১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার, ১০:৫৫ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ারবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সার্বিক লেনদেনে ছিল মিশ্রধারা। তবে বীমা এবং বস্ত্র খাতে তেজিভাব ছিল। অন্য সব খাতের যেখানে ৩২ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে এবং কমেছে ৫৪ শতাংশের। সেখানে ওই দুই খাতের ৮০ শতাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে মাত্র ১৪ শতাংশের।
শুধু সার্বিক শেয়ারদরে নয়, বাজার সূচকেও গতকাল বৃহস্পতিবার বীমা ও বস্ত্র খাতের অবদান ছিল সর্বাধিক। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্য খাতগুলোর কারণে যেখানে প্রধান সূচক ১২ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট খুঁইয়েছে, সেখানে এ দুই খাতের কারণে সূচক বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট। এতে সঠিকভাবে সূচকটি ১ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে স্থির হয়েছে। বুধবারের তুলনায় ডিএসইর লেনদেন প্রায় ২২০ কোটি টাকা বেড়ে ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা হয়েছে। এর মধ্যে বীমা ও বস্ত্র খাতের কারণেই বেড়েছে ১৬৯ কোটি টাকা।
গতকালের ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বীমা খাতের ৪৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৫টিরই দর বেড়েছে। বাকি দুটির দর কমলেও গড়ে খাতটির সার্বিক শেয়ারদর বেড়েছে ৪ শতাংশ। গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ১৯ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টিই ছিল বীমার। এ ছাড়া দরবৃদ্ধির শীর্ষ ৫০ কোম্পানির ৩১টিই ছিল এ খাতের। তাছাড়া বস্ত্র খাতের ৫৩ কোম্পানির মধ্যে ৩৫টির বাজারদর বেড়েছে, কমেছে ১২টির।
সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হওয়া বীমা খাতের শেয়ারগুলো হলো- বাংলাদেশ জেনারেল, সিটি জেনারেল, কন্টিনেন্টাল, ইস্টার্ন, গ্লোবাল, কর্ণফুলী, মার্কেন্টাইল, নর্দার্ন, প্যারামাউন্ট, পিপলস, পূরবী জেনারেল, রিপাবলিক, ফেডারেল, জনতা, প্রাইম, প্রাইম লাইফ, রূপালী এবং সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে বস্ত্র খাতের একমাত্র কোম্পানিটি হলো আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।
এদিকে তালিকাচ্যুতির নীতিগত সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর গতকালও ইমাম বাটন, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, মেঘনা পিইটি এবং মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক্কের শেয়ার লেনদেনের প্রায় পুরো সময় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ক্রেতাশূন্য ছিল। কেনাবেচা হয়েছে সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে। এর বাইরে লেনদেনের কিছু অংশে দুলামিয়া কটন এবং সমতা লেদারের শেয়ার এ দরে কেনাবেচা হয়।
সার্বিক হিসাবে গতকাল ডিএসইতে ১৬০ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৪৮ টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টির দর। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতে ১৩৪ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারদর বেড়েছে, কমেছে ১০৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৮টির দর।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ৭টি ব্যাংকের দর বৃদ্ধির বিপরীতে ১২টির কমেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের দুটির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ২০টির, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ৭টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ১২টির এবং প্রকৌশল খাতের ১২টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ২০টির দর কমেছে। এ ছাড়া ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২৮ কোম্পানির মধ্যে ১০টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ২০টির দর। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের চারটির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১৩টির। সিমেন্ট খাতের তিনটির দর বেড়েছে, কমেছে চারটির। সিরামিক খাতের পাঁচ কোম্পানির সবগুলোর বাজারদর কমেছে। তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের চার কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে পাঁচটির। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের তিনটির দর বেড়েছে, কমেছে দুটির এবং অপরিবর্তিত ছিল বাকি একটির দর। বিবিধ খাতের ১৩ শেয়ারের মধ্যে আটটির দর বেড়েছে, কমেছে চারটির। সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হওয়া ৬ কোম্পানির বাইরে দরপতনের শীর্ষে ছিল এমারেল্ড অয়েল। শেয়ারটির দর সাড়ে ৭ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া বিচ হ্যাচারি, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, জেনেক্স ইনফোসিস, অলটেক্স, বিআইএফসি, ইনফরমেশন সার্ভিসেস এবং ফার্স্ট ফাইন্যান্সের শেয়ারদর ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। গতকাল সর্বাধিক ৭৫ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে ফরচুন সুজের।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।