facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

পুঁজিবাজারে নতুন দিগন্ত খোলার আশা


০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বুধবার, ১০:১১  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


পুঁজিবাজারে নতুন দিগন্ত খোলার আশা

চীনের অন্যতম বৃহৎ দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ সাংহাই ও শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে পেতে চলেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), যা হলে দেশের পুঁজিবাজারে নতুন দিগন্ত খুলবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চীনের এ দুটি স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম ৯৯০ কোটি টাকায় ডিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার (প্রতিটি ২২ টাকা দরে) কিনে নেওয়ার প্রস্তাব করেছে। একইসঙ্গে ডিএসইর কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩০০ কোটিরও বেশি টাকা (৩৭ মিলিয়ন ডলার) খরচ করবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে তারা।

কৌশলগত অংশীদার পেতে তিন মাস আগে ডিএসই যে দরপত্র আহ্বান করে, তাতে সাড়া দিয়ে চীনের এই দুই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম ওই প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের সঙ্গে ভারত, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি কনসোর্টিয়ামও প্রস্তাব দিয়েছে।

তবে সাংহাই ও শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাবই আকর্ষণীয় হয়েছে বলে ডিএসইর একজন পরিচালক জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার ডিএসইর পর্ষদ সভায় ওই দর প্রস্তাবগুলো খোলা হয়।

সভায় অংশ নেওয়া ওই পরিচালক বলেন, “প্রস্তাবকারী দুটি কনসোর্টিয়ামের মধ্যে সক্ষমতা, দরের প্রতিযোগিতা সব কিছু বিবেচনা করে সাংহাই ও শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়ামকে বাছাই করা হয়েছে।”

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর পর্ষদ আবার বসবে জানিয়ে তিনি বলেন, “ওই দিনই তাদের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। এরপর তা অনুমোদনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে পাঠানো হবে।”
ডিএসইর পরিচালক বলেন, শেয়ার কিনে মালিকানায় আসার পর এ কনসোর্টিয়াম তাদের প্রতিনিধিকেও ডিএসইর পর্ষদে বসাবে।

“তখন ডিএসইর চেহারা আমূল পাল্টে যাবে।”

চীনের প্রধান তিনটি স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে সাংহাই ও শেনচেন রয়েছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে। বাজার মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের সেরা ১০টি স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাতেও রয়েছে তারা।

সাংহাই স্টক একচেঞ্জের বাজার মূলধন সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন দুই দশমিক দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

অপরদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন চার লাখ ১৩ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা।

এ দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ কৌশলগত অংশীদার হলে তা ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে বিশাল ঘটনা’ হবে বলে মনে করেন ডিএসইর সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আকারে এ দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ অনেক বড়। দেশি-বিদেশি কোম্পানি সেখানে তালিকাভুক্ত হয় এবং পৃথিবীর বড় বড় বিনিয়োগকারীরা সেখানে লেনদেন করে।

“তারা যখন মালিকানা কিনে আমাদের কৌশলগত অংশীদার হবে, তখন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আরও আস্থাশীল হয়ে উঠবে এবং তাদের অংশগ্রহণও বেড়ে যাবে। একইভাবে বেড়ে যাবে বিদেশি কোম্পানির তালিকাভুক্তিও।”

বর্তমানে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে পণ্যের বহুমূখীকরণ নেই জানিয়ে আহসানুল ইসলাম বলেন, কৌশলগত অংশীদাররা এলে বাজারে পণ্যের ভিন্নতা বাড়বে।

২০১৩ সালের ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ১৮০ কোটি শেয়ারের মধ্যে ২৫ শতাংশ কৌশলগত অংশীদারদের কাছে বিক্রি করা যাবে। ৩৫ শতাংশ বিক্রি করতে হবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। বাকী ৪০ শতাংশ থাকবে ট্রেক হোল্ডার বা মালিকদের কাছে।

উন্নত প্রযুক্তি সুবিধা, ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসা উন্নয়নে পরামর্শক সেবা পাওয়ার লক্ষ্যে কৌশলগত অংশীদার নিতে চায় ডিএসই।

দরপত্রে অংশ নেওয়া অপর কনসোর্টিয়ার্মের সদস্যরা হল- ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, ফ্রন্ট্রিয়ার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ডিএসইর এক কর্মকর্তা জানান, এই কনসোর্টিয়ামটি ডিএসইর ২৫ দশমিক ১ শতাংশ শেয়ার প্রতিটি ১৫ টাকা দরে কিনতে প্রস্তাব দেয়। কারিগরি সহায়তারও প্রস্তাব দেয়, কিন্তু কত টাকার তা স্পষ্ট করেনি।

“স্বাভাবিকভাবেই তাদের প্রস্তাব টেকেনি।”

এর আগেও একবার কৌশলগত অংশীদারের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল ডিএসই কর্তৃপক্ষ। তখন দেশি-বিদেশি কয়েকটি কোম্পানি দরপত্র জমা দিলেও ডিএসইর কাছে ওইসব প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তা বাতিল করা হয়।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: