facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

‘ব্যাংকে সুশাসনের অভাব, প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে’


১০ ডিসেম্বর ২০১৮ সোমবার, ০৯:৩৭  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


‘ব্যাংকে সুশাসনের অভাব, প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে’

জনগণের করের টাকায় চলে রাষ্ট্র; কিন্তু সেই করের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার না হলে দেশ কীভাবে এগোবে? আবার কর দিতে গেলেও বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় কর প্রদানকারীকে। আসলে এখানে নৈতিকতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের অনেক অভাব। তাই নৈতিকতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন বাড়াতে হবে। এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, এফসিএ, কর আইনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি ড. মো. নূরুল আজহার ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিওও ফাহমিদা হক।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি একটি বিদেশি গবেষণার তথ্য অনুযায়ী দেশের অর্থনীতির অন্যান্য সূচক ইতিবাচক হলেও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ব্যাংক খাত। একটি দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংক, আর্থিক ও পুঁজিবাজার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করতে না পারলে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের যে পরিকল্পনা, সেটি সম্ভব হবে না। দেশের অর্থনীতির সব সূচক ইতিবাচক; আবার গত বছরের চেয়ে বৈদেশিক রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু সেভাবে দেশের পুঁজিবাজার সামনের দিকে এগোচ্ছে না। তবে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

মো. নূরুল আজহার বলেন, রাষ্ট্র চলে জনগণের করের টাকায় কিন্তু সেই করের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার না হলে দেশ কীভাবে এগোবে। আবার কর দিতে গেলে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় কর প্রদানকারীকে। আসলে এখানে নৈতিকতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের অনেক অভাব রয়েছে। তাই নৈতিকতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন বাড়াতে হবে।
দেশে জিডিপি গ্রোথের মূল উৎস বৈদেশিক রেমিট্যান্স, রফতানি আয়, দেশীয় ব্যবসা ও বৈদেশিক বিনিয়োগ। বর্তমানে বৈদেশিক বিনিয়োগ অনেক কমে গেছে; যাও আসে, তা আবার কিছু ব্যক্তির প্রতিবন্ধকতার কারণে বাধ্য হয়ে অন্য দেশে চলে যায়। এটি আসলে দেশের জন্য দুঃখজনক। ওইসব বিদেশি বিনিয়োগকারী যদি না যেত, তাহলে দেশে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো এবং জিডিপি গ্রোথ আরও বৃদ্ধি পেত।

দেশে আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে, উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পুঁজিবাজার থেকে না নিয়ে ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়। ব্যাংকের কাজ হচ্ছে স্বল্পমেয়াদি ঋণ দেওয়া কিন্তু এরা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় পদ্ধতিতে ঋণ দিচ্ছে। ফলে টাকা পাচার ও লুটপাটের পথ সৃষ্টি হচ্ছে। অন্য দেশের দিকে তাকালে দেখবেন, তারা দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করে কিন্তু এদেশে তার বিপরীত চিত্র দেখা যায়।

ফাহমিদা হক বলেন, দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। আর এই খেলাপি ঋণের চর্চা শুরু হয়েছে সরকারি ব্যাংক থেকে। দেশের ৫৭ ব্যাংকের মধ্যে ৫০ শতাংশ খেলাপি ঋণ সরকারি ব্যাংকে এবং বাকি ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে। এর মূল কারণ হচ্ছে সুশাসনের অভাব। এ কারণে পুঁজিবাজারে প্রভাব পড়ছে। শুধু পুঁজিবাজার নয়, অন্যান্য খাতেও এর প্রভাব পড়ছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ, প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে। এর ফলে পুঁজিবাজারে একটি প্রভাব পড়েছে। তবে নির্বাচনের পর পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে যাবে বলে মনে করি।

দেশের পুঁজিবাজার একমাত্র ইকুইটিনির্ভর। শুধু একটি পণ্য দিয়ে পুঁজিবাজারকে ভালো করা যাবে না। তাই ইকুইটির পাশাপাশি যদি বন্ড, ডিবেঞ্চার, ডেরিভেটিভস এবং আরও ভালো মানের দেশীয় ও বহুজাতিক কোম্পানি আনা যায়, তাহলে সাধারণ ও বিদেশি বিনিয়োগকারী বৃদ্ধি পাবে এবং পুঁজিবাজার স্থিতিশীল অবস্থানে যাবে বলে আশা করি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: