facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরবে কি?


৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ সোমবার, ০৩:০৮  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরবে কি?

পুঁজিবাজারে সুদিন ফেরার আভাস দিলেও খুব একটা স্থায়ী হয়নি। অনেকেই অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে পুঁজিবাজার অনেক খারাপ অবস্থানে বলে মনে করছেন। এই সমান্য উত্থান, টানা পতন। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালের পুরোটাই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ছিল দেশের পুঁজিবাজার। দু-একদিন লেনদেনের গতি বৃদ্ধি আর সূচকের উত্থানে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদি হওয়ার আগেই তা ভেঙে গিয়েছে।

কেননা, ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে বাজারে হঠাৎ করে পতন হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে বাজারে ধীরে ধীরে পতন হওয়ায় সাড়ে ৫ হাজার পয়েন্টের ওপর থাকা সূচক ৪ হাজার ৪০০ পয়েন্টের ঘরে নেমে এসেছে। এতে যে বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়েছেন, এটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। তবে আশা করা যাচ্ছে নতুন বছরে বাজার পুরোদমে ভালোর দিকে যাবে। অর্থাৎ সাম্প্রতিক নেয়া কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণেই ২০১৯ সালের বিপরীত চিত্র দেখা যেতে পারে ২০২০ সালের পুঁজিবাজারে। যেমন:


মার্চেন্ট ব্যাংক এবং তাদের এমডিদেরকেও শেয়ার ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছে বিএসইসি যা বাজারের জন্য ইতিবাচক।


পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আইসিবির মত আর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হবে ২০ সালে। যা পুঁজিবাজারে মার্কেট মেকারের ভুমিকায় কাজ করবে।


সঞ্চয় পত্র বিক্রি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করায় সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ধ্বস নেমেছে যা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক (চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসেই (জুলাই- সেপ্টেম্বর ২০১৯) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে ৮ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা যা গত ১০ বছরের মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে এই নিম্নমুখী প্রবণতা এবারই প্রথম।

শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে চীনের উদ্যোগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সিডিএসইটি নামে নতুন ইনডেক্স চালু হ হলো সোমবার।

আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ডিএসই ওয়েবসাইটের হোমপেজে ইনডেক্সটি দেখা যাবে। বর্তমানে সূচকটিতে ৪০টি কোম্পানি রয়েছে। এর ফলে বাজারে চীনের বিনিয়োগ আসবে যা বাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক।

২০২০ সাল থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলোর সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা হবে যা পরোক্ষ ভাবে বাজারের জন্য ইতিবাচক হবে , কারণ ব্যাংক গুলো যখন কম সুদে ঋণ দিবে তখন তারাও চাইবে কম সুদে ( ৪-৬ শতাংশ) আমানত সংগ্রহ করতে, তখন অনেকেই এতো কম সুদে ব্যাংকে আমানত না রেখে পুজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।

দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ডিবিএ ( ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন ) এবং বিএমবিএ ( বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক এসোসিয়েশন ) বাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে ১২ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে যা বাজারের জন্য ইতিবাচক।

শেয়ারবাজাকে বিদ্যমান সংকট থেকে বের করতে ৫ সদস্যের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করেছে অর্থমন্ত্রনালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, এনবিআর, আইসিবি, ডিএসইসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাজারকে স্থিতিশীল করতে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি সরকারকে তিন মাস পরপর পুঁজিবাজার উন্নয়নকল্পে সুপারিশ প্রদান করবে। এই কমিটি তার কাজ শুরু করলে পুঁজিবাজারে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।

ব্যাংক গুলোর প্রভিশনিং ১০০ শতাংশের যায়গায় ৫০% করা হয়েছে ফলে ব্যাংক গুলোতে তারল্য প্রবাহ বাড়বে এবং ব্যাংক গুলোর এডি রেশিও বাড়ানো হয়েছে ফলে বেসরকারী খাতে ঋণের প্রবাহ কিছুটা বাড়বে যা পরোক্ষ ভাবে পুঁজিবাজারের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক হবে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী ০২/০১/২০২০ সালে মাননীয় অর্থমন্ত্রী ডিএসই এর সাথে বাজার নিয়ে এক জরুরী বৈঠকে বসবে সেখান থেকে বাজার উন্নয়নে আরো কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।

এছাড়াও চলতি ডিসেম্বর মাসে অনেক হাউজ লোন এডজাস্ট করার জন্য বাধ্য হয়ে লসে শেয়ার সেল করে লোন এডজাস্ট করেছে । ২০২০ সালে তারা সিঙ্গেল ডিজিটে কম সুদে আরো অনেক বেশী লোন পাবে এবং সেই টাকা দিয়ে তারা আবার শেয়ার বাই করবে, ফলে বাজারে একটি বাই প্রেশার থাকবে যার কারনেও বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরবে।

বিনিয়োগকারীদের আস্থা না থাকা নিয়ন্ত্রক সংস্থার শীর্ষ পদেরও মেয়ার শেষ হবে ২০২০ সালে। ফলে পরিবর্তন অনিবার্য। যা বিনিয়োগকারীদের মনোবল বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।

সব মিলায়ে তলানীতে থাকা পুঁজিবাজারের আকাশে কালো মেঘ কেটে নতুন বছরে (২০২০ সালে) দেখা যেতে পারে আলোর ঝলকানি। আর এসব ইতিবাচক পদক্ষেপে ২০২০ সালে পুঁজিবাজার কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরবে, এমনটাই প্রত্যাশ সবার।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: