facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

বিএসইসির নির্দেশে তদন্তে স্টাইলক্রাফট


২১ এপ্রিল ২০১৮ শনিবার, ০২:০৭  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


বিএসইসির নির্দেশে তদন্তে স্টাইলক্রাফট

 

বস্ত্র খাতের স্বল্প মূলধনি কোম্পানি স্টাইলক্রাফট লিমিটেডের সাম্প্রতিক শেয়ার লেনদেন ও দরবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশে এ তদন্ত করবে ডিএসই। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনায় সন্দেহজনক প্রবণতা পরিলক্ষিত হওয়ায় এ নির্দেশ দেয় কমিশন। ডিএসইর কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিএসইসি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলে জানা গেছে।

বিএসইসির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কমিশনের কাছে স্টাইলক্রাফটের লেনদেন ও দরবৃদ্ধির বিষয়টি সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে। এজন্য বিষয়টি তদন্ত করে ডিএসইকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ডিএসইতে স্টাইলক্রাফটের সাম্প্রতিক শেয়ার লেনদেন ও দরচিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত এক মাসে শেয়ারটির দর এক-তৃতীয়াংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে ১৫ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১ হাজার ৩৬৩ টাকা ৭০ পয়সা। এর পর থেকেই ক্রমাগত শেয়ারটির দর বাড়তে থাকে এবং ১৫ এপ্রিল ১ হাজার ৮৫৬ টাকা ৪০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২১ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। একইভাবে ১৫ মার্চের আগে প্রতিদিন গড়ে কোম্পানিটির চার হাজার শেয়ার লেনদেন হলেও এর পর থেকেই হঠাৎ করে শেয়ার লেনদেন পরিমাণ বেড়ে যায়। একই সময়ে হাওলাও বেড়েছে। স্বল্প মূলধনি হওয়ায় লভ্যাংশ ঘোষণার আগের সময়গুলোয়ও অল্প সময়ে শেয়ারটির দর অনেক বেশি বেড়ে যেতে দেখা যায়।

বিএসইসি মনে করছে, স্টাইলক্রাফটের পর্ষদ সভায় ব্যবসা সম্প্রসারণসংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে থেকেই কোম্পানির শেয়ারদর ও লেনদেন বৃদ্ধির বিষয়টি সন্দেহজনক। এক্ষেত্রে কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সম্পর্কে পর্ষদ সভার আগেই অবগত হয়ে কেউ শেয়ার লেনদেন করেছেন কিনা, সেটা যাচাই করা প্রয়োজন। পর্ষদ সভার আগে ইনসাইডারদের শেয়ার লেনদেনের কিছু ঘটনাও কমিশনের নজরে এসেছে বলে জানা গেছে। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছে কমিশন। এজন্য ডিএসইকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।

এদিকে কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে ডিএসইর পক্ষ থেকে গত ২৫ মার্চ নোটিস পাঠানো হয়। ডিএসই নোটিস পাঠানোর তিনদিন পর ২৮ মার্চ বিকাল ৪টা ৫৩ মিনিটে দরবৃদ্ধির পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে জানায় কোম্পানিটি। এর আগে একই দিন বেলা ৩টায় অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় অ্যাকর্ডের পরামর্শ অনুসারে স্টাইলক্রাফটের কারখানা ভবন সংস্কার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি বিদ্যমান ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে উৎপাদন সক্ষমতা ২৩ শতাংশ বাড়ায় কারখানায় ছয়টি নতুন উৎপাদন লাইন স্থাপনের জন্য যন্ত্রপাতি সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এজন্য যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য এলসি খুলতে পূবালী ব্যাংকের কাছে পাঁচ বছর মেয়াদে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণের আবেদন করারও সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানির পর্ষদ।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, মার্চের ২৫ তারিখ পর্যন্ত স্টাইলক্রাফটের কাছে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিল না বলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। পরবর্তীতে মার্চের ২৮ তারিখে অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত ও দরবৃদ্ধির নোটিসের জবাব একসঙ্গে পাঠানো হয়।

তবে বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ২৫ মার্চ পর্যন্ত কোম্পানির কাছে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য না থাকলেও ২৮ তারিখে এসে কারখানার ভবন সংস্কার, উৎপাদন লাইন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যন্ত্রপাতি আমদানি করার ঘোষণা দেয়ার বিষয়টি সন্দেহজনক। কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আগেই অবগত ছিলেন। কারণ হুট করে ডিএসইর নোটিস পাওয়ার তিনদিনের মধ্যেই কোম্পানি ব্যবসা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয়। একই সঙ্গে পর্ষদ সভার দুই সপ্তাহ আগে থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন ও দরবৃদ্ধির বিষয়টিও যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক করে। এ বিষয়ে ডিএসই ও বিএসইসিকে তদন্ত করে প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: