২১ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার, ১০:২৪ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
দরপতনে কেটেছে গত সপ্তাহের শেয়ারবাজার। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৬৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতে ৭২ শতাংশের দর কমেছে। ব্যাংক ছাড়া সব খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে। গত সপ্তাহে যেখানে ৫ শতাংশের ওপর দর বেড়েছে ২৯টি শেয়ারের, সেখানে ৫ শতাংশের ওপর দর হারিয়েছে ৪৯ কোম্পানির শেয়ার।
অধিকাংশ শেয়ারের দরপতনের কারণে বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের প্রায় ১ শতাংশ পতন হয়েছে। সূচকটি আগের সপ্তাহের তুলনায় ৫৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে ৫৩৮১ পয়েন্টে নেমেছে। শুধু সূচক নয়, শেয়ারদরের সার্বিক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে লেনদেনে। গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন সাড়ে ৩৪ শতাংশ কমে ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকায় নেমেছে। দৈনিক গড়ে ৫১০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। অন্যদিকে সিএসইর লেনদেন প্রায় ২০ শতাংশ কমে ১২৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় নেমেছে।
এমন নেতিবাচক ধারার মধ্যেও দুর্বল মৌলভিত্তির কিছু কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। `জেড` ক্যাটাগরির ৪৪ শেয়ারের মধ্যে ২০ কোম্পানির দর বেড়েছে। অন্যদিকে ২০টির দর কমেছে। বাকি চারটির দর ছিল অপরিবর্তিত। এ ক্ষেত্রে `এ` ক্যাটাগরির ২৭৪ শেয়ারের মধ্যে মাত্র ৬৭টির দর বেড়েছে। কমেছে ১৮৫টির।
এমনকি দরবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায়ও `জেড` ক্যাটাগরির শেয়ারের প্রাধান্য দেখা গেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশ তালিকায় থাকা অর্ধেকই `জেড` ক্যাটাগরির। এর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা নর্দান জুটের শেয়ারপ্রতি দর ১০৩ টাকা বা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ৫১৭ টাকায়।
দরবৃদ্ধির তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা বন্ধ কোম্পানি বিচ হ্যাচারির শেয়ারদর ২৩ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ১২ টাকা ৮০ পয়সায়। চতুর্থ অবস্থানে থাকা অপর বন্ধ কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের শেয়ারদর সোয়া ১৭ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ দর ১০ টাকা ছাড়িয়েছে। ইনফরমেশন সার্ভিসেসের বাজারদর ১৩ শতাংশ এবং মূল বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ থাকা কেঅ্যান্ডকিউর শেয়ারদর ১২ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন শুরু হওয়া ইন্দোবাংলা ফার্মার শেয়ার ছিল স্বাভাবিক কারণেই দরবৃদ্ধির শীর্ষে। আইপিওতে অভিহিত মূল্য ১০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া শেয়ারটি লেনদেনের প্রথম দিনে ৪৪ টাকার বেশিতে কেনাবেচা হয়েছে। গত সপ্তাহে দরবৃদ্ধির শীর্ষে থাকা `এ` ক্যাটাগরিভুক্ত রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, আল-হাজ্ব টেক্সটাইল, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক এবং তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের ১২ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ারদর বেড়েছে।
আমান কটন ফাইব্রস কোম্পানির শেয়ার ছিল দরপতনের শীর্ষে। গত সপ্তাহে শেয়ারটির দর সাড়ে ১২ শতাংশ কমেছে। সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ৫৩ টাকা ৭০ পয়সায়। দরপতনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা সামিট পাওয়ারের দর সাড়ে ১২ শতাংশ কমে ৪৩ টাকা ৩০ পয়সায় নেমেছে। তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দর সাড়ে ১১ শতাংশ কমেছে। সর্বশেষ কেনাবেচা হয়েছে ৪৫ টাকা ৩০ পয়সায়। দরপতনে এরপরের অবস্থানে থাকা আর্গন ডেনিমের সাড়ে ১০ শতাংশ, শাইনপুকুর সিরামিকের সোয়া ১০ শতাংশ, ইমাম বাটনের পৌনে ১০ শতাংশ, রহিম টেক্সটাইলের সাড়ে ৯ শতাংশ, স্টাইল ক্রাফটের ৯ শতাংশ, ফাইন ফুডসের প্রায় ৯ শতাংশ এবং ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের পৌনে ৯ শতাংশ দরপতন হয়েছে।
খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানির মধ্যে ১৭টির দর বেড়েছে, কমেছে পাঁচটির এবং বাকি আটটির দর ছিল অপরিবর্তিত। এর মধ্যে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের সর্বাধিক সাড়ে ১২ শতাংশ দর বেড়েছে। এ ছাড়া উত্তরা ব্যাংকের ১১ শতাংশ, যমুনা ব্যাংকের ৯ শতাংশ, এনসিসি ব্যাংকের সাড়ে ৬ শতাংশ এবং প্রাইম ব্যাংকের সাড়ে ৫ শতাংশ দর বেড়েছে। বিপরীতে ট্রাস্ট ব্যাংকের সর্বাধিক ৩ শতাংশ দর কমেছে।
ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২৩ কোম্পানির মধ্যে ১৬টির দর কমেছে, বেড়েছে ছয়টির। এ খাতের বিডি ফাইন্যান্স এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৮ শতাংশের ওপর দর বেড়েছে। এ ছাড়া সাড়ে ৬ শতাংশ দর বেড়েছে এফএএস ফাইন্যান্সের। বিপরীতে ৩ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে বিআইএফসি, পিপলস লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স এবং ইউনিয়ন ক্যাপিটাল। বীমা খাতের ৪৭ কোম্পানির মধ্যে ৩৩টির দর কমেছে, বেড়েছে ১২টির।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।