২২ আগস্ট ২০১৯ বৃহস্পতিবার, ০২:০৬ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
অভিহিত মূল্য ১০ টাকা থেকে কম দরে কেনাবেচা হওয়া শেয়ার নিয়ে নতুন করে কারসাজি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্নিষ্টরা। কিছু চক্র গুজব ছড়িয়ে এসব শেয়ারের দর বাড়াচ্ছে। এতে প্রলুব্ধ হয়ে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী এসব শেয়ারে ঝুঁকছেন। গত কয়েকদিন থেকে এমন শেয়ারের লেনদেনও বাড়ছে।
গতকাল বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে সাতটি এবং শীর্ষ ২০ কোম্পানির মধ্যে ১৩টিই ছিল এমন শেয়ার। শেয়ারগুলোর বাজারদর ৬ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে গতকাল এ বাজারে অন্তত ১৮ শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে এবং বিক্রেতা ছিল কম। এর মধ্যে ১৩টিরই বাজার মূল্য ছিল ১০ টাকার কম।
শেয়ারগুলো হলো- অ্যাপোলো ইস্পাত (সর্বশেষ লেনদেন মূল্য ৬.৪০ টাকা), বিআইএফসি (৩.৭০ টাকা), বেক্সিমকো সিনথেটিক্স (৪.৯০ টাকা), সিএনএটেক্স (২.৮০ টাকা), ঢাকা ডাইং (৩.৯০ টাকা), ডেল্টা স্পিনার্স (৫.৩০ টাকা), ফ্যামিলিটেক্স (৩.৬০ টাকা), ফারইস্ট ফাইন্যান্স (৩.৪০ টাকা), জেনারেশন নেক্সট (৪.৭০ টাকা), কেয়া কসমেটিক্স (৪.৯০ টাকা), তাল্লু স্পিনিং (৫.৩০ টাকা), তুংহাই নিটিং (৩.৬০ টাকা) ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ (১.৯০ টাকা)।
এর বাইরে তিন দিন আগেও ১০ টাকার থেকে কমে কেনাবেচা হওয়া শেয়ারগুলোর দর এখন ১০ টাকার ওপরে। এর অন্যতম হলো- খান ব্রাদার্স পিপি (১০.৭০ টাকা), মোজাফফর হোসেন স্পিনিং (১১.৫০ টাকা) ও ইয়াকিন পলিমার (১১.৯০ টাকা)। রুগ্ণ এসব কোম্পানির বাইরে গতকাল অবশ্য আরএকে সিরামিক (৩৫.২০ টাকা) ও স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক (৩৬০.৯০ টাকা) কোম্পানির শেয়ারও সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে থাকা কর্মকর্তারা জানান, ঈদের ছুটির পর এসব শেয়ারের দর বাড়তে দেখা যাচ্ছে। বেশ কিছু সংঘবদ্ধ চক্র শেয়ারগুলোর দর বাড়াচ্ছে। তবে এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাড়ছে, যা উদ্বেগের বিষয়। ঈদের আগে এসব কোম্পানির মোট লেনদেন দুই কোটি টাকার বেশি ছিল না, এখন তা ১০ কোটি টাকার ওপরে। কর্মকর্তারা আরও জানান, স্টক এক্সচেঞ্জের মোট লেনদেনের তুলনায় জেড ক্যাটাগরি ও মন্দ মানের শেয়ারগুলোর লেনদেনের পরিমাণ কম হলেও সার্বিক লেনদেনে এর প্রভাব রয়েছে। বিষয়টি স্টক এক্সচেঞ্জ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারির মধ্যে আছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
জানতে চাইলে একাধিক শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, বাজারে যখন অস্থিরতা থাকে বা বড় বিনিয়োগকারীরা নিষ্ফ্ক্রিয় হয়ে পড়েন তখন খারাপ মানের শেয়ার নিয়ে কারসাজি হয়। কিছু চিহ্নিত ব্রোকারেজ হাউস থেকে এসব শেয়ার নিয়ে কারসাজি হলেও কখনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
দিনের লেনদেন শেষে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ডিএসইতে গতকাল ১২১ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারদর বেড়েছে, দর হারিয়েছে ১৯৪টি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টির দর। এতে ডিএসইএক্স ৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৫২২৩ পয়েন্টে নেমেছে। সিএসইতে ১০৭ শেয়ার ও ফান্ডের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১২১টির দর কমেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সিরামিক খাত ছাড়া বাকি প্রায় সব খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমেছে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।