facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে ১৬ কোম্পানি


২২ জুলাই ২০১৮ রবিবার, ১০:৪৫  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে ১৬ কোম্পানি

সম্প্রতি রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইংয়ের তালিকাচ্যুতির পর আরও কোম্পানি তালিকাচ্যুতি নিয়ে গুঞ্জন চলছে পুঁজিবাজারে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরও প্রায় দুই ডজন কোম্পানি ডিএসই থেকে তালিকাচ্যুত হওয়ার পর্যায়ে আছে। এ নিয়ে শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন হাজারো বিনিয়োগকারী।

সূত্রমতে, বর্তমানে তালিকাভুক্ত অন্তত ১৬ কোম্পানির উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ আছে। আংশিক ব্যবসায়িক কার্যক্রমে আছে আরও কয়েকটি। আর গত পাঁচ বছরে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়নি এমন কোম্পানি অন্তত সাতটি। আবার উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু থাকলেও অন্তত পাঁচ বছর লভ্যাংশ দেয় না এমন কোম্পানি আছে আরও সাতটি। গত চার বছরের মতো এ বছরও লভ্যাংশ না দিলে এমন কোম্পানি সংখ্যা ১১ ছাড়াবে।

তালিকাভুক্তি প্রবিধান (লিস্টিং রেগুলেশনস) অনুযায়ী, কোনো কোম্পানির উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম অন্তত তিন বছর বন্ধ থাকলে কিংবা টানা পাঁচ বছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দিলে, সেগুলোকে তালিকাচ্যুত করতে পারে স্টক এক্সচেঞ্জ। অবশ্য তালিকাভুক্তির পাঁচ বছর অতিক্রান্ত না হলে তালিকাচ্যুত করা যায় না।

যেসব কোম্পানির উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ আছে বলে জানা গেছে, সেগুলো হলো- লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, বিচ্‌ হ্যাচারি, বিডি ওয়েল্ডিং, সিএনএ টেক্সটাইল, দুলামিয়া কটন, এমারেল্ড অয়েল, গোল্ডেন সন, জুট স্পিনার্স, কেএন্ডকিউ, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক্ক, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং, সমতা লেদার, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সোনারগাঁও টেক্সটাইল ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। এ ছাড়া আংশিক ব্যবসায়িক বা উৎপাদন কার্যক্রমে আছে বিডি অটোকার, বিডি সার্ভিসেস, ঢাকা ডাইং, ইমাম বাটন ও মেট্রো স্পিনিংয়ের।

আর গত পাঁচ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানিগুলো হলো- বেক্সিমকো সিনথেটিক্স, দুলামিয়া কটন, ইমাম বাটন, ইনফরমেশন সার্ভিসেস, জুট স্পিনার্স, কেএন্ডকিউ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক্ক, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সমতা লেদার, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, শ্যামপুর সুগার মিলস, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, শাইনপুকুর সিরামিক্স ও ঝিলবাংলা সুগার মিলস।

তবে শিগগির আরও কোম্পানি তালিকাচ্যুতির বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে রাজি হননি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্মকর্তারা। সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, বছরের পর বছর যেসব কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ আছে বা লভ্যাংশ দিচ্ছে না, সেগুলোকে `জঞ্জাল` হিসেবেই দেখছেন তারা। পুঁজিবাজারেকে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে `জঞ্জালমুক্ত` কার্যক্রম শুরুর কথা বলেছেন তারা।

তালিকাচ্যুতির তালিকায় আরও কোম্পানি থাকার শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বিনিয়োগের বদলে যারা জুয়া খেলতে চান শঙ্কাটা তাদের, প্রকৃত বিনিয়োগকারীদের নয়। গত বৃহস্পতিবারের লেনদেনই তার প্রমাণ।

তিনি বলেন, ব্যবসায় নেই বা লভ্যাংশ দিচ্ছে না এমন কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে রাখার অর্থ হচ্ছে নতুন বিনিয়োগকারীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা। এর অবসান হওয়া প্রয়োজন। দেরিতে হলেও ডিএসই এ প্রতারণা থেকে বের হতে কাজ শুরু করেছে।

মিনহাজ মান্নান আরও বলেন, `প্রতিবেশী দেশগুলো এমনকি পাকিস্তানের শেয়ারবাজার যতটা বিদেশি বিনিয়োগ পায়, তার সামান্যও আমরা পাই না। আবার দেশের মধ্যে অন্তত এক কোটি মানুষের বাজারে বিনিয়োগের ক্ষমতা আছে। কিন্তু প্রকৃত বিনিয়োগকারীর ১৫ লাখের বেশি নয়। এর কারণ আস্থাহীনতা।` তিনি আরও বলেন, এখানে খারাপ শেয়ারও কেনাবেচা হয়। যে বাজারে মরা গরুর মাংস বিক্রি হয়, সে বাজারে প্রকৃত ক্রেতা যান না। শেয়ারবাজারও তেমনই। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তা অব্যাহত থাকলে শেয়ারবাজারকে জঞ্জালমুক্ত করতে সময় লাগবে না বলে জানান তিনি।

ডিএসইর পদক্ষেপটি সময়োপযোগী আখ্যায়িত করে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, এতে `কুইক মুনাফা` সন্ধানী বিনিয়োগকারীরা সাময়িক ক্ষতির শিকার হলেও ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকেও সতর্ক হবেন। আবার কোনো বন্ধ বা লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানির মালিকরাও সতর্ক হবেন।

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: