facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

জাজিরায় হত্যাকাণ্ডের জেরে ২০০ বাড়ি ভাঙচুর


১৮ জানুয়ারি ২০১৭ বুধবার, ০৬:৫০  পিএম

এমএ ওয়াদুদ মিয়া, শরীয়তপুর

শেয়ার বিজনেস24.কম


জাজিরায় হত্যাকাণ্ডের জেরে ২০০ বাড়ি ভাঙচুর

জাজিরায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হোসেন খা নামে একজন নিহত হওয়ার পর থেকে ওই এলাকার তিনটি ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামে ভাঙচুর লুটপাট এখনও অব্যাহত রয়েছে। গত এক সপ্তাহে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রায় দুইশতাধিক বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর, লুটপাট করছে। লুটপাট এবং ভাঙচুরের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, দেখলে মনে হবে কোন কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরবাড়িগুলো ভেঙ্গে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে।

মামলা এবং পুলিশি গ্রেফতারের ভয়ে প্রতিপক্ষের কোনো পুরুষ বাড়িতে না থাকায় নিহতের সমর্থকরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা লুটতরাজের পাশাপাশি অবিবাহিত যুবতী মেয়েদের শ্লীলতাহানী ও ধর্ষণের মত জঘন্যতম ঘটনা ঘটাচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়াই প্রতিপক্ষের লোকদের কাছ থেকে ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করছে। যে সকল পরিবার চাঁদা দিতে অপারগতা করছে তাদের উপরই নেমে এসেছে শ্লীলতাহানী ও ধর্ষণসহ এলাকা ছাড়ার হুমকি। এসব কারণে ৪০ থেকে ৫০টি পরিবার তাদের পৈত্রিক ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের ভয়ে অনেক বাড়ির যুবতী মেয়েরা আশ্রয় নিচ্ছে তাদের আত্মীয় স্বজনের বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব জঘন্য ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জাজিরা থানা এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শফিউদ্দিন শফি খলিফা এবং বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজ সরদারের সমমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়। এতে ককটেল বোমার আঘাতে শফি খলিফার সমর্থক হোসেন খান (৩২) নামে এক যুবকের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরো অন্তত ১৫ জন আহত হয়। ঘটনার পর সিরাজ সরদারের সমর্থকদের বাড়িঘরে ভাঙচুর এবং লুটতরাজ শুরু হয়। এরপর ১১ জানুয়ারি চেয়ারম্যান সিরাজ সরদারকে প্রধান করে ৬৫ ব্যক্তির নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামি করে জাজিরা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

বড়কান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিউদ্দিন খলিফা বলেন, কিছু কিছু এলাকায় লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে আমি শুনেছি। তবে শ্লীলতাহানিসহ মহিলাদের সাথে দুর্ব্যবহারের ঘটনা আমার জানা নেই। যাতে সামনে আর কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমার বাড়ীতে মিটিং করে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে দিয়েছি। কোন অপ্রীতিকর ঘটনার প্রমান পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কেউ  চাঁদা চেয়েছে কিনা এ বিষয়টি আমার জানা নেই।  

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এলাকা শান্ত আছে। কোন স্থানে ভাঙচুর বা লুটপাটের সংবাদ পাওয়া গেলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: