facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪

Walton

খুঁড়িয়ে উৎপাদন হওয়া কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়লো লাফিয়ে


২৪ নভেম্বর ২০১৭ শুক্রবার, ০২:২৯  পিএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


খুঁড়িয়ে উৎপাদন হওয়া কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়লো লাফিয়ে

 

উৎপাদন চলছে নামমাত্র। পাশাপাশি ব্যবসা চালানোর মতো চলতি মূলধনের ঘাটতি চরম। ঋণ অনিয়মের কারণে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় কোম্পানির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা পলাতক। এত সব সংকটের মধ্যেও কোনো কারণ ছাড়াই শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম হুটহাট অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। কোম্পানিটি হলো এমারেল্ড অয়েল।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা ৬০ পয়সা বা ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ২০ পয়সায়। দিন শেষে এটি ডিএসইতে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ কোম্পানির মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। শেয়ারের এ মূল্যবৃদ্ধি দেখে কোম্পানির বাস্তব চিত্রের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন।

২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এমারেল্ড অয়েল। কোম্পানিটি ‘স্পন্দন’ নামে রাইস বান অয়েল উৎপাদন ও বাজারজাত করে। বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির দায়ে কোম্পানিটির পরিচালকদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। অনিয়মের মাধ্যমে বেসিক ব্যাংকের দিলকুশা শাখা থেকে ৭৪ কোটি টাকার ঋণসুবিধা নেয়। পরে ওই ঋণ পরিশোধ না করায় এমারেল্ড অয়েলের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ একাধিক পরিচালক মিলিয়ে মোট নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলার পর থেকে কোম্পানিটির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা পলাতক। ফলে কোম্পানিটি পরিচালনার ক্ষেত্রে চরম সংকট দেখা দেয়। বন্ধ হয়ে যায় কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম।

গত এপ্রিলে এমারেল্ড অয়েল কর্তৃপক্ষ শেয়ারধারীদের জানায়, কোম্পানিটি পরিচালনার জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ খোঁজা হচ্ছে। তবে এখনো নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ খুঁজে পায়নি কোম্পানিটি। ফলে শেয়ারধারীদের এ–সংক্রান্ত হালনাগাদ কোনো তথ্য জানানো হয়নি। তবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, মূলধন সংকটে সীমিত পর্যায়ে চলছে উৎপাদন কার্যক্রম।

গত জুনে কোম্পানিটির আরেকটি আর্থিক বছর শেষ হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত শেয়ারধারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশের ঘোষণা দিতে পারেনি। এ কোম্পানির প্রকাশিত সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনটি ছিল গত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের। অনিরীক্ষিত ওই আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দেখানো হয়েছে ২ পয়সা। তাতে গতকাল দিন শেষে এটির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০-এ। তাতে কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, পুঁজিবাজার বিশ্লেষকেরা বলেন, যে কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত যত বেশি সে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ তত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

এদিকে, ঢাকার বাজারে সূচক ও বাজার মূলধন মিলিয়ে গতকালও তিনটি নতুন রেকর্ড হয়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স, শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস এবং বাজার মূলধনে এসব রেকর্ড হয়েছে। ডিএসইএক্স সূচকটি গতকাল ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৩২৩ পয়েন্টে। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে চালু হওয়ার পর এটিই সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান। শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএস সূচকটি বৃহস্পতিবার প্রায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৯৩ পয়েন্টে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে শরিয়াহভিত্তিক এ সূচকটি চালু হয়, গতকালই সেটি সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে।

ডিএসইর বাজার মূলধন গতকাল দিন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২৬ হাজার ২৬৫ কোটি টাকায়, এটিও বাজার মূলধনের রেকর্ড। এর আগে সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর বাজার মূলধন ৪ লাখ ২৬ হাজার ১০৭ কোটি টাকার রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছিল।

সূচক ও বাজার মূলধন মিলিয়ে তিনটি রেকর্ড হলেও লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। গতকাল দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৫৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৪৩ কোটি টাকা কম।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি বৃহস্পতিবার ১০০ পয়েন্ট বেড়েছে। আর দিন শেষে সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৯৭ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। বুধবার চট্টগ্রামের বাজারে ৪৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: