেছে। ডিএসইতে ৪৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা প্রায় ২ মাসের সর্বনিম্ন। আবার ৬৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে ব্লক মার্কেটে। পাবলিক মার্কেটে কেনাবেচা হয়েছে মাত্র ৩৭৩ কোটি টাকার শেয়ার। গতকালের আগে সর্বনিম্ন লেনদেন ছিল গত ২৬ আগস্ট। ওই দিন এ বাজারে ৪২০ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকালের দরপতনে সব খাতেরই অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩০৫ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৩৩টি লেনদেনের পুরো সময়ে আগের দিনের তুলনায় দর বেড়ে কেনাবেচা হয়েছে। আর ৪৩ কোম্পানির পুরো সময় দর হারিয়ে কেনাবেচা হয়। এ ছাড়া এ বাজারে যেখানে ৫ শতাংশের ওপর দর বেড়েছে মাত্র পাঁচ কোম্পানির, সেখানে ৫ শতাংশের ওপর দর হারিয়েছে ৩৮টি কোম্পানি। সাম্প্রতিক সময়ে লেনদেন বা দরবৃদ্ধির দিক থেকে শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলোর দরপতন হয়েছে তুলনামূলক বেশি।

বাজার সংশ্নিষ্টরা জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা চলতি দরপতনের অন্যতম কারণ। সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভার অনুমতি না পাওয়ার খবর, বিএনপি নেতা আমীর খসরুর গ্রেফতার এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি নিয়ে বাজারে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক পরিবেশের অবনতি হতে পারে- এ আশঙ্কায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও ভীত। হয়তো এরই নেতিবাচক প্রভাব লেনদেনে পড়ছে। প্রায় দিনই শেয়ারদর ও সূচক কমছে।

ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি দেশে নতুন কিছু নয়। বিনিয়োগকারীরা এ ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন; বাজারও স্বাভাবিক ধারায় ফিরবে- এমনটাই আশা তার।

ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান আরও বলেন, সরকারি দল এবং সব বিরোধী দল চাইছে একটা নির্বাচন হোক। এ অবস্থায় কেউ সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করে নির্বাচনকে বানচাল করতে চাইবে না। বিনিয়োগকারীদের এটা বোঝা উচিত। অযথা ভীত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে নিজের তথা বাজারের ক্ষতি না করার জন্য সব বিনিয়োগকারীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গতকালের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সূচকের বড় পতন হলেও এ পতনে ব্যাংক খাতের বড় ভূমিকা ছিল না। গতকাল ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানির মধ্যে ১৩টির দর কমলেও বেড়েছে ৮টির। আবার কমে যাওয়ার হার তুলনামূলক কম। ব্যাংক খাতের কারণে ডিএসইএক্স সূচক হারিয়েছে মাত্র আড়াই পয়েন্ট।

গতকাল সূচক পতনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং প্রকৌশল খাত। এ দুই খাতের কারণে সূচক কমেছে ২৫ পয়েন্টের মতো। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ১৯ কোম্পানির মধ্যে ১৭টিরই দর কমেছে। প্রকৌশল খাতের ৩৬ কোম্পানির মধ্যে দর হারায় ৩০টি।

ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্রসহ অন্য সব খাতেরই সিংহভাগ শেয়ারের দর কমেছে। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১ কোম্পানির মধ্যে ২৫টির এবং বস্ত্র খাতের ৫১ কোম্পানির মধ্যে ৪০টির দর কমেছে। সিমেন্ট, তথ্যপ্রযুক্তি এবং সেবা ও নির্মাণ খাতের ১৯ কোম্পানির সবটির দর কমেছে।

একক কোম্পানি হিসেবে সূচকে সর্বাধিক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে ইফাদ অটোস, খুলনা পাওয়ার, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, বিবিএস কেবলস, সামিট পাওয়ার, লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্ট, ডরিন পাওয়ার, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যাল, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, শাহজিবাজার পাওয়ার, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ব্যাংক, ডেসকো ও উত্তরা ব্যাংক।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: