facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

নিরপরাধ নিরবের ফাঁসি কার্যকর!


১৭ মার্চ ২০১৭ শুক্রবার, ০৬:০৭  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


নিরপরাধ নিরবের ফাঁসি কার্যকর!

একটি খুন হয়েছে। খুনের জন্য দায়ী করা হয়েছে চিত্রনায়ক নিরবকে। যদিও নিরব ছিল পুরোপুরি নিরপরাধ। কিন্তু তার প্রতি প্রেমিকার অবহেলা মেনে নিতে পারছিলেন না নিরব। অনেকটা বাধ্য হয়েই অন্যের অপরাধ নিজের ঘাড়ে তুলে নিলেন। আসলে তুলে নেননি। তথ্য প্রমাণ তার ঘাড়ে অপরাধ চাপিয়ে দিয়েছে।

আইন অন্ধ। চলে তার নিজস্ব গতিতে। খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। শেষ ইচ্ছে ছিল প্রেমিকার হাতের রান্না খাওয়ার। সেটিও আর পূরণ হল না তার। সময় ফুরিয়ে যায়। ফাঁসির দিন ঘনিয়ে আসে। জল্লাদরা তাকে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। চোখের জল বিসর্জন দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না নিরবের। নীরবেই মেনে নিয়েছেন অকাল মৃত্যুর শাস্তি।

ঠিক এমনই দৃশ্যের শুটিংয়ের মধ্য দিয়ে এফডিসিতে শুরু হল ‘হৃদয় জুড়ে’ ছবির শুটিং। ছবিটি পরিচালনা করছেন রফিক শিকদার। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য কলকাতা থেকে এসেছেন চিত্রনায়িকা প্রিয়াঙ্কা সরকার। তিনি এদিন শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন।

শুরু হল ফাঁসির দৃশ্য ধারণ করার প্রস্তুতি। গোসল করিয়ে তওবা পড়ালেন ইমাম। ধীরে ধীরে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যায় নিরব। ফাঁসির মঞ্চে তাকে তুলে যমটুপি পরিয়ে দিল জল্লাদ। জেলারের লাল রুমাল পরার সঙ্গে সঙ্গেই লিভারে টান দিল জল্লাদ। মুহূর্তে দু’পাশের কাঠ সরে গিয়ে নিরবের দেহ ঝুলতে লাগল অন্ধকার কূপে। কিছুক্ষণ পর মৃতদেহ তোলা হল। ততক্ষণে দৃশ্যপট পাল্টে গেছে।

ওদিকে জেলের বাইরে বিয়ের আসর থেকে ছুটে আসছেন প্রিয়াঙ্কা। যার জন্য নিরপরাধ হয়েও মৃত্যুকে বরণ করে নিলেন নিরব। শেষ মুহূর্তে এসে প্রিয়াঙ্কা জানতে পারলেন নিরব ছিল নিরপরাধ। তাকে সাজানো মামলায় ফাঁসি দেয়া হয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে আর কিছুই করার ছিল না। এ দৃশ্যটির শুটিং এখনও সম্পন্ন করা না হলেও পরিচালক জানালেন, ছবির শেষ দৃশ্যে ঠিক এমনই দেখা যাবে। কিন্তু এখানেই লাগে খটকা। যদি নিরপরাধাই হয় তাহলে কেন ফাঁসি কার্যকর করা হল? দেশীয় আইনে নিরপরাধ ব্যক্তির ফাঁসি হয়েছে এমন কোনো রেকর্ড নেই। কিংবা থাকার কথাও নয়। কারণ, তদন্ত কর্মকর্তাদের যৌক্তিক তদন্ত এবং উকিলের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের পর আদালত ফাঁসির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত ও সরকারের নির্বাহী আদেশের পর সেই ফাঁসি কার্যকর হয়। এটাই নিয়ম। এটাই বাস্তবতা। তাহলে কেন ছবিতে তদন্ত কর্মকর্তাদের দুর্বলতা দেখানো হচ্ছে?

এমন প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক বলেন, ‘আইন অন্ধ। চলে তার নিজস্ব গতিতে। তদন্ত কর্মকর্তারা নিরবের বিরুদ্ধে খুনের যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছেন। এমনকি খুনের আলামতে ডিএনএ টেস্টেও তার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। তাই বিচারক ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।’ কিন্তু গল্পে পরবর্তীতে অপরাধীর স্বীকারোক্তির পর কী বোঝা যায় না যে, তদন্তে যথেষ্ট গাফিলতি ছিল?

এ প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তারা গাফিলতি করেননি। ছবির গল্পে তারা খুনের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ দাখিল করেছেন। যা ফাঁসির রায় দেয়ার জন্য যথোপযুক্ত। তাই বিচারক ফাঁসির রায় দিয়েছেন এবং সেই ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।’

পরিচালকের গল্পের বর্ণনা অনুযায়ী দেশীয় আইনে তদন্ত কর্মকর্তাদের অবহেলার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠলেও ছবিতে ফাঁসি কার্যকর হয়ে যাওয়া নিরবের প্রতি প্রেমিকা প্রিয়াঙ্কার অবহেলা মেনে নেবেন কিনা দর্শক, সেটাই এখন দেখার বিষয়। এফডিসির শুটিংয়ের পর ঢাকার বাইরে ছবিটির বাকি অংশের দৃশ্য ধারণ করা হবে বলে পরিচালক জানিয়েছেন।   

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: