০১ জুন ২০১৯ শনিবার, ০২:২৪ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
কপারটেকের আইপিও অনুমোদন দেওয়ার আগে ডিএসই প্রাথমিক রিভিউতে কোম্পানির প্রসপেক্টাসের বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে কিছু অসংগতি পায়। কোম্পানিটির আর্থিক বিবরণীতে কিছু অসত্য তথ্য উঠে এসেছে। এ সংগতির কারণে ডিএসই কোম্পানিটি বাজারে অন্তর্ভুক্ত করতে অনীহা প্রকাশ করে। কিন্তু সিএসই কোম্পানিটিকে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে। একই আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে এক প্রতিষ্ঠান সন্দেহ প্রকাশ করেছে আবার অন্য প্রতিষ্ঠান ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে-দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতা কাজ করছে। এটি বাজারের জন্য উদ্বেগের।
সম্প্রতি এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও আইসিএবির কাউন্সিল মেম্বার মাহমুদ হোসেন, এফসিএ এবং আমার স্টক ডট কমের সিইও মো. আলী জাহাঙ্গীর।
মাহমুদ হোসেন বলেন, কপারটেকের আইপিওতে বিএসইসি অনুমোদন দেওয়ার পর ডিএসই প্রাথমিক রিভিউতে কোম্পানির প্রসপেক্টাসের বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে কিছু অসংগতি পায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির আর্থিক বিবরণীতে কিছু অসত্য তথ্য উঠে এসেছে। এ সংগতির কারণে ডিএসই মনে করছে কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য নয়। এতে কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক চিত্র প্রতিফলিত হয়নি। তাই ডিএসই কোম্পানিটি বাজারে অন্তর্ভুক্ত করতে অনীহা প্রকাশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই গত ২৪ তারিখে কোম্পানিটি সম্পর্কে এক সভা করে বিএসইসির কাছে নির্দেশনা চায় কোম্পানিটির অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে। কিন্তু ইতোমধ্যে সিএসই কোম্পানিটিকে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে। সিএসইর পরিচালনা পর্ষদ থেকে জানানো হয় কোম্পানিটির প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে কোনো অনিয়ম, অসংগতি বা অসত্য তথ্য পাওয়া যায়নি। একদিকে ডিএসইর এটি অন্তর্ভুক্ত করতে অনীহা, অন্যদিকে সিএসই অন্তর্ভুক্ত করেছে। দুই স্টক এক্সচেঞ্জ দুই ধরনের সিদ্ধান্ত নিল। এ বিষয়টি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে উদ্বেগের। কারণ একই আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে এক প্রতিষ্ঠান সন্দেহ প্রকাশ করেছে আবার অন্য প্রতিষ্ঠান সেটি ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতা কাজ করছে। যেখানে কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কথা তুলে ধরা হচ্ছে, সেখানে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ একমত হতে পারল না। এটি বাজারের জন্য হতাশার বিষয়।
তিনি আরও বলেন, বড় হতাশার বিষয় হচ্ছে-গত কয়েক বছরে যেসব কোম্পানি প্রাথমিক অবস্থায় যে দামে বাজারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, ওইসব কোম্পানির শেয়ারের দর এখন অনেক কমে কেনাবেচা হচ্ছে। এই হচ্ছে বাজারের অবস্থা। এখন বাজারের এ অবস্থায় বিএসইসি, ডিএসই, এফআরসির জন্য কোম্পানিগুলো বাজারে আসার আগে ভালো করে যাচাই-বাছাই না করে অন্তর্ভুক্ত করা ঠিক হবে না। আবার বিশ্বের পুঁজিবাজার সংগঠন দেশের পুঁজিবাজারকে এ ক্যাটেগরিতে উন্নীত করেছে। কিন্ত বাজারে সেই মান বজায় থাকছে না। শুধু পুঁজিবাজার নয় দেশের সব নিয়ন্ত্রক সংস্থার ক্ষেত্রে এটি দেখা যাচ্ছে, এটাই হতাশার বিষয়।
মো. আলী জাহাঙ্গীর বলেন, আসলে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ একইভাবে কাজ করতে হবে তা কিন্তু নয়। তাহলে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কারণ একটি দেশে অনেক স্টক এক্সচেঞ্জ থাকে, তারা কোনো কোম্পানি বাজারে অন্তর্ভুক্ত করবে সেটি তাদের ব্যাপার। এখন কথা হচ্ছে সিএসই কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে কোনো অসংগতি পায়নি বলেই তারা কোম্পানিটি অন্তর্ভুক্ত করেছে। এখন সময় বলে দিবে কপারটেক কোম্পানিটি অন্তর্ভুক্তর ক্ষেত্রে সিএসই ঠিক করেছে কি না।
তিনি আরও বলেন, গত ১০ বছরে আইপিওর মাধ্যমে যেসব কোম্পানি বাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, ওইসব কোম্পানির মধ্যে প্রায় ২০টি বা তার চেয়ে বেশি কোম্পানির শেয়ারের দর ফেস ভ্যালুর নিচে রয়েছে। কথা হচ্ছে কেনো ওইসব কোম্পানির শেয়ারের দর ফেসভ্যালুর নিচে বা কী কারণে ফেইজ ভেলুর নিচে রয়েছে সেটাই ভাবার বিষয়।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।