facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

বাপ্পারাজ কাঁদালেন, আলমগীর-ফরুকের আশ্বাস


২৬ আগস্ট ২০১৭ শনিবার, ১১:০৩  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


বাপ্পারাজ কাঁদালেন, আলমগীর-ফরুকের আশ্বাস

বাবা হারানোর বেদনায় সন্তান কাঁদবেন, এটাই স্বাভাবিক। বাপ্পারাজও কাঁদলেন, সবাইকে কাঁদালেনও। তবে আজ দুপুরে এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোরে সদ্য প্রয়াত নায়করাজ রাজ্জাকের ছেলের অশ্রুসজল চোখে ছিল বেদনার চেয়েও আরও বেশি কিছু। ছিল ক্ষোভ, আকুতি এমনকি আর্তনাদও। গত বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকার চলচ্চিত্রে যে সংকট, সেটির প্রসঙ্গ টেনে মঞ্চের সামনে বসা সবার প্রতি বাপ্পা অনুরোধ জানান, অন্তত তাঁর প্রয়াত বাবার কারণে হলেও যেন চলচ্চিত্রের এই অচলাবস্থার অবসান হয়।

২১ আগস্ট সোমবার না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা ‘নায়করাজ’ রাজ্জাক। তাঁর স্মরণে শনিবার এফডিসিতে শোকসভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার।

এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোরে দর্শক আসন ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। শুরুতে বাপ্পারাজ বক্তৃতা দিতে এলে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে ফ্লোরে। বক্তব্যের শুরুতে সন্তান হিসেবে নিজ বাবা সম্পর্কে মানুষের কিছু ভুল ধারণা আর সমালোচনার জবাব দেন একসময়কার জনপ্রিয় এ নায়ক। রাজ্জাক সমন্ধে কিছু ব্যাপারে মানুষের মধ্যে প্রচলিত ধারণাকে ভুল হিসেবে বলে বিষগুলো ব্যাখ্যা করেন তিনি। বক্তব্যের একপর্যায়ে চলচ্চিত্র অঙ্গনের চলমান জটিলতা নিয়ে ইঙ্গিত করে বাপ্পারাজ বলেন, ‘আমিও হয়তো ভুল করে অনেক কথা বলেছি। আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। আমি ভুল করেছি, এ জন্য নোটিশ পাঠানোর দরকার নেই। শাকিব ভুল করেছে, এ জন্য বয়কট করার দরকার কী? শাকিবকে ডাকলে শাকিব আসবে না কেন?’

এ সময় বাপ্পার কণ্ঠে ঝরেছে শঙ্কা আর অভিমান, ‘এ অবস্থা চলতে থাকলে চলচ্চিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। এটা আমরা কখনোই চাই না। যদি আপনারা সব নিষেধাজ্ঞা, মামলা তুলে না নেন, আমি আর কখনোই এফডিসিতে আসব না। হয়তো এটাই হবে আপনাদের সঙ্গে আমার শেষ দেখা।’

বাপ্পারাজের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে সবাইকে আশ্বস্ত করলেন অভিনেতা আলমগীর। জ্যেষ্ঠ শিল্পীদের মধ্যে তিনিই সবার আগে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হয়েছিলেন। আলমগীর বলেন, রাজ্জাককে কখনো বাবা, কখনো পথপ্রদর্শক আবার কখনো সহশিল্পী হিসেব দেখেছেন। নায়করাজ সমন্ধে তাঁর ভাষ্য, ‘রাজ্জাক ভাই আমাকে প্রতিকূল আবস্থায় পাখির মতো উড়তে শিখিয়েছেন।’ এ সময় বাপ্পারাজকে উদ্দেশ করে আলমগীর বলেন, ‘বাপ্পাকে বলছি, আমাদের চলচ্চিত্র পরিবার এক থাকবে। ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া হতে পারে, দ্বন্দ্ব হতে পারে, এমনকি মারামারিও হতে পারে। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি, এই দ্বন্দ্ব যত দ্রুত সম্ভব আমরা মিটমাট করব। এই চলচ্চিত্রকে নিয়ে রাজ্জাক ভাই যে স্বপ্ন দেখতেন, সেই স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করব। এটা কথা দিলাম।’

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুকও সব দ্বন্দ্ব দূর করে জটিলতা নিরসনের আশ্বাস দিলেন। নাম উল্লেখ না করে তিনি অনুপস্থিত শিল্পীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফারুক বলেন, ‘চলচ্চিত্র পরিবার গঠিত হওয়ার আগে রাজ্জাক ভাই আমাকে একদিন ডেকেছিলেন। বলেছিলেন, ফারুক এফডিসিতে আবার কী হচ্ছে? তুই একটু দেখনারে ভাই! আমি বলেছিলাম, এত বড় দায়িত্ব আমার পক্ষে একা নেওয়া সম্ভব না ভাই। তারপরও তিনি আমাকে এই দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন। আমি নিয়েছি।’
নায়করাজকে ‘বড় ভাই’ হিসেবে উল্লেখ করে ফারুক বলেন, ‘তাঁকে সবাই নায়করাজ, মহানায়ক এসব উপাধি দিয়েছেন। কোনোটাই মিথ্যা নয়। কিন্তু আমার কাছে তিনি আমার ভাই, আমার বড় ভাই ছিলেন। আমার আর তাঁর মধ্যে যে সুন্দর-সুসম্পর্ক ছিল, সেটা তাঁর বাড়ির মানুষও জানতেন না। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল, সেটা অনস্ক্রিনে। স্ক্রিনের বাইরে আমরা ছিলাম খুব ঘনিষ্ঠ। আমি সব সময় তাঁকে সম্মান করেছি।’

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: