facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল বুধবার, ২০২৪

Walton

পাঁচ সপ্তাহে শেয়ারটির দর ৩৯ টাকা থেকে ৮৫ টাকা ছাড়ায়


১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার, ১০:১৬  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


পাঁচ সপ্তাহে শেয়ারটির দর ৩৯ টাকা থেকে ৮৫ টাকা ছাড়ায়

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া দুই-তৃতীয়াংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। ব্যাংক, আর্থিক, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বস্ত্র খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর হারালেও ব্যতিক্রমী অবস্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। এ খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। প্রকৌশলসহ অন্য খাতগুলোতে ছিল মিশ্রধারা।

বাজার-সংশ্নিষ্টরা জানান, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বাজারে গত সপ্তাহে ঊর্ধ্বগতি থাকবে বলে যে প্রচারণা ছিল, তার কোনো প্রতিফলন সূচকে দেখা যায়নি। এ নিয়ে নানা গুজব ও গুঞ্জনে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ছিলেন বিভ্রান্ত।

তবে সংশ্নিষ্টরা আরও জানান, সপ্তাহের শেষ দিনে গত বৃহস্পতিবার কিছু ভালো শেয়ারের দর ও লেনদেন বৃদ্ধি বাজারের সাম্প্রতিক ধারায় বড় পরিবর্তন আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এবার আসন্ন লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুমে উৎপাদন ও সেবামুখী খাতগুলোর দিকে ঝোঁক বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের।

সার্বিক বিচারে ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৩৪০ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২২৩টি দর হারায়। বেড়েছে ১০৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১০টির দর। এতে প্রধান এই শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৩ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৫০০ পয়েন্টে নেমেছে। সূচক হ্রাসের হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

একই চিত্র দেখা গেছে দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতে। এ বাজারে লেনদেন হওয়া ২৮৬ কোম্পানির শেয়ার ও ফান্ডের মধ্যে ১৭৮টির দর কমেছে, বেড়েছে ৯৪টির ও অপরিবর্তিত ১৪টির দর। অধিকাংশ শেয়ারের দর কমার প্রভাবে এ বাজারের প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ১২৩ পয়েন্ট হারিয়ে ১০৩০৩ পয়েন্টে নেমেছে।

শেয়ারদর ও সূচকে নিম্নধারা থাকলেও শেয়ার কেনাবেচার ক্ষেত্রে দুই বাজারেই বেশ উত্থান লক্ষ্য করা গেছে। ডিএসইর লেনদেন সাড়ে ৪৭ শতাংশ বেড়ে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। অবশ্য দৈনিক গড় লেনদেন ১৮ শতাংশ বেড়ে ৯০১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। আর সিএসইর মোট লেনদেন ৮৩ শতাংশ বেড়ে ২২৮ কোটি ৮২ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। গত সপ্তাহে এ বাজারে দৈনিক গড়ে পৌনে ৪৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়, যা আগের সপ্তাহে ছিল সোয়া ৩১ কোটি টাকা।

একক কোম্পানি হিসেবে গত সপ্তাহে সর্বাধিক ৪৮ শতাংশ দর বেড়েছে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। বৃহস্পতিবার শেয়ারটির ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২২২ টাকা। যদিও সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ২০৯ টাকায়। বছরের এ সময়ে শেয়ারটির দর বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই বলে জানা গেছে। তারপরও অস্বাভাবিক এই দর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কারসাজির কথা বলছেন সংশ্নিষ্টরা।

দর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এর পরের অবস্থানে ছিল জেড ক্যাটাগরিভুক্ত বন্ধ কোম্পানি মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক্ক। শেয়ারটির দর প্রায় ৩৪ শতাংশ বেড়ে ২০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। কোম্পানিটি এখন তালিকাচুত্যির প্রক্রিয়ায় আছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে ২৮ শতাংশ বেড়ে পুনরায় ৩৫০ টাকা হয়েছে মুন্নু সিরামিকের দর। অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণে লেনদেন নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্পট মার্কেটে পাঠানো হয় এ কোম্পানিকে। তবুও এ শেয়ারের দর বৃদ্ধির ধারা থামছে না।

এর পরের অবস্থানে থাকা ইনটেক অনলাইনের বাজারদর ২৩ শতাংশ বেড়ে ৫১ টাকায়, খুলনা পাওয়ারের ২২ শতাংশ বেড়ে ১২২ টাকা, আজিজ পাইপসের দর ১৮ শতাংশ বেড়ে ১৯৩ টাকা, শাশা ডেনিমের শেয়ারদর ১৭ শতাংশ বেড়ে ৭১ টাকা, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ১৬ শতাংশ বেড়ে ১১৫ টাকা, নাহী অ্যালুমিনামের দর ১৬ শতাংশ বেড়ে ৮০ টাকা ও অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালের দর ১৫ শতাংশ বেড়ে ৪৬ টাকা ছাড়িয়েছে।

১৪ শতাংশ বেড়ে স্টাইফ ক্রাফটের দর এখন তিন হাজার ৪৩ টাকা।

এ ছাড়া গত সপ্তাহে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর ১০ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে, সেগুলো হলো- সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল, ওইম্যাক্স ইলেকট্রোড, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও ফাইন ফুডস।

এদিকে, গত সপ্তাহে সর্বাধিক পৌনে ১৭ শতাংশ দর হারিয়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স। গত আগস্টের শুরু থেকে টানা পাঁচ সপ্তাহে শেয়ারটির দর ৩৯ টাকা থেকে ৮৫ টাকা ছাড়ায়। কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই স্রেফ কারসাজির মাধ্যমে একটি ব্রোকারেজ হাউস সংঘবদ্ধভাবে শেয়ারটির দর বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ আছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শেয়ারটির দর কমছে। গত বৃহস্পতিবার শেয়ারটি সর্বশেষ ৬৬ টাকায় কেনাবেচা হয়।

দর পতনে এর পরের অবস্থানে ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন। লভ্যাংশজনিত রেকর্ড ডেটের পর এটির দর সংশোধন হয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ৩০৫ টাকায়।

হঠাৎ দর বৃদ্ধির পর বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস কোম্পানির দরও ১১ শতাংশ

কমেছে। সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ৯৬ টাকায়। এ ছাড়া মিথুন নিটিং, প্রিমিয়ার ব্যাংক, মাইডাস ফাইন্যান্সের শেয়ারদর ১০ থেকে ১১ শতাংশ কমেছে।

খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংকের ৩০ কোম্পানির মধ্যে ২৮টির দর কমেছে। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২৩ কোম্পানির মধ্যে ২০টির দর কমেছে। এ ছাড়া জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ১৯টির মধ্যে ১৪টির, বস্ত্র খাতের ৫১টির মধ্যে ৩৪টির দর কমেছে। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। এ খাতের ১৭ কোম্পানির মধ্যে ১২টিরই দর বেড়েছে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: