১৬ মে ২০১৮ বুধবার, ০২:৩০ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির আর্থিক হিসাবসহ অত্যাবশ্যকীয় তথ্য সংগ্রহে অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এ জন্য কৌশলগত অংশীদার হতে চলা সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের কাছ থেকে প্রথমে প্রযুক্তিগত ও পরামর্শ সেবা চাইবে স্টক এক্সচেঞ্জটি।
কৌশলগত অংশীদার হতে গত সোমবার ডিএসইর ২৫ শতাংশ মালিকানা নিতে শেয়ার ক্রয় চুক্তি (এসপিএ) স্বাক্ষর করেছে চীনা জোট। এ জন্য তারা ৯৪৫ কোটি টাকা দেবে। মঙ্গলবার উভয় পক্ষ চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে বৈঠক করেছে।
ডিএসইর কর্মকর্তারা জানান, বিশেষ কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হলে এ-সংক্রান্ত সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে সর্বাধিক দুই মাস সময় লাগবে। তারা আরও জানান, কৌশলগত অংশীদার হওয়ার পরই তাদের কাছ থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রথমে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কাছ থেকে অগ্রাধিকারভাবে যেসব প্রযুক্তিগত ও অভিজ্ঞতা চাওয়া হবে তার মধ্যে বিনিয়োগকারীদের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছানোর বিষয়টি থাকবে।
ডিএসইর প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কৌশলগত অংশীদাররা তিন কোটি ৭০ লাখ ডলার মূল্যের সহায়তা বিনামূল্যে প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- লেনদেন ব্যবস্থা বা ট্রেডিং সিস্টেম ও সার্ভিল্যান্স বা লেনদেনে নজরদারি ব্যবস্থার উন্নয়ন, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত (বিপিএম) ব্যবস্থায় পরামর্শক সেবা প্রদান, বন্ড বাজারের লেনদেন ব্যবস্থা, তথ্য ঘোষণা ব্যবস্থা ও বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রকাশের ব্যবস্থা, ডাটা সেন্টার ও এ-সংক্রান্ত পরামর্শ সেবা ইত্যাদি। প্রচলিত সার্ভারের বাইরে ইন্টারনেট ক্লাউডে তথ্য সংরক্ষণ সম্পর্কিত প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ।
তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে পাওয়া তথ্য দ্রুততার সঙ্গে বিনিয়োগকারী পর্যায়ে প্রকাশের জন্য উন্নত শেয়ারবাজারগুলোর সবাই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় চলে গেছে। সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ বিনামূল্যে যেসব সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছে, তার মধ্যে এটি রয়েছে। ডিএসইর পক্ষ থেকে এই সহায়তা প্রথমে চাওয়া হবে। অবশ্য দুই বছর আগেই ডিএসই নিজ খরচে এ-সংক্রান্ত সফটওয়্যার ও পরামর্শক সেবা নিতে ফিলিপাইনের একটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করেছিল। কিন্তু কৌশলগত অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর প্রেক্ষাপটে ওই উদ্যোগ থেকে সরে আসে ডিএসই।
কর্মকর্তারা জানান, এখন কোনো কোম্পানি বিকেলে পর্ষদ সভা শেষে এ তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জে দিলে তা পরদিন সকালে ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশ হয়। স্বয়ংক্রিয় এ ব্যবস্থা চালু হলে তথ্য প্রদানের আধা ঘণ্টার মধ্যে ওয়েবসাইটে প্রকাশ হবে। মাসের শুরুতেই শেয়ারহোল্ডিং পরিবর্তন-সংক্রান্ত তথ্য পেয়ে যাবেন নিয়োগকারীরা।
কর্মকর্তারা আরও জানান, আর্থিক প্রতিবেদন ও শেয়ারহোল্ডিং সংক্রান্ত তথ্য ছাড়াও কোম্পানির পক্ষ থেকে নানা ধরনের ঘোষণাও থাকে। এসব তথ্য এখন কোম্পানির পক্ষ থেকে চিঠি আকারে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে সব তথ্যই
তারা সরাসরি ওয়েবসাইটে পোস্টের উদ্দেশ্যে পোস্ট করবে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে সরাসরি ওয়েবসাইটে পোস্ট করা তথ্যে ভুল থাকলে তার দায় কে নেবে- এমন প্রশ্নে কর্মকর্তারা বলেন, এ দায় সবসময়ই তথ্য প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের। এখনও এ ক্ষেত্রে ভুলের দায় কোম্পানির। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে তখনও ভুলের দায় কোম্পানির কাছে থাকবে। তবে সতর্কতা হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের দিক থেকে ওপরের দিকে থাকা এবং কোম্পানি পরিচালনায় সব দিক থেকে যাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সুনাম আছে- এমন ২৫ থেকে ৩০ কোম্পানিকে পরীক্ষামূলকভাবে সরাসরি ওয়েবসাইটে তথ্য ঘোষণার সুযোগ দেওয়া হবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।