facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

ফের পতনে ৩৩ শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে


১৬ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার, ০৪:৩৮  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ার বিজনেস24.কম


ফের পতনে ৩৩ শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে

দরপতনের ধারা থেকে স্থিতিশীলতার পথে সর্বশেষ দুই মাসে দর বাড়তে থাকে অনেক শেয়ারের। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হয়ে আসতে থাকে অনেক কোম্পানির শেয়ার। তবে সাম্প্রতিক সময়ের অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে আবার বেশ কিছু শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে নেমে এসেছে। গতকাল বুধবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে। মাঝে এ সংখ্যা মাত্র চারটিতে নেমে এসেছিল।

 

সংশ্নিষ্টরা জানান, নানা গুজব ও গুঞ্জনে বীমা ও মিউচুয়াল ফান্ডে ঘুরপাক খাচ্ছে পুরো বাজার। অস্বাভাবিক হারে দর বাড়তে থাকায় অন্য শেয়ার বিক্রি করে প্রথমে বীমার শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। পরে দরবৃদ্ধির ধারা দেখে এবং শেয়ারবাজার-সংশ্নিষ্ট নীতিনির্ধারকদের মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে বিভিন্ন আশাজাগানিয়া বক্তব্যে এ খাতে ঝুঁকেছেন। এর বাইরে অল্প সময়ে একের পর এক আইপিওর সাবস্ট্ক্রিপশন হওয়ায় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কয়েকশ কোটি টাকা প্রাইমারি বাজারে আটকে আছে। এর প্রভাব পড়েছে দৈনন্দিন লেনদেনে। সূচকও কমেছে টানা আট দিন। এসব কারণে অনেক কোম্পানির দর কমছে কয়েকদিন ধরে।

 

 

বর্তমানে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ৩২৪টি। এর বাইরে তালিকাভুক্ত মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড ৩৭টি। গতকাল দিনের লেনদেন শেষে ক্লোজ প্রাইস ও ফ্লোর প্রাইসের তুলনা করে দেখা গেছে, কোনো মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারদর এখন ফ্লোর প্রাইসে নেই। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত ৪৮ বীমা কোম্পানির মধ্যে তিনটি জীবন বীমার শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে ছিল। এগুলো হলো- ন্যাশনাল লাইফ, পপুলার লাইফ ও প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

 

অন্য যেসব কোম্পানির শেয়ার গতকাল দিনের লেনদেন শেষে ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল, সেগুলো হলো- ব্যাংক খাতের উত্তরা ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং (ডিবিএইচ) ও পিপলস লিজিং (লেনদেন বন্ধ)। জ্বালানি খাতের সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল। প্রকৌশল খাতের সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। ওষুধ ও রসায়ন খাতের এডভেন্ট ফার্মা, সেন্ট্রাল ফার্মা, ফার কেমিক্যাল, জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস এবং কোহিনূর কেমিক্যাল। বস্ত্র খাতের এপেক্স স্পিনিং, মেট্রো স্পিনিং, এমএল ডাইং, নূরানি ডাইং, সায়হাম কটন, সায়হাম টেক্সটাইল এবং ভিএফএস থ্রেড।

 

এ ছাড়া সিমেন্ট খাতের মেঘনা সিমেন্ট, এমআই সিমেন্ট এবং প্রিমিয়ার সিমেন্ট। সিরামিক খাতের স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের এপেক্স ট্যানারি, ফরচুন সুজ এবং সমতা লেদার। কাগজ ও ছাপাখানা খাতের খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং এবং সোনালী পেপার। ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের বিডি সার্ভিসেস, সী পার্ল এবং ইউনিক হোটেল। বিবিধ খাতের আমান ফিড এবং এসকে ট্রিমস। এর মধ্যে একমাত্র কোম্পানি সী পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্প্যা গত মার্চে শেয়ার ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর থেকে পুরোটা সময় শেয়ার ফ্লোর প্রাইসেই কেনাবেচা হচ্ছে।

 

শেয়ারগুলোর দরের ইউটার্নের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, আইপিওর কারণে সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারে কিছুটা প্রভাব পড়েছে এ কথা ঠিক। এটা সাময়িক সমস্যা। কমিশনের হাতে তিন বছরেরও বেশি সময় আটকে থাকা আইপিও আবেদন অনুমোদন বা বাতিল করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। বর্তমান কমিশন এখন পর্যন্ত যত আইপিও অনুমোদন করেছে, সেগুলো থেকে বাতিল করেছে বেশি। এর ফলে একদিকে যেসব উদ্যোক্তা মন্দ শেয়ার পাবলিকের কাছে গছিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় আছেন, তারা এ পথে আসতে শতবার চিন্তা করবেন। তিনি আরও বলেন, ভালো উদ্যোক্তারা তাদের কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে আগ্রহী হবেন। কারণ কমিশন অতি অল্প সময়ে তাদের আবেদন বিবেচনা করবে, বিনিয়োগকারীর জন্য ভালো হলে শেয়ার ছেড়ে মূলধন তোলার সুযোগ পাবে। এতে বাজারের গুণগত উন্নয়ন হবে, বাজারের গভীরতা বাড়বে এবং এর সার্বিক সুফল বিনিয়োগকারীরাই পাবেন। কমিশনের কাছে অনুমোদনযোগ্য আইপিও আর বেশি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আইপিওর টাকা ফিরলে শিগগির বাজারে স্বাভাবিক ধারা ফিরে আসবে।

 

এদিকে কয়েকদিন কমার পর গতকাল পুনরায় বীমা এবং মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারদর বেড়েছে। ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ৪৮ বীমার মধ্যে ৪৪টির এবং ৩৭ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২৮টিরই বাজারদর বেড়েছে। উভয় খাতের গড় বাজারদর বেড়েছে যথাক্রমে ৬ শতাংশ এবং ২ শতাংশ। একই ধারায় ছিল আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত।

 

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: