facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

শেয়ারের কেনা দাম বিবেচনা

প্রস্তাবে সায় নেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের


২৯ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার, ০২:১৩  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


প্রস্তাবে সায় নেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে শেয়ারের কেনা দাম বিবেচনায় নেওয়ার প্রস্তাবে সায় নেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। এক্সপোজার হিসাবের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত বাজারমূল্যের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যের হিসাব অনুসরণ করলে তাতে আন্তর্জাতিক ঋণমানে পিছিয়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে, বর্তমানে তারল্যের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে তার অন্যতম কারণ ফারমার্স ব্যাংক আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে পারছে না- এমন খবরে অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের বেসরকারি ব্যাংক থেকে আমানত উত্তোলন। এটি ঠেকাতে সরকারি উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ৪০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংক খাত ও শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বলা হয়, শেয়ারবাজারে এক্সপোজার হিসাবের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী `মার্ক টু মার্কেট` পদ্ধতি প্রচলিত।
আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা মুডিস এবং এসঅ্যান্ডপির রেটিং দেওয়ার ক্ষেত্রে এ বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। কোনো কারণে এ অবস্থান থেকে সরে এলে ঋণমানে বাংলাদেশের অবস্থান পিছিয়ে পড়তে পারে। আমদানি ও রফতানির খরচ বাড়তে পারে। বিদেশি ঋণ নিতে বেশি সুদ ব্যয় করতে হবে। এ কারণে এ পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়টি ভাবা হচ্ছে না।

ব্যাংক কোম্পানি আইনের আলোকে ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা নির্ধারণ করে একটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়, শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম হিসেবে রক্ষিত স্থিতি, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংসের ২৫ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করা যাবে না। সমন্বিত পদ্ধতিতে তথা সাবসিডিয়ারিতে বিনিয়োগসহ ব্যাংক ও তার সাবসিডিয়ারি বা সহযোগী কোম্পানি মিলে এসব উপাদানের ৫০ শতাংশ বিনিয়োগ করা যাবে। তবে সম্প্রতি শেয়ারবাজার-সংশ্নিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর এক্সপোজার হিসাব বাজারমূল্যের ভিত্তিতে হওয়ায় শেয়ারবাজারে তারল্য প্রবাহ কমে গেছে। তারা ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে এ হিসাব চান।

ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে এক্সপোজার হিসাবের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত `মার্ক টু মার্কেট` পদ্ধতি অনুসরণ করা ভালো। কেননা বাজারভিত্তিক হিসাব না হলে প্রকৃত পরিস্থিতি বোঝা যায় না। বেসরকারি ব্যাংকে আমানত বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার দাবি জানানো হয়েছে। ৪০ শতাংশ হলেও তা ভালো হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনা বৈঠকে বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংক আমানতের অর্থ ফেরত দিতে না পারায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও অনেকে টাকা তুলে নিয়ে নিজের কাছে রাখছে। আবার চাহিদার আলোকে ডলার বিক্রির বিপরীতে চলতি অর্থবছরের এ সময় পর্যন্ত বাজার থেকে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা উঠে এসেছে। এসব কারণে কিছু ব্যাংক সংকটে পড়লেও সামগ্রিক ব্যাংক খাতে বড় ধরনের তারল্য ঘাটতি নেই। যে কারণে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে (কলমানি) এখনও গড়ে সাড়ে ৪ শতাংশের মতো সুদে লেনদেন হচ্ছে। তিন শতাংশের কম সুদে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে টাকা খাটাচ্ছে অনেক ব্যাংক। দু`একটি ব্যাংক ছাড়া বেশিরভাগই বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে সিআরআর ও এসএলআর সংরক্ষণ করতে পারছে। ব্যাংক খাতে এখনও উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে ৭৩ হাজার কোটি টাকার মতো। বৈঠকে বলা হয়, ব্যাংকগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানতের ৪০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বিষয়ে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে অনুরোধ জানানো হবে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: