facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

জয়ের জন্য চাই ৩৩ রান


২৩ অক্টোবর ২০১৬ রবিবার, ০৬:১৩  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


জয়ের জন্য চাই ৩৩ রান

প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৫৩ রান। জয়ের জন্য শেষ দিন বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩৩ রান। বাংলাদেশের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন সাব্বির রহমান ও তাইজুল ইসলাম।

সোমবার পঞ্চম দিন সাব্বির ৫৯ ও তাইজুল ১১ রানে ব্যাট করতে নামবেন। ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে শেষ বিকেলে অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেটে ১৫ রানের জুটি গড়েন তারা।

স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন কামরুল ইসলাম রাব্বি (৩ বলে শূন্য)। ২৩৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বিপদে পরে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য তখন দরকার ৪৮ রান।

বল হাতে আলো ছড়ানো মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ দ্বিতীয় ইনিংসেও। স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে এ তরুণ ৯ বলে করেন ১ রান। সাব্বির রহমানের ইশারায় রিভিউ নেন তিনি তবে কাজ হয়নি। ২৩৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। তখন দরকার আরও ৫২ রান।

টেস্ট অভিষেকে অর্ধশতক পেলেন সাব্বির রহমান। গ্যারেথ ব্যাটির বলে চার হাঁকিয়ে ৭৬ বলে অর্ধশতকে পৌঁছান তিনি। ৭০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৩৪/৬। জয়ের জন্য আরও ৫২ রান দরকার স্বাগতিকদের।

হঠাৎ লাফিয়ে উঠা বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মুশফিকুর রহিম (১২৪ বলে ৩৯)। অধিনায়কের বিদায়ে ভাঙে ৮৭ রানের জুটি। ৬৮তম ওভারে মুশফিক ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ২২৭/৬। মেহেদী হাসান মিরাজ ক্রিজে আসার সময় জয় থেকে ৫৯ রানে দূরে স্বাগতিকরা।

ক্রিস ওকসের বলে লেগবাই চারে বাংলাদেশের লক্ষ্য নামে একশ’র নিচে। ৫৬ ওভারে স্বাগতিকদের স্কোর ১৯১/৫। ষষ্ঠ উইকেটে মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমান ৯০ বলে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন।

চতুর্থ দিনের চা বিরতিতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে ১৭৯ রান। মুশফিকুর রহিম ২২ ও সাব্বির রহমান ২৫ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য তখন আরও ১০৭ রান চাই স্বাগতিকদের। দিনের দ্বিতীয় সেশনে ২৮ ওভারে ৯৩ রান যোগ করতে মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসানের উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

বেন স্টোকসের বলে চার হাঁকিয়ে ৪৪তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দেড়শ’ রানে নিয়ে যান মুশফিকুর রহিম। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে তখন জয়ের জন্য আরও ১৩৬ রান চাই স্বাগতিকদের।

আক্রমণে ফিরেই আঘাত হানেন মইন আলি। এই ইংলিশ অফ স্পিনারের বলে জনি বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ৩৯ বলে ২৪ রান করে ফেরার সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৪০ রান। স্বাগতিকদের তখন দরকার আরও ১৪৬ রান।

গ্যারেথ ব্যাটির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ (৩৬ বলে ১৭)। রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয়ে তার ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ১০৮/৪। জয়ের জন্য তখনও দরকার ১৭৮ রান।

আবেদন ছিল ক্যাচের, সাড়া দেননি আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। রিভিউ নেয় ইংল্যান্ড। রিপ্লেতে দেখা যায় মুমিনুল হকের ব্যাট স্পর্শ করেনি গ্যারেথ ব্যাটির বল। কিন্তু সেটাই আবার কাল হয়ে যায়। ক্যাচ না হলেও এলবিডব্লিউ হয়ে যান ৪৭ বলে ২৭ রান করা মুমিনুল। তার বিদায়ে বাংলাদেশের স্কোর ১০৩/৩। সাকিব আল হাসান ক্রিজে আসার সময় আরও ১৮৩ রান চাই বাংলাদেশের।

গ্যারেথ ব্যাটির বলে মুমিনুল হকের চারে দ্বিতীয় ইনিংসের ২৬তম ওভারে একশ’ পার হয় বাংলাদেশের সংগ্রহ।

চতুর্থ দিনের লাঞ্চে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৮৬/২। মুমিনুল হক ১৯ ও মাহমুদউল্লাহ ৪ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য তখন ২০০ রান চাই স্বাগতিকদের।

দ্বিতীয় উইকেট মুমিনুলের সঙ্গে ৪৬ রানের জুটি গড়েন ইমরুল, যা এই ম্যাচের চার ইনিংসে সর্বোচ্চ। এই ম্যাচে দ্বিতীয় উইকেটে আগের তিনটি জুটি ০, ০, ১ রানের।

অফ স্পিন দারুণভাবে সামাল দেওয়া ইমরুল কায়েস ফিরেন আদিল রশিদের লেগ স্পিনে। সুইপ করতে গিয়ে স্লিপে জো রুটকে সহজ ক্যাচ দেন ৬১ বলে ৪৩ রান করা ইমরুল। তার বিদায়ে ২১তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৮১/২। জয়ের জন্য তখন স্বাগতিকদের প্রয়োজন ২০৫ রান।

অফ স্পিন খুব ভালোভাবে সামাল দেন ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক। ১৫তম ওভারে ক্রিস ওকসকে আক্রমণে আনেন অ্যালেস্টার কুক। ইংলিশ পেসার খুব একটা পরীক্ষা নিতে পারেননি দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের। ১৯তম ওভারে লেগ স্পিনার আদিল রশিদ আসেন আক্রমণে। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই পান সাফল্য।

তামিম ইকবালের উইকেট হারিয়ে ত্রয়োদশ ওভারেই আসে বাংলাদেশের অর্ধশতক।

আগের বলে রিভিউ নিয়েও তামিম ইকবালকে ফেরাতে পারেনি ইংল্যান্ড। কিন্তু মইন আলির পরের বলেই শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন বাংলাদেশের সেরা উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। দশম ওভারে ৩৫ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। এই টেস্টে চার ইনিংসেরর সেরা উদ্বোধনী জুটি গড়তে ৩৩ বলে ৯ রান করেন তামিম।

২৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়ার শুরুতে আস্থার সঙ্গে খেলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। দুই অফ স্পিনার মইন আলি ও গ্যারেথ ব্যাটির স্পিন ভালোভাবেই সামলান দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। প্রথম ইনিংসের মতোই শুরুতে সতর্ক তামিম। বাজে বল পেলেই চড়াও হন ইমরুল।

২০০৮ সালে এই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই প্রথম ইনিংসে ১৭১ রানে গুটিয়ে যাওয়া নিউ জিল্যান্ড ম্যাচ জিতেছিল শেষ ইনিংসে ৩১৭ রান তুলে। তবে পারিপার্শ্বিকতা এবার ভিন্ন। উইকেটের আচরণ নাটকীয়ভাবে না বদলালে এই রান তাড়া বাংলাদেশের জন্য হবে ভীষণ কঠিন। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ২১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে। এই ম্যাচের লক্ষ্যের চেয়ে বেশি রান চতুর্থ ইনিংসে অবশ্য তিন বার করতে পেরেছে বাংলাদেশ, তবে হেরেছে তিনটিতেই।

চতুর্থ দিন সকালে ২০ মিনিটের মধ্যে ১৩ রানে ইংল্যান্ডের শেষ দুই উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তাতে লক্ষ্য থাকে তিনশ’ রানের নিচে। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ বলেছিলেন, তিনশ’ রানের নিচে লক্ষ্য পেল জেতার সম্ভাবনা খুব ভালোভাবেই বেঁচে থাকবে বাংলাদেশের।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (আগের দিন ২২৮/৮) ৮০.২ ওভারে ২৪০ (কুক ১২, ডাকেট ১৫, রুট ১, ব্যালান্স ৯, মইন ১৪, স্টোকস ৮৫, বেয়ারস্টো ৪৭, ওকস ১৯*, রশিদ ৯, ব্রড ১০, ব্যাটি ৩; মিরাজ ১/৫৮, সাকিব ৫/৮৫, তাইজুল ২/৪১, কামরুল ১/২৪, মাহমুদউল্লাহ ০/৬, শফিউল ১/১০)

আগের দিন জনি বেয়ারস্টোর আউট থেকে শেষ ৫১ রানে ইংল্যান্ড হারায় ৫ উইকেট। তাদের প্রথম ৫ উইকেট পড়েছিল ৬২ রানে। মাঝে বেন স্টোকস আর বেয়ারস্টোর ১২৭ রানের জুটি।

দ্বিতীয় নতুন বলে ইংল্যান্ডকে গুটিয়ে দেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারের দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লিউ হন গ্যারেথ ব্যাটি (৮ বলে ৩)। ৮১তম ওভারে ২৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় অতিথিরা। জেতার জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ২৮৬ রান।

এর আগে সাকিব আল হাসানের বলে দ্রুত এক রান নিতে গিয়ে রান আউট হন স্টুয়ার্ট ব্রড (২৭ বলে ১০)। মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ ফিল্ডিংয়ের পর বাকি কাজটুকু সহজেই সারেন মুশফিকুর রহিম। ৭৮তম ওভারে ব্রড ফিরে যাওয়ার সময় ইংল্যান্ডের স্কোর ২৩৩/৯।  

রোববার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৮ উইকেটে ২২৮ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানে এগিয়ে থাকা অতিথিদের লিড তখন ২৭৩।  

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৪৮ (তামিম ৭৮, ইমরুল ২১, মুমিনুল ০, মাহমুদউল্লাহ ৮৫, মুশফিক ৪৮, সাকিব ৩১, শফিউল ২, সাব্বির ১৯, মিরাজ ১, তাইজুল ৩*, কামরুল ০; ব্রড ০/১২, ব্যাটি ১/৫১, ওকস ০/১৫, রশিদ ২/৫৮, মইন ৩/৭৫, স্টোকস ৪/২৬, রুট ০/৫)।
 
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৯৩ (কুক ৪, ডাকেট ১৪, রুট ৪০, ব্যালান্স ১, মইন ৬৮, স্টোকস ১৮, বেয়ারস্টো ৫২, ওকস ৩৬, রশিদ ২৬, ব্রড ১৩, ব্যাটি ১*; শফিউল ০/৩৩, মিরাজ ৬/৮০, কামরুল ০/৪১, সাকিব ২/৪৬, তাইজুল ২/৪৭, সাব্বির ০/১১, মাহমুদউল্লাহ ০/১৭, মুমিনুল ০/০)।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: