facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

ব্যাংকের অধিকাংশ গ্রাহকই ১৫ শতাংশের বেশি সুদ দিচ্ছেন


১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার, ১০:৪৮  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


ব্যাংকের অধিকাংশ গ্রাহকই ১৫ শতাংশের বেশি সুদ দিচ্ছেন

ব্যাংকাররা যথাযথ নিয়ম না মেনে ঋণ দিয়ে ব্যাংকগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেও তার দায় গিয়ে পড়ছে এখন গ্রাহকদের ওপর। তাদের ওপর বেশি সুদ এবং ক্ষেত্রভেদে দণ্ড সুদ আরোপ করা হচ্ছে। এর বাইরে আরো আছে নানা ধরনের লুক্কায়িত চার্জ।

ব্যাংকিং সূত্রমতে, ব্যাংকিং খাতে এখন যে অস্থিরতা চলছে তার জন্য অনেক ক্ষেত্রে দায়ী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। কখনো পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে যোগসাজশে, কখনো নিজেদের ক্ষমতাবলে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই তারা নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। প্রকল্প যাচাই বাছাই না করে ঋণ প্রদান করে ব্যাংককে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। যোগসাজশ করে নামে বেনামে ঋণ দেয়া নেয়ার খেলায় তারা জিতে গেলেও প্রকৃত উদ্যোক্তাদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে উচ্চ সুদ হার।

শিল্পে প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং অর্থনীতির গতিশীলতা অব্যাহত রাখতে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে (এক অংকে) নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশনা মতে, ব্যাংক মালিকরা সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন এবং তা কার্যকর করতে কয়েক দফা সুবিধা সরকারের কাছ থেকে আদায় করে নেন। কিন্তু সুবিধা নিয়েও তারা কথা রাখেননি। সুদের হার এক অংকে নামেনি।

বরং কোন কোন ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে আনার কথা বললেও বাস্তবে কৃষিঋণসহ কিছু খাতে সুদ হার ৯ শতাংশ দেখিয়ে বলা হয়েছে সিঙ্গেল ডিজিটে সুদ নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে ‘প্রভাবশালী কিছু বড় গ্রাহক’ এই সুবিধা পেলেও সবক্ষেত্রে সুদের হার কমানো হয়নি। এখনো ব্যাংকগুলোতে শিল্পে ১৫ শতাংশ বা তারও বেশি হারে সুদ ধার্য্য রয়েছে। ভোক্তা ঋণেতো কমানো হবে না বলে আগেই ব্যাংকাররা ঘোষণা দিয়েছিল।

যদিও ব্যাংক থেকে টাকা পাচার, অনিয়মের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার পরও সংশ্লিষ্টরা বহাল রয়েছেন। ফারমার্স ব্যাংক, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, এ্যাননটেক্সসহ বিভিন্ন গ্রুপের ঋণ প্রদানে অনিয়মের ঘটনা অতি সাম্প্রতিককালে উদঘাটিত হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বদলে বরং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা এদেরকে আরো চলতি মূলধন ঋণ দেয়ার পাঁয়তারা করছেন। এদের সুদও মওকূফ করা হচ্ছে। কিন্তু সৎ ও প্রকৃত উদ্যোক্তারা সুদ ও দন্ড সুদের চাপে কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

সুদ হার কমানোর ক্ষেত্রে আমানতের সুদ হার বেশি অজুহাত দেখালেও সরকারের কাছ থেকে যেসব সুবিধা নিয়েছিল ব্যাংকগুলো, তা তারা ভুলতে বসেছে। এমনকি অগ্রাধিকার দিয়ে যেসব ঋণের সহনীয় সুদ থাকার কথা সেসব ক্ষেত্রেও উচ্চ সুদ হার বলবত করা হয়েছে।

সর্বশেষ হিসাবে যেসব ব্যাংকে সুদ হার এখনো ডবল ডিজিটে রয়েছে সেগুলোর অন্যতম হল- সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক এনআরবি কমার্শিয়াল, মেঘনা, মিডল্যান্ড প্রভৃতি।

ব্যাংকারদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সুদ হার কমে যাওয়ায় আমানত কমে যাচ্ছে। ফলে, ঋণের সুদ কমানো যাচ্ছে না। বাস্তবে, অনেক ব্যাংকই ঋণ প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। কোন কোন ব্যাংক গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণের টাকা আদায় করে নিচ্ছে। ফলে, কমেছে ঋণ বিতরণের পরিমাণ।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: