facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

নৈতিকতার ঘাটতিতে ব্যাংকিং খাতে আর্থিক অনিয়ম: বিআইবিএম


১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার, ০৮:৪৫  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


নৈতিকতার ঘাটতিতে ব্যাংকিং খাতে আর্থিক অনিয়ম: বিআইবিএম

ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতার ঘাটতির কারণে আর্থিক অনিয়মের ঘটনা বাড়ছে। প্রায় ৭৩ শতাংশ ব্যাংকারের ধারণা ব্যাংকিং খাতে নৈতিক ঘাটতির কারণে অনিয়মের ঘটনা বেড়েই চলেছে। আর এসব ঘটনার শাস্তি না হওয়ার কারণে দ্বিতীয় অনিয়মের ঘটে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘করর্পোরেট ইথিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইন ব্যাংকসঃ বাংলাদেশ পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক কর্মশালায় উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা.রাজী হাসান। কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক ড. শাহ মো. আহসান হাবীব। সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী।

বিআইবিএমের গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সচেতনতার অভাব, নৈতিকতা বিষয়ে উৎসাহ প্রদানের অভাব এবং ব্যাংকারদের অল্প বেতন-ভাতাও আর্থিক অনিয়ম সংঘটিত এর জন্য দায়ী। এ গবেষণা প্রতিবেদনের জন্য ২০০ জন ব্যাংকারের সাক্ষাৎকার নেয় বিআইবিএম।

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ব্যাংকিং ব্যবসা সম্পূর্ণভাবে আস্থার উপর নির্ভরশীল। আমানতকারীদের আস্থার সংকট শুরু হলে ব্যাংকিং ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়ে। সম্প্রতি একটি ব্যাংকে আমানতকারীদের মধ্যে আস্থা সংকটের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। গ্রাহকরা আমানতের অর্থ ফিরিয়ে নিতে চাইলেও ব্যাংকটি চাহিদা মতো সেই অর্থ ফিরিয়ে দিতে পারছে না। এই সংকট ব্যবস্থাপনা ব্যাংকটির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, আমদানি-রপ্তানিভিত্তিক অর্থ পাচারের অভিযোগ প্রায়ই উঠছে। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রেই এই অভিযোগটা সবচেয়ে বেশি। তবে অর্থ পাচার নিয়ে যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে তা অনেকাংশেই সত্য নয়। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের যে পরিমাণ অর্থ রাখার কথা বলা হয় তার পরিমাণ অতো বেশি হবে না।

ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং খাতে সুশাসন বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্তু আমাদের এখানকার বোর্ড সুশাসন বাস্তবায়নের পরিবর্তে ঋণ অনুমোদন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বিশ্বব্যাপী ব্যাংকের বোর্ডের মূল কাজ হলো নীতি প্রণয়ন এবং নজরদারি করা। কিন্তু বাংলাদেশে সুশাসনের সংস্কৃতির প্রচলন নেই।

সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এ চৌধুরী বলেন, মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় সবখানেই দেখা দিয়েছে। ভোগবাদী অর্থনীতির কারণে মানুষ সবকিছুই ভুলে যাচ্ছে। দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির কারণে ব্যাংকের উপর মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। ব্যাংকের উপর মানুষ এখন আর ভরসা করতে পারছে না। এর উন্নতি করতে হবে। মানুষের কষ্টের কথা শোনার জন্য আর্থিক ন্যায়পাল গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

মেঘনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আমিন বলেন, একটা ব্যাংকের স্টেকহোল্ডার হলো সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বোর্ড এবং অপরাধ চক্র। আজকের এই আয়োজনে তারা কেউ নেই। একটি বিদেশি ব্যাংকের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, মাত্র একজন ব্যক্তির অপরাধের কারণে ২০০ বছরের একটি ব্যাংক ধসে পড়েছে। ব্যাংকের আস্থা সংকট খেলাপি ঋণের চেয়েও ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ইমেজ সংকট একটি ব্যাংকের জন্য খুবই খারাপ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, পারিবারিকভাবেই নৈতিকতা শিক্ষা দিতে হবে। বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতের নৈতিকতা খুবই জরুরি। কারণ, এখানে অন্যের টাকায় ব্যবসা করা হয়। সবক্ষেত্রেই কাউকে রোল মডেল হিসেবে নিতে হবে। তবে ব্যাংক ম্যানেজার যদি অপরাধী হয় তাকে রোল মডেল বানানো যাবে না। তবে এই অপরাধীর চেয়েও বড় অপরাধী ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা। এদের শাস্তি হওয়া উচিত। পৃথিবীর সব দেশে এদের শাস্তি হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধুরী এবং আহমেদ কামাল খান চৌধুরী।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: