০৪ এপ্রিল ২০১৭ মঙ্গলবার, ০২:৫৯ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
শেয়ারবাজারে মানুষ বিনিয়োগ করেন লভ্যাংশের আশায়। এ লভ্যাংশ ঘোষণা করেন পরিচালনা পর্ষদ। পর্ষদ লভ্যাংশ ঘোষণা করার সময় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করবেন। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভালো কোনো কোম্পানি যখন লভ্যাংশ ঘোষণার সময় বিনিয়োগকারীদের বিষয়টি বিবেচনা করে না, তখন বাজারে তার প্রভাব পড়ে। তাই লভ্যাংশ ঘোষণার সময় বাজার পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে এ বিষয়টিও পর্ষদের বিবেচনায় রাখা উচিত। সোমবার এনটিভির ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। মডার্ন সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুজিস্তা-নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ মো. মামুনুর রশীদ।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বর্তমান বাজার অনেকটা ব্যাংক নিয়ন্ত্রিত। ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুম চলছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা এ খাতের শেয়ারের প্রতি বেশি আগ্রহী। বিভিন্ন ব্যাংক এখন ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। এর মধ্যে একটি ব্যাংকের ঘোষণা নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। কেন তারা ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলো, তা আমার জানা নেই। কম লভ্যাংশ ঘোষণা দেওয়ার অর্থ হলো বড় শেয়ারহোল্ডাররা কম লভ্যাংশ পাবেন। তাদের মুনাফার অংশ কমে যাবে। স্পন্সর ও পরিচালকরা এটার কারণ জানেন। কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এটি জানেন না। তবে পরিচালনা পর্ষদের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করা উচিত ছিল।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার জন্য স্বতন্ত্র পরিচালক রয়েছেন। কিন্তু স্বতন্ত্র পরিচালকরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। ৩ মাস পর বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত হয়ে একটি কোম্পানির পরিচালনায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাদের যে ভাতা দেওয়া হয়, সেটিও অপ্রতুল। তিনি স্বতন্ত্র পরিচালকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে তাদের কোম্পানির কার্যক্রমে আরও বেশি অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাজার এখনও অনেকটা ব্যাংকনির্ভর। গত পাঁচ বছরে ভালো কোনো কোম্পানি বাজারে আসেনি। অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোম্পানি বাজারে এসেছে। কয়েকটি সেক্টরে বেশকিছু ভালো কোম্পানি রয়েছে। কিন্তু তারা আসছে না।
সুশাসন সম্পর্কে ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। একদিনে হবে না। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী প্রথম প্রজন্মের। এ কারণে তারা মালিকানা শেয়ার করতে চায় না। এজন্য পুঁজিবাজারকে আকর্ষণীয় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মো. মামুনুর রশীদ বলেন, পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে স্বতন্ত্র পরিচালকদের পরিচালনা পর্ষদে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাদের সম্মানী বাড়িয়ে আরও বেশি দায়িত্ব দিতে হবে। একটি কোম্পানির সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল ও স্বতন্ত্র পরিচালক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু কাউন্সিল এখনও গঠন করা হয়নি। কাউন্সিল গঠিত হলে আর্থিক প্রতিবেদনের জবাবদিহি বাড়বে। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির ওপর আরও বেশি আস্থা রাখবে।
বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি কবীর আহমেদ চৌধুরী বলেন, আপনারা সবসময় বলেন, একটি কোম্পানির নেট অ্যাসেট ভ্যালু, শেয়ারপ্রতি আয়, রিজার্ভ, মুনাফা সবকিছু বিবেচনা করে শেয়ার কিনতে। এসব বিবেচনা করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার কিনেছিলেন। কিন্তু লভ্যাংশ ঘোষণার পর শেয়ারটির দাম ১২ শতাংশ কমেছে। ৪৯ টাকার শেয়ার এখন ৩৫ টাকায় নেমে এসেছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা এখন কোথায় যাবো?
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।