facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪

Walton

দেড়মাসে ড্রাগন সোয়েটারের ১৮৫% দরবৃদ্ধি, তদন্তে বিএসইসি


১৪ আগস্ট ২০১৮ মঙ্গলবার, ০৯:৩৭  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


দেড়মাসে ড্রাগন সোয়েটারের ১৮৫% দরবৃদ্ধি, তদন্তে বিএসইসি

কোনো কারণ ছাড়াই সম্প্রতি অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং লিমিটেডের। গত ১৮ জুন যে শেয়ারের দাম ছিল ১৭ টাকা ৭০ পয়সা, ৫ আগস্ট তা ৫০ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়। এ হিসেবে দেড় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩২ টাকা ৬০ পয়সা বা ১৮৫ শতাংশ।

শেয়ারটি নিয়ে কারসাজির সন্দেহ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৬ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ার হাতবদল হয়েছিল ২২ টাকা ৭০ পয়সায়। চলতি বছরের জুনের ১৮ তারিখ পর্যন্ত তা ১৭ থেকে ২২ টাকায় হাতবদল হয়েছিল। এরপর হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই শেয়ারটির দর বাড়তে থাকে। গত ৫ আগস্ট তা ৫০ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়। সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৩৯ টাকা ২০ পয়সায়।

দর বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে গত দেড় মাসে কোম্পানিটিকে তিন দফায় কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়। প্রতিবারই ড্রাগন সোয়েটার কর্তৃপক্ষ জানায়, দর বৃদ্ধির কোনো কারণ তাদের জানা নেই। তারপরও কোম্পানিটির শেয়ারদর সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এমন দাম বৃদ্ধির পেছনে কোম্পানির লোকজনও জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ জন্য গত দুই মাস ধরেই কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ধারণ কমে যাচ্ছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য বলছে, গত বছরের জুন মাসে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৪০ দশমিক ১১ শতাংশ থাকলেও চলতি বছরের জুন শেষে তা নেমে আসে ৩৭ দশমিক ৮২ শতাংশে। বাকি শেয়ারের মধ্যে বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ৩০ দশমিক ৪০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ৩১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

কোম্পানির জবাবে ডিএসই সন্তুষ্ট হতে না পেরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলে। ডিএসইর দায়িত্বশীল পর্যায়ের এক সূত্র জানিয়েছে, গুটিকয়েক ব্যক্তি ড্রাগন সোয়েটারের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে। চক্রটি কৃত্রিমভাবে শেয়ারটির দর বাড়িয়েছে। যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিকর। এ জন্য বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা দরকার।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী তৃতীয় প্রান্তিকে এসে কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে। প্রথম দুই প্রান্তিতে ১৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার মুনাফা করলেও সর্বশেষ প্রান্তিকে ২৩ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু ঘোষণা দিয়েও যথাসময়ে মেশিনারিজ ক্রয়ে অসমর্থ্য, আইপিওর অর্থ খরচ করতে না পারা ও অর্থ খরচের হিসাব দিতে না পারায় গত জানুয়ারিতে কোম্পানির ছয় পরিচালককে মোট ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।

বস্ত্র খাতের কোম্পানি হিসেবে ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ড্রাগন সোয়েটার। কোম্পানিটির মোট শেয়ার ১৩ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১৩২ কোটি ২৫ লাখ ও অনুমোদিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকা। সর্বশেষ হিসাববছরে কর-পরবর্তী ড্রাগন সোয়েটারের লভ্যাংশ হয়েছিল ১৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ২৭ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) ১৫ টাকা ৯৪ পয়সা।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: