facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

নিউইয়র্কে ২০১৮ সালের প্রথম শিশু বাংলাদেশি


০৬ জানুয়ারি ২০১৮ শনিবার, ০৮:৫২  পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেয়ার বিজনেস24.কম


নিউইয়র্কে ২০১৮ সালের প্রথম শিশু বাংলাদেশি

২০১৮ সালে নিউইয়র্ক শহরের প্রথম শিশু হিসেবে ভূমিষ্ঠ হলো বাংলাদেশি দম্পতির সন্তান। কুইন্সের ফ্লাশিং হাসপাতালে ২০১৮ সালের প্রথম ক্ষণেই (১২টা ১ মিনিটে) তানিয়া শিরিনের কোলজুড়ে আসে তাঁর প্রথম সন্তান।

ইমরান নাজির ও তানিয়া শিরিন থাকেন জ্যামাইকায়। প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়ে এমনিতেই আনন্দে উদ্বেল তানিয়া। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিউইয়র্ক শহরে নতুন বছরের প্রথম শিশুর মা–বাবা হওয়ার বাড়তি গৌরব। সদ্যোজাত সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তাই মা তানিয়ার কাছে এখন তাঁর ৩৬ ঘণ্টার তীব্র প্রসববেদনা শুধু অতীত। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে এই দম্পতি এখন নতুন স্বপ্নের জাল বুনছে।

শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিউইয়র্ক শহরের এ বছরের প্রথম শিশুটি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তার নাম রাখা হয়েছে কাজী আরিয়ানা শিরিন। চার পাউন্ড ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া এই শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ। শিশুটির উচ্চতা ১৮ ইঞ্চি।

প্রথম মা হওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে ২৫ বছর বয়সী তানিয়া নিউইয়র্ক ডেইলিকে বলেন, ‘আমাদের নিউ ইয়ার বেবিকে নিয়ে আমরা ভীষণ আনন্দিত। সে আমার প্রথম সন্তান। আর এই শহরের এই বছরের প্রথম শিশু। এটা বিশেষ কিছু।’

ইমরান নাজির আমেরিকায় আছেন ২০১০ সাল থেকে। পেশায় ক্যাব চালক। আর তানিয়া শিরিন আমেরিকায় এসেছেন গত এপ্রিলে। নিজের বাবা হওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বললেন স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণার কথাই। তিনি বলেন, ‘ভয়ানক ব্যথা হচ্ছিল তার। একবার সে চেতনাহীন হয়ে পড়ে। সে বলছিল, আর সহ্য হচ্ছে না। মনে হয় মরে যাব। ক্ষমা করো, যদি মরে যাই। আর আমি ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম।’

অবশ্য ভয় পাওয়ারই কথা। শেষ কয়েক সপ্তাহ এই দম্পতির জন্য মোটেই সহজ ছিল না। চিকিৎসক বলেছিলেন, মায়ের ওজন বাড়লেও শিশুর বাড়ছে না। অর্থাৎ মায়ের কাছ থেকে পুষ্টি নিচ্ছে না শিশুটি। ফলে চিকিৎসক তাঁদেরকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। এমনকি সন্তান জন্মদানের জন্য অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন চিকিৎসক। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত দিনের ১০ দিন আগে হলেও আরিয়ানার জন্ম হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই।

শেষের কয়েকটি মুহূর্ত সম্পর্কে ইমরান নাজির বলেন, ‘বিস্ময়করভাবে সে (তানিয়া) সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করে। তখন ১১টা ৪০–এর মতো হবে। চিকিৎসকেরা তখনই বলেছিলেন, এই শিশু নতুন বছরের প্রথম শিশু হতে যাচ্ছে হয়তো। আমরাও ভীষণ উত্তেজনা বোধ করতে থাকি। কারণ এটা বিশেষ কিছু।’

ফ্লাশিং হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. অ্যান্ড্রু রুবিন বলেন, ‘মা ও শিশু উভয়েই সুস্থ আছে। বছরের প্রথম শিশুর জন্ম দিতে পেরে এই হাসপাতাল সম্মানিত বোধ করছে। শিশুটি জন্ম নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো হাসপাতাল উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানানো হয় পৃথিবীতে।’

পুরো হাসপাতালের সব কর্মকর্তা–কর্মচারী এবং অন্য সব মানুষের উচ্ছ্বাস ও শুভেচ্ছা এ দিন ছিল শুধু তানিয়া–নাজির দম্পতি ও তাঁদের প্রথম সন্তান আরিয়ানার উদ্দেশেই। বিষয়টি গভীরভাবে রেখাপাত করেছে এই দম্পতির মনে। সব নার্স ও চিকিৎসকের সহায়তা এবং তাঁদের ঘিরে এই উৎসব তাঁদের চোখে নিয়ে এসেছে আনন্দাশ্রু। নাজির বলেন, ‘তার জন্ম মুহূর্তে আমি শুধু কাঁদছিলাম। আমাদের ঘিরে এত উচ্ছ্বাসের বিপরীতে আমি আর কী করতে পারতাম!’

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: