facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর


১৭ জানুয়ারি ২০১৭ মঙ্গলবার, ১১:০০  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়েছে। গত বছরের নভেম্বরে প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা এর আগের মাসে (অক্টোবর) ছিল ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় ৭ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে অক্টোবরে। সে সময় ৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ থেকে নেমে আসে ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশে। তবে নভেম্বরে আবার একটু বেড়ে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এর এ মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১০০ টাকা তহবিল ব্যবস্থাপনায় গড়ে ৭ টাকা ৯৫ পয়সা ব্যয় করেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গড় তহবিল ব্যয়ের পাশাপাশি সমন্বিত তহবিল ব্যয় নিম্নমুখী রয়েছে। নভেম্বর শেষে সমন্বিত তহবিল ব্যয় কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ, যা অক্টোবর মাসে ছিল ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক সুদহার ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৩ সালের নভেম্বরে ভিত্তিহার পদ্ধতি নামে একটি তদারকি পদ্ধতি চালু করে। যার মূল উপাদান হচ্ছে তহবিল ব্যয়সূচক। সাধারণ ও সমন্বিত দুই পদ্ধতিতে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় হিসাব করা হয়। এ খাতে তহবিল ব্যয় বলতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদভিত্তিক প্রাপ্ত সব তহবিল সংগ্রহের ব্যয়কে বোঝায়। আর সমন্বিত তহবিল ব্যয় হচ্ছে, স্বল্প ব্যয়ে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে গঠিত প্রকল্প তহবিল ছাড়া অন্যান্য সুদভিত্তিক প্রাপ্ত তহবিল সংগ্রহের ব্যয়। তহবিল ব্যয়সূচক হিসাবের ক্ষেত্রে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব নন-ইক্যুইটি তহবিলের দায় বিবেচনায় নেওয়া হয়ে থাকে। তহবিল ব্যয়সূচক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পণ্য তথা ঋণের সুদহার নির্ধারণের একটি সূচক। যার মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহারের নির্ধারিত সীমা জানা যায়। তহবিল ব্যয় কমলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদের হার কমবে এবং তহবিল ব্যয় বাড়লেও সুদের হারও বেড়ে যাবে। এর মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা বজায় রাখা যায়। তবে বিভিন্ন কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তহবিল ব্যয় কমতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে বাজারে সুদের হারের ওঠানামা, তহবিল সংগ্রের উৎসে সুদের হার পরিবর্তন, সংযুক্তি ও অধিগ্রহণ কার্যক্রম, হিসাবপদ্ধতির পরিবর্তন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা।

বর্তমানে ব্যাংকবহির্ভূত ৩৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্যাংকবহির্ভূত এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আগে ব্যবসার মূল ভরসা ছিল ব্যাংক আমানত। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নমনীয় নীতির কারণে তারা এখন জনসাধারণ থেকে তিন মাসমেয়াদি আমানতও সংগ্রহ করতে পারছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে ব্যাংকনির্ভরতা কমিয়ে জনসাধারণ থেকে আমানত সংগ্রহে জোর দেওয়ায় এ খাতে সার্বিক তহবিল ব্যয় কমছে। পাশাপাশি বিনিয়োগ গতিশীল না হওয়ায় তারা ব্যাংকগুলো থেকেও তুলনামূলক কম সুদের তহবিল সংগ্রহ করতে পারছে।

জানা গেছে, কম সুদে তহবিল মিললেও বিনিয়োগ চাহিদার অভাবে বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় বাড়ছে না। আবার বিদ্যমান অফিস ব্যয়, বেতন ভাতাদিসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় কমছে না। এতে ভিত্তি হারও সেভাবে কমছে না। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান ঋণের ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি সুদারোপ করছে। বর্তমানে তারা গ্রাহক পর্যায়ে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছে।

জানা গেছে, এ খাতে তহবিল ব্যয় সূচক চালুর পর থেকেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গড় তহবিল ব্যয় কমে আসতে থাকে। এ তহবিল যখন চালু করা হয় ওই সময় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গড় তহবিল ব্যয় ১২ শতাংশের ওপরে ছিল। তবে প্রথমবারের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গড় তহবিল ব্যয় সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসে ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে। এরপর গেল বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত তহবিল ব্যয় সিঙ্গেল ডিজিটের নিচেই ছিল। কিন্তু ফেব্রয়ারি মাসে তাদের গড় তহবিল ব্যয় ফের ডাবল ডিজিট অতিক্রম করে। পরের মাস মার্চেই তহবিল ব্যয় আবার সিঙ্গেল

ডিজিটে নেমে আসে। এর পর থেকে গড় তহবিল ব্যয় সিঙ্গেল ডিজিটের নিচেই রয়েছে।

এদিকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথমবার ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠাগুলোর সমন্বিত তহবিল ব্যয় সিঙ্গেল ডিজিটের নিচে নামে। ওই মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত তহবিল ব্যয় ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তবে ২০১৫ সালের মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত তহবিল ব্যয় ১০ শতাংশের ওপরে ছিল।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: