facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল বুধবার, ২০২৪

Walton

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টে শুরু নতুন ১১ নিয়ম


২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার, ০৩:৩০  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টে শুরু নতুন ১১ নিয়ম

‘কোড অব কন্ডাক্টে’ বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। প্রাথমিকভাবে কথা ছিল, চলতি বছরের এক অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে নতুন এই আইনগুলো। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি তিনদিন এগিয়ে এনে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট থেকেই নতুন নিয়ম প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সেই হিসেবে ক্রিকেট ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট। পচেফস্ট্রুমে শুরু হওয়া এই টেস্ট ম্যাচ দিয়েই যাত্রা শুরু করেছে আইসিসির প্রণয়ন করা নতুন ১১টি আইন। প্রিয়.কমের আজকের আয়োজন আইসিসির প্রণয়ন করা নতুন ১১টি আইন নিয়েই।

এই পরিবর্তিত নিয়মে থাকছে ব্যাটের মাপ থেকে রান আউটের নিয়ম, ডিআরএস থেকে ক্রিকেটারদের শাস্তি। এমনকি নো বল থেকে শুরু করে বাই, লেগ বাই নিয়েও নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন আইনের কী প্রয়োগ শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্ট থেকে।

বদলে গেছে ব্যাটের মাপ:
নতুন নিয়মে বদলে গেছে ব্যাটের মাপ। ব্যাট লম্বা এবং চওড়ার নিয়মে কোনও পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। তবে ব্যাটের কানা ৪০ মিলিমিটারের বেশি পুরু করা যাবে না। আর গভীরতা কখনওই ৬৭ মিলিমিটারের বেশি হবে না।
এক্ষেত্রে কড়া নজরদাড়িতে থাকবেন ব্যাটসম্যানরা। অনফিল্ড আম্পায়ারদের কাছে থাকবে বিশেষ ছাঁচ, যার মাধ্যমে মাপা যাবে ব্যাটের পুরুত্ব।

ফুটবলের মতো লাল কার্ড:
ফুটবলের মতো এবার ক্রিকেটেও আসছে মাঠে নিয়ম ভাঙা খেলোয়াড়দের তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা। যার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে আম্পায়ারদের হাতে। মাঠের মধ্যে কোনও ক্রিকেটার অশোভন আচরণ করলে তাকে মাঠ থেকে বের করে দিতে আম্পায়াররা ব্যবহার করবেন ফুটবলের মতো লাল কার্ড। এই লাল কার্ড দৃশ্যমান না হলেও আচরণের মাত্রা ছাড়ালেই ফুটবলের মতোই মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে আশ্রয় নিতে হবে ক্রিকেটারদের।

কোনও খেলোয়াড় আম্পায়ারকে নিগ্রহ, হুমকি, ইচ্ছাকৃতভাবে তার সঙ্গে শারীরিক সংযোগ, অন্য কোনও খেলোয়াড়কে নিগ্রহ করলে লেভেল ফোর দোষে দুষ্ট হবেন তিনি। এমন অবস্থায় আম্পায়াররা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই খেলোয়াড়কে বাইরে বের করে দিতে পারবেন। মাঠে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মাত্রা ‘লেভেল তিন’ হলে নির্দিষ্ট কিছু ওভারের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে ক্রিকেটারকে।

আর যদি অপরাধের মাত্রা লেভেল চারের হয়, সেক্ষেত্রে ম্যাচের বাকি সময়ের জন্য নিষিদ্ধ হবেন। ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে তার নামের পাশে রিটায়ার্ড আউট লেখা হবে। তবে লেভেল ওয়ান থেকে থ্রি পর্যন্ত দোষ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আইসিসির কমিটি।

রান আউট বা স্টাম্পিং:

বর্তমানে দাগ পার হলেও যদি স্ট্যাম্প ভাঙার সময় ব্যাটসম্যানের পা কিংবা ব্যাট মাটিতে না থাকে, সেক্ষেত্রে আউট বলে বিবেচিত হন। তবে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম টেস্ট থেকে রান আউট বা স্টাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে মাটিতে ব্যাট স্পর্শ করাটা বাধ্যতামূলক থাকছে না। মানে উইকেটে বল লাগার সময়ে ব্যাটসম্যানের ব্যাট ক্রিজে পৌঁছালেই হবে, মাটিতে ঠেকানো বাধ্যতামূলক নয়।

ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস):
ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএসের নিয়মেও বদল আসছে। এত দিন পর্যন্ত ডিআরএসের সিদ্ধান্ত বিপক্ষে গেলে দলের কোটা থেকে একটি রিভিউ বাদ চলে যেত। তবে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্ট থেকে ডিআরএসের সিদ্ধান্ত বিপক্ষে গেলেও সেটি যদি ‘আম্পায়ার্স কল’ হয়, তাহলে আর রিভিউয়ের কোটা কমবে না। এছাড়া পুরো ইনিংসে দু’বার করে রিভিউ নিতে পারবে দু’দল।

এতদিন টেস্ট ও ওয়ানডে ডিআরএস থাকলেও ছিল না ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণ টি-টোয়েন্টিতে। এবার টি-টোয়েন্টিতেও চালু হচ্ছে ডিআরএস।

উইকেটের পর বিরতি:
উইকেট পড়ার পর তিন মিনিটের বিরতি পাবে দু`দল। আগে এই বিরতি ছিল দুই মিনিটের!

নো বল, বাই এবং লেগ বাই:
কোন কারণে বোলার ভুল জায়গায় বোলিং করলে অথবা বল ডেলিভারির সময় তার কনুই সোজা না থাকলে কিংবা ফিল্ডার অবৈধস্থানে অবস্থান নিলে বলটি নো বল হিসেবে গণ্য হয়। এর আগে পিচে বল দুইবারের বেশি বাউন্স করলেও নো বল হিসেবে বিবেচিত হত। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে বল একবারের বেশি বাউন্স করলেই তা নো বল হিসেবে বিবেচিত হবে। এছাড়া নো বলে বাই বা লেগ বাই হলে আলাদা হিসাব হবে। নো বলের রান হিসাব হবে বোলারের ক্ষেত্রে আর সে বলে হওয়া বাই ও লেগ বাই যোগ হবে দলীয় রানে।

অবসট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড ও হ্যান্ডেলড দ্য বল:
ক্রিকেটের ৩৭তম আইন অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড। কোনও ক্রিকেটার কথা বা কাজের দ্বারা ফিল্ডারদের কাজে বাধা সৃষ্টি করলে তাকে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডের দোষে আউট দেওয়া হতে পারে। আর ক্রিকেটের ৩৩তম আইনটি হল হ্যান্ডেলড দ্য বল। প্রতিপক্ষের সম্মতি ছাড়াই বল ব্যাটে স্পর্শ করার পূর্বে কোনও ব্যাটসম্যান বল হাতে ধরলে তিনি আউট হবেন।
আইসিসির নতুন প্রণীত আইনে `হ্যান্ডেলড দ্য বল সংক্রান্ত` পুরনো আইনটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে নতুন আইন কেমন হবে সে সম্পর্কে কিছু জানায়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি।

টেস্ট স্কোয়াড:
এতদিন সাদা পোশাকের জন্য ১৫ সদস্যর দল ঘোষণা করা হতো। তবে নতুন আইন অনুযায়ী সংখ্যাটা বাড়িয়ে ১৭ জন করা হয়েছে।

আবেদন ও আম্পায়ার:
আম্পায়ার যদি মনে করেন, ব্যাটসম্যান আউট নন সেক্ষেত্রে যে কোন সময় তাকে
ফিল্ডাররা যদি মনে করেন যে, ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন তাহলে তারা আম্পায়ারের কাছে `হাউ ইজ দ্যাট` বলে আবেদন করেন। সচরাচর তারা পরের বল করার পূর্বেই হাত উঠিয়ে সমস্বরে এ আবেদন জানান। তারপর আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নেন, ব্যাটসম্যান সত্যিকার অর্থেই আউট হয়েছেন কি না। ব্যাটসম্যান যদি মনে করেন, তিনি আউট হয়েছেন সেক্ষেত্রে আবেদন বা আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বেই তিনি পিচ ত্যাগ করবেন।

এ ক্ষেত্রে আম্পায়ার যদি মনে করেন, ব্যাটসম্যান আউট নন তাহলে মাঠ ছাড়ার পূর্বেই তাকে ফেরাতে হত। তবে নতুন নিয়মে পরবর্তী বল করার আগ পর্যন্ত যে কোন সময় তাকে ফেরাতে পারবেন আম্পায়ার। এমনকি ব্যাটসম্যান মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও।

ফিল্ডার অথবা উইকেটরক্ষকের হেলমেটে লেগে ক্যাচ:
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাটসম্যানের শট ক্লোজ ইন পজিশনে ফিল্ডিং করা ফিল্ডারের হেলমেট কিংবা উইকেটরক্ষকের হেলমেটে বল লাগলে এবং তা লুফে নিতে পারলে সাজঘরে ফিরবেন ব্যাটসম্যান। আগের নিয়মে ফিল্ডার কিংবা উইকেটরক্ষকের হেলমেট লাগা বল ক্যাচ নিলে তা আউট হত না।

বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ:
আইসিসির নতুন এই নিয়মে পরিবর্তন আসছে ক্যাচেও। বাউন্ডারি লাইন থেকে লাফিয়ে বল ধরে মাঠের মধ্যে ছুঁড়ে দিয়ে ফিল্ডার যদি মাঠের বাইরে পা রাখেন তবে ছয় রান ধরা হবে। আগে এমন অবস্থায় ক্যাচ আউট বলে বিবেচনা করা হত!
এছাড়া আইসিসির আনফেয়ার প্লে নিয়মে থাকছে নতুন কিছু সংযুক্তি। যেমন এখন থেকে ইচ্ছাকৃত নো বল করলে ওই ইনিংসে আর বলই করতে পারবেন না সেই বোলার।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: