facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

ওইমেক্স ইলেকট্রোডের আইপিওর সম্মতিপত্র দুই মাসেও মেলেনি


১৩ জুলাই ২০১৭ বৃহস্পতিবার, ১০:৩৬  এএম

শেয়ার বিজনেস24.কম


ওইমেক্স ইলেকট্রোডের আইপিওর সম্মতিপত্র দুই মাসেও মেলেনি

গত ৯ মে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬০৪তম সভায় ওইমেক্স ইলেকট্রোডের আইপিও অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়। এর পর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোম্পানিটিকে আইপিওর সম্মতিপত্র (কনসেন্ট লেটার) দেয়নি কমিশন। আর সম্মতিপত্র না পাওয়ার কারণে সাবক্রিপশনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে পারছে না কোম্পানিটি।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল কমিশন সভায় আইপিও অনুমোদনের ১২ দিন পরেই ২৫ এপ্রিল সম্মতিপত্র পেয়েছিল বিবিএস কেবলস লিমিটেড। এরই মধ্যে কোম্পানিটির সাবক্রিপশনও শেষ হয়ে গেছে।

ওইমেক্সকে এখনো পর্যন্ত সম্মতিপত্র না দেয়ার কারণ জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান বলেন, পরিবেশ-সংক্রান্ত ছাড়পত্রের বিষয়ে কিছু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের বিষয় রয়েছে। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের মতামত নেয়া হয়েছে। সবকিছু পর্যালোচনা করে সম্মতিপত্র প্রদানে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে ওইমেক্সের ইস্যু ব্যবস্থাপক এমটিবি ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ জানান, যতটুকু জানি, পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে মৌখিকভাবে আলোচনা করে ছাড়পত্রের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই কমিশন সভায় আইপিওর অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। তবে কোম্পানিটির তিনটি পণ্যের মধ্যে জিআই তার ও নেইল (পেরেক) নতুন পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত। আমরা জেনেছি, এ দুটি পণ্যের পরিবেশ ছাড়পত্রের বিষয়েও বিএসইসির পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকেও বিএসইসির কোয়ারির জবাব দেয়া হয়েছে। সম্ভবত অফিশিয়ালি চিঠি আসতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তাই এখনো সম্মতিপত্র ইস্যু হয়নি। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুতই সম্মতিপত্র পেয়ে যাব।

এদিকে পরিবেশ ছাড়পত্র নিয়ে জানতে চাইলে ওইমেক্স ইলেকট্রোডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মো. ইকরামুল ইসলাম বলেন, আমাদের তিনটি পণ্যেরই আলাদা আলাদা পরিবেশ ছাড়পত্র ছিল। ছাড়পত্র না থাকলে কমিশন সভায় আইপিওর অনুমোদন পেতাম না। আমাদের কাছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের কপি রয়েছে। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই সম্মতিপত্র পেয়ে যাব।

ঘোষণা অনুসারে, বিএসইসির অনুমোদনক্রমে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে শেয়ার বেচে বাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করবে ওইমেক্স। এ অর্থে তারা মূলধনি যন্ত্রপাতি, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও কাঁচামাল কিনবে। কিছু অর্থ আইপিও প্রক্রিয়ার ব্যয়নির্বাহেও খরচ করা হবে।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরে পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১৪ টাকা ৮৭ পয়সা। গত পাঁচ বছরে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি গড় আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৩ পয়সা।

প্রসপেক্টাস অনুসারে, পাঁচ বছর ধরে কোম্পানিটির বিক্রি ও মুনাফায় টানা প্রবৃদ্ধি রয়েছে। ২০১২ সালে তাদের বিক্রি ছিল ৯ কোটি ৫১ লাখ ৬১ হাজার টাকা, ২০১৬ হিসাব বছরে যা ৪১ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ২৪ লাখ থেকে ৬ কোটি  ৪২ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কারখানা ও ঢাকায় হেড অফিস নিয়ে ওয়েল্ডিং রড প্রস্তুতকারক হিসেবে যাত্রা করে ওইমেক্স ইলেকট্রোড। মেগা ফেরো, মেগা মেরিন, রয়্যাল স্পিড, যশোর রয়্যাল ও মেগা এফএস তাদের ওয়েল্ডিং রডের ব্র্যান্ড। ২০১৫ সালে তারা টাইগার ব্র্যান্ডের জিআই তার ও পেরেক উৎপাদন শুরু করে। একই বছর তারা আইএসও সনদ পায়।

অনুমোদন পাওয়ার আগেও ওইমেক্স ইলেকট্রোডের আইপিও নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ২০১৫ সালে বিএসইসির কাছে আইপিও আবেদনের সময় পরিচালন নগদপ্রবাহ নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল কোম্পানিটি। ২০১৪ হিসাব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদপ্রবাহ (এনওসিএফএস) ছিল ঋণাত্মক ২ টাকা ৫৯ পয়সা। আর ২০১৫ হিসাব বছরে তা হয় ১৭ পয়সা। তত্কালীন পাবলিক ইস্যু রুলস অনুসারে, কোনো কোম্পানির আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক দুই বছরের নগদপ্রবাহ ধনাত্মক থাকতে হবে। এ কারণে বিএইসির কাছে দাখিল করা তথ্যে ২০১৪ হিসাব বছরের নগদপ্রবাহও ধনাত্মক হিসেবে দেখায় কোম্পানিটি। আইপিও আবেদনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হওয়ার জন্য এ তথ্য জালিয়াতির আশ্রয় নেয় কোম্পানিটি। পরবর্তীতে কমিশনের কাছে বিষয়টি ধরা পড়লে কোম্পানি ও ইস্যু ব্যবস্থাপককে শোকজ করা হয় এবং কমিশনের শুনানিতে তলব করা হয়। মিথ্যা তথ্য প্রদানের কারণে কোম্পানি ও ইস্যু ব্যবস্থাপক উভয়কে সতর্ক করে দেয় কমিশন। একই সঙ্গে ওইমেক্সের আইপিও আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে পুনরায় আবেদন করে কোম্পানিটি। এ দফায় ২০১৫ ও ২০১৬ হিসাব বছরের ধনাত্মক নগদপ্রবাহের সুবাদে তাদের আইপিও আবেদন বিবেচনায় নেয় কমিশন।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: