facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

ফুলে ওঠা মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে শঙ্কা


২৯ জুলাই ২০১৯ সোমবার, ১২:৩৬  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


ফুলে ওঠা মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে শঙ্কা

টানা চার সপ্তাহ উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ ছাড়া বৃদ্ধির পর মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারদরে টান পড়েছে। গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে তালিকাভুক্ত ৩৭ মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের সবগুলোই দর হারিয়েছে। গড়ে ফান্ডগুলো সাড়ে ৭ শতাংশ দর হারিয়েছে। এমনকি ১৮ ফান্ড কেনাবেচা হয়েছে দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দরে।

বাজার-সংশ্নিষ্টরা জানান, মিউচুয়াল ফান্ডগুলো নতুন করে আর লভ্যাংশ আকারে রি-ইনভেস্টমেন্ট ইউনিট বা আরআইইউ (প্রচলিত অর্থে বোনাস লভ্যাংশ) ঘোষণা করতে পারবে না- বিএসইসির নতুন এমন নিয়মের কারণে এ খাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। এ কারণে কোনো ফান্ডের বাজারদর এক মাসে দ্বিগুণ থেকে পাঁচগুণ হওয়ার যৌক্তিকতা না থাকলেও তা হয়েছে। এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্নিষ্ট কারও নজর ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল সব ফান্ডের দর কমেছে। এ নিয়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, গত সপ্তাহের অস্থিরতার পর চলতি সপ্তাহেও একই অবস্থায় শেয়ারবাজারের সার্বিক লেনদেন শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় দিনের লেনদেন শুরুর প্রথম ১০ মিনিটে অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধির ওপর ভর করে বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫১৬০ পয়েন্ট ছাড়ায়। পরের এক ঘণ্টায় অধিকাংশ শেয়ার দর হারানোয় সূচকটি আগের অবস্থান থেকে ৪০ পয়েন্ট হারিয়ে ৫১২০ পয়েন্টে নামে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত সূচকটি মাত্র শূন্য দশমিক ৬৮ পয়েন্টে বেড়ে লেনদেন শেষ হয়।

লেনদেন শেষে দেখা যায়, প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ১১১ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। অন্যদিকে ২১৪টির দর কমেছে, বাকি ২৬টির দর ছিল অপরিবর্তিত। অর্থাৎ সাড়ে ৩১ শতাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬১ শতাংশ দর হারিয়েছে। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতে ৩৪ শতাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে পৌনে ৫৬ শতাংশের দর কমেছে। দুই বাজারে কেনাবেচা হয়েছে ৪২৭ কোটি টাকার শেয়ার।

খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক এবং তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের অধিকাংশ শেয়ারের বাজারদর বেড়েছে। এ ছাড়া সিমেন্ট, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট এবং বিবিধ খাতে ছিল মিশ্রধারা। এর মধ্যে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা, প্রকৌশলসহ বাদবাকি সব খাতের অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে। বেশিরভাগ শেয়ার দর হারালেও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, স্কয়ার ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংকসহ আরও কিছু বৃহৎ মূলধনী কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি সূচকের নিম্নমুখী হওয়া ঠেকিয়ে দেয়।

সূচক ও লেনদেনের অস্থিরতার মধ্যেও গতকাল শেয়ারবাজারে আলোচনার বড় অংশজুড়ে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। গত কয়েক সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় পাঁচ মিউচুয়াল ফান্ডের কেনাবেচা শুরু হয় সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে, ছিল বিক্রেতাশূন্য অবস্থায়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল স্ট্র্যাটেজিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (এসইএমএল) নামের সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির ব্যবস্থাপনাধীন তিন মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড। গতকাল লেনদেনের শেষে এসব ফান্ড সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হয়েছে, ছিল ক্রেতাশূন্য অবস্থায়।

সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে ফান্ডগুলোর অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির বিষয়টি নজরদারি শুরু করার খবরে বিক্রি বেড়ে যায়। সরকার ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায় থেকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়ার পর সক্রিয় হয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এর পরই দরপতন শুরু হয়।

বাজার-সংশ্নিষ্টরা জানান, তালিকাভুক্ত অন্য সব শেয়ার বা ফান্ডের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির বিষয় বিএসইসি বা স্টক এক্সচেঞ্জ যতটা নজরদারি করে, এ ক্ষেত্রে নজরদারি ততটা দৃশ্যমান ছিল না।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: