facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

ব্যাংকিং খাতের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে দুর্বল বন্ড মার্কেট


২৭ জুলাই ২০১৮ শুক্রবার, ০৯:৫৯  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


ব্যাংকিং খাতের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে দুর্বল বন্ড মার্কেট

বিশ্বের অন্যান্য দেশ বন্ড মার্কেটের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এর বিপরীত চিত্র। দুর্বল বন্ড মার্কেটের কারণে ব্যাংকগুলো ডিপোজিট ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারছে না। বন্ড ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে করপোরেট সেক্টরও বন্ড মার্কেটের পরিবর্তে পুরোপুরি ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বন্ড মার্কেটের দুর্বলতা ব্যাংকিং খাতের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে গতকাল একথা বলা হয়েছে।

রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ডেভেলপমেন্ট অব বন্ড মার্কেট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রিফর্মস অ্যাডভাইজার ও সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী। তিনি অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে বন্ড মার্কেট উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। ছয় সদস্যের গবেষণা দলে আরো ছিলেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা ও রুহুল আমীন, প্রভাষক রিফাত জামান সৌরভ ও সাদনিমা আমীর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে বন্ড মার্কেট এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, যার প্রসার জরুরি। কারণ বন্ড মার্কেটের মাধ্যমে সবাই লাভবান হয়। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, এনবিআরসহ নীতিনির্ধারণী সংগঠনগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। কাজ করতে হবে ব্যাংক কর্মকর্তাদেরও। বন্ড মার্কেট শক্তিশালী করতে বর্তমান রেপো আইনে পরিবর্তনও প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী বলেন, বাংলাদেশে বন্ড মার্কেটে নতুন অনেক সিকিউরিটিজ আনতে হবে। এতে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ দেখাবে। এজন্য তিনি জিরো কুপন বন্ড, ফিক্সড কুপন বন্ড, সুকুক বন্ডের মতো পণ্যগুলোর প্রসারে গুরুত্বারোপ করেন।

অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ভিশন ২০৪১ অর্জন করতে হলে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের প্রয়োজন। অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশের বন্ড মার্কেটের বিস্তৃতি অনেক কম। এ অবস্থার পরিবর্তনে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, একসময় বন্ড মার্কেট নিয়ে কোনো আলোচনাই ছিল না। কিন্তু এখন আলোচনা হচ্ছে, এটাও ইতিবাচক। বন্ড মার্কেটের প্রসার করতে হলে অবশ্যই নীতিনির্ধারণী সংস্থাগুলোর সমন্বয় প্রয়োজন। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে শুধু ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করলে চলবে না। বন্ড মার্কেটে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। এজন্য এই খাতকে পরিচালনা করতে হলে দক্ষ জনশক্তি তৈরির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো. ইয়াছিন আলি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শুধু ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এজন্য ব্যাংকের পাশাপাশি বন্ড মার্কেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই মার্কেটের উন্নয়ন করতে হলে সরকার ও নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তাদের একসঙ্গে এবং আন্তরিকতার মাধ্যমে কাজ করতে হবে। এ মার্কেটের বিস্তৃতির লক্ষ্যে এর ওপর নির্ধারিত কর হার কমানোর পরামর্শ দেন তিনি।

সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, বন্ড মার্কেট, ব্যাংক ব্যবস্থা এবং শেয়ারবাজারের মধ্যে সমন্বয় করলে তারল্যসংকট থাকবে না।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: