facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

ছেলের মৃত্যু, স্ত্রী অন্যের ঘরে, ১৫ বছর শিকলে বাঁধা রিপন


১৪ মে ২০১৭ রবিবার, ০৯:১২  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


ছেলের মৃত্যু, স্ত্রী অন্যের ঘরে, ১৫ বছর শিকলে বাঁধা রিপন

মাদারীপুরের কালকিনিতে আট বছর বয়সী ছেলের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠতে না ওঠতেই মো. রিপন বেপারীর স্ত্রী অন্য পুরুষের হাত ধরে চলে যায়। এর পর প্রায় ১৫ বছর ধরে শিকলে বাঁধা রিপন বেপারি। সম্প্রতি তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশের পরও প্রশাসনের টনক নড়েনি। বিবেক জাগেনি সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের।

স্ত্রী-সন্তানকে হারিয়ে অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে অপরের ক্ষতি করবেন এমন আশঙ্কায় তাকে তার পরিবার পায়ে শিকলবন্দি করে রেখেছেন বলে জানায় স্থানীয়রা। এখন তিনি মুক্তি চান, চান সুন্দর একটি স্বাভাবিক জীবন। কেউ শোনে না তার ওই আকুতি। তিনি কাউকে দেখেই বলতে থাকেন আমাকে মুক্তি দিন। রিপন পৌর এলাকার চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুস কুট্টি বেপারির ছেলে।

শিকলে বাঁধা অবস্থায় রিপন সাংবাদিকদের কাছে বলেন, তিনি প্রথমে সমাজের একজন ভালো মনের মানুষ ছিলেন। তার একটি সাজানো সংসার ছিল। ছেলে মেহেদী হাসান ও স্ত্রী সালেহা বেগমকে নিয়ে চলছিল তার পরিপাটি জীবন। কিন্তু ৮ বছর বয়সে তার ছেলে মেহেদী হাসান মারা যায়। এরপর থেকেই শোকে কাতর হয়ে যান রিপন।

অন্যদিকে স্ত্রী সালেহা বেগম অন্য পুরুষের সঙ্গে বিয়ে করে চলে যায়। এতে সে আরও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এরপর তাকে তার বাবা বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে পায়ে শিকল বেঁধে বন্দি করে রাখেন। সেই থেকে শিকলে বাঁধা বন্দি অবস্থায় পার হয়ে যায় তার জীবনের ১৫টি বছর। এমন জীবন থেকে সে এখন মুক্তি চায়, চায় সুন্দর একটি স্বাভাবিক জীবন।

এ ব্যাপারে রিপনের বাবা আবদুস কুট্টি বেপারি বলেন, স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে রিপন পাগল হয়ে গেছে। রিপন যাতে অপরের কোনো ক্ষতি করতে না পারে এজন্য তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে একটি ঘরে বন্দি রাখা হয়েছে।

মানবাধিকার কর্মী নেছারউদ্দিন বলেন, রিপনকে এভাবে আটকে রাখা সম্পূর্ণ অমানবিক। আমার মতে তাকে মুক্তি দেয়া উচিত।

চিকিৎসক মৃণাল মজুমদার বলেন, রিপন বেপারিকে আটকে না রেখে সঠিক চিকিৎসা সেবা দিলে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, রিপনের আটকের বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে এ বিষয়ে কেউ রিপনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করলে তাকে পুলিশ দিয়ে উদ্ধার করা যেতে পারে।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন:

বিশেষ প্রতিবেদন -এর সর্বশেষ