০১ আগস্ট ২০১৭ মঙ্গলবার, ১০:২৪ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ ব্যাংকের আয় বেড়েছে। তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ২৯টি জানুয়ারি-জুনের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ১৮টি ব্যাংকেরই শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। অন্যদিকে শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ১১টি ব্যাংকের। ব্যাংকগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এখনও চলতি বছরের প্রথমার্ধের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি লোকসানি প্রতিষ্ঠান আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। ৩ আগস্ট এ প্রতিষ্ঠানটির জানুয়ারি-জুনের আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
শেয়ারপ্রতি আয় আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে এমন ব্যাংকের তালিকায় রয়েছে ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছর শেয়ারপ্রতি আয় আগের বছরের তুলনায় সব থেকে বেশি বেড়েছে ব্যাংক এশিয়ার। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৭৫ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় ১৭৪ শতাংশ শেয়ারপ্রতি আয় বেড়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক। তৃতীয় স্থানে থাকা প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৫৮ শতাংশ।
অবশ্য শেয়ারপ্রতি আয়ের দিকে চলতি বছর শীর্ষে রয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথমার্ধে এ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৭ টাকা ১০ পয়সা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৬৬ পয়সা। আর ২ টাকা ৩১ পয়সা শেয়ারপ্রতি আয় নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক।
এদিকে ১১টি ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদপ্রবাহ ঋণাত্মক হয়ে পড়ার তালিকায় শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে এমন ব্যাংক রয়েছে চারটি। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হওয়া পরিচালন নগদপ্রবাহ ঋণাত্মক হয়ে পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। এটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা ইঙ্গিত করে।
পরিচালন নগদপ্রবাহ ঋণাত্মক হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে ব্যাংক এশিয়া, যমুনা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এবং সাউথ ইস্ট ব্যাংক।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশকে কেন্দ্র করে গত এক মাস ধরে অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ার দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যার প্রভাব সোমবারও অব্যাহত ছিল।
এদিন লেনদেন হওয়া একটি বাদে সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়েছে। আর গত এক মাসে উল্লেখযোগ্য হারে শেয়ারের দাম বেড়েছে রূপালী ব্যাংকের। ব্যাংকটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এছাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ২৭ শতাংশ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ২৭, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ২২, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৩, ব্যাংক এশিয়ার ১০ ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৮ শতাংশ দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলো বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। ২০১৬ সালে অধিকাংশ ব্যাংক বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। আর চলতি বছরের প্রথমার্ধে ব্যাংকগুলোর প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে শেয়ারপ্রতি আয়ের যে চিত্র উঠে এসেছে; তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে আগের বছরের তুলনায় সব থেকে শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ন্যাশনাল ব্যাংকের। আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ৫০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ৪৫ শতাংশ। আর ৩৯ শতাংশ শেয়ারপ্রতি আয় কমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এবি ব্যাংক।
চলতি বছর সব থেকে কম শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪০ পয়সা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪৪ পয়সা। ৪৬ পয়সা শেয়ারপ্রতি আয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।