facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল বুধবার, ২০২৪

Walton

নেগেটিভ ইক্যুইটির হিসাবে লেনদেন ইস্যুতে বিএসইসিতে বৈঠক


১৩ আগস্ট ২০১৭ রবিবার, ০৯:২১  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


নেগেটিভ ইক্যুইটির হিসাবে লেনদেন ইস্যুতে বিএসইসিতে বৈঠক

পুঁজিবাজারের ঋণাত্মক মূলধনধারী (Negative Equity) বিনিয়োগ হিসাবে শেয়ার কেনা-বেচার সুযোগ আগামি ১৮ আগস্ট শেষ হচ্ছে। মার্জিন রুলসের সংশ্লিষ্ট ধারা শিথিল করে আবারও সময় বাড়ানোর জন্যে আবেদন করেছে ডিএসই, ডিবিএ ও বিএমবিএ।

রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), ডিএসই ব্রোকারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রতিনিধিরা এ আবেদন নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।

বৈঠকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমানসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা, ডিবিএ সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী ও বিএমবিএ সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমানসহ তিন সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ডিএসই, ডিবিএ ও বিএমবিএ সবাই মার্জিন রুলসের সংশ্লিষ্ট ধারা শিথিল করে আবারও ১ বছর বাড়তি সময়ের জন্য আবেদন করেছে। তাদের বৈঠকের আলোচনার বিষয়টি কমিশনকে অবহিত করার কথা জানিয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান।

বৈঠকের বিষয়ে ডিবিএ সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী অর্থসূচককে বলেন, ঋণাত্মক মূলধনধারী (Negative Equity) বিনিয়োগ হিসাবে শেয়ার কেনা-বেচার আরও ১ বছরের সুযোগ দেওয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছি। পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে আমরা এই আবেদন করেছি।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান অর্থসূচককে বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর বিএসইসি। বিএসইসির প্রত্যকটি সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে নিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ডিবিএ ও বিএমবিএ এর নের্তৃবৃন্দের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। মার্জিন রুলসের সংশ্লিষ্ট ধারার বিষয়ে আলাপ হয়েছে। এটি আমি কমিশনকে জানানো। আশা করছি কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে।

উল্লেখ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা অনুযায়ী কোনো বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ওই হিসাবে শেয়ার কেনা-বেচা বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু ২০১০ সালের ধস পরবর্তী বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েক দফা ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নতুন করে স্থগিতাদেশের জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করে। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন বৈঠকে ওই ধারাটির কার্যকারিতা ৬ মাস স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সে মেয়াদ আগামী ১৮ আগস্ট শেষ হচ্ছে।

আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো না হলে ১৯ আগস্ট থেকে ঋণাত্মক মূলধনধারী হিসাবে আর লেনদেন করা যাবে না।

উল্লেখ, মার্জিন ঋণ (Margin Loan) হচ্ছে বিশেষ ধরনের ঋণ সুবিধা। শেয়ার কেনার জন্য ব্রোকারহাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক গ্রাহককে এই ঋণ দিয়ে থাকে। বিএসইসি প্রণীত মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর আওতায় এই ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে যে সময়টি বিএসইসি বাড়িয়েছে তা শুধু ব্রোকার হাউজের জন্য প্রযোজ্য। অন্যদিকে মার্চেন্ট ব্যাংকের গ্রাহকরা সবসময় নেগেটিভ ইক্যুইটির হিসাবে লেনদেন করতে পারেন। সময় বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সাথে মার্চেন্ট ব্যাংকের কোনো সম্পর্ক নেই।

২০১০ সালের পর থেকে টানা দর পতনে অসংখ্য মার্জিন একাউন্টে বিনিয়োগকারীর মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। ওই সব একাউন্টে থাকা শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম এমন জায়গায় নেমে আসে যে, অনেক ক্ষেত্রে তা বিনিয়োগকারীর নিজস্ব মূলধনের পরিমাণ কমে যায়। আইন অনুসারে এমন একাউন্টে লেনদেন নিষিদ্ধ।

১৯৯৯ সালের মার্জিন রুলসের ৩(৫) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান তার কাছে নতুন করে মার্জিন চাইবে। এই মার্জিনের পরিমাণ এমন হবে যাতে তার ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের উপরে থাকে। নোটিশ দেওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে পর্যাপ্ত মার্জিন জমা দেওয়া না হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে নতুন কোনো লেনদেনের অনুমতি দিতে পারবে না ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান।

এর আগে প্রতিবার মার্জিন রুলসের ৩(৫) উপ-ধারা পুরোটা স্থগিত করা হলেও সর্বশেষ ৬ মাসে তা আংশিক স্থগিত করা হয়েছে। উপ-ধারার একটি অংশ স্থগিত না করায় নেগেটিভ ইক্যুইটির গ্রাহকদের কাছে নতুন করে মার্জিন (টাকা) চাইতে হবে সংশ্লিষ্ট ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে। উপ-ধারার ওই অংশে বলা হয়েছে-

Whenever the equity in a client’s margin account falls below 150% of the debit balance, the member shall request the client to provide additional margin to bring the equity to not less than

150% Such additional margin must be satisfied by deposit of cash or marginable securities within three days from date of notice.

আইনের এ ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করেই কয়েক দফায় নেগেটিভ ইক্যুইটির হিসাবে লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হয়।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: