১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ রবিবার, ১০:৩০ পিএম
এমএ ওয়াদুদ মিয়া, শরীয়তপুর
শেয়ার বিজনেস24.কম
শরীয়তপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এসএসসি গণিত পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থীর সামনে বসা আরেক পরীক্ষার্থীর কাছে স্কেল চাওয়ার অপরাধে তিন পরিক্ষার্থীকে চর থাপ্পর মারলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ ঘটনায় পরীক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে তারা বিচারের দাবি জানিয়েছে। অপর দিকে পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা সম্মিলিতভাবে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসককে ঘটনাটি অবহিত করেছেন। জেলা প্রশাসক তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তাদের।
এ ব্যাপারে এসএসসি পরীক্ষার্থী রাজিব এবং অনিক বলেন, রোববার আমাদের গণিত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা চলাকালীন আমরা পাশের পরীক্ষার্থীর দিকে তাকিয়েছিলাম। তখন ইউএনও স্যার আমাদের দেখে ফেলেন। তারপর তিনি আমাদের খাতা নিয়ে যান এবং আমাদের গায়ে হাত তোলেন।
এসএসসি পরীক্ষার্থী গোপাল জানান, গণিত পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থী আমার কাছ থেকে সামনের বেঞ্চে বসা অপর পরীক্ষার্থী স্কেল নেয়। ওই পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে আমি স্কেল ফেরত চাইলে কেন্দ্র পরিদর্শন করতে আসা শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান দেখে ফেলেন। তখন তিনি আমার চুল টেনে চর থাপ্পর মারেন। আমি তার কাছে ক্ষমা চাইলেও তিনি আমার কথা শুনেননি।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুধু গোপালকে মেরেই ক্ষ্যান্ত হননি। এ সময় তিনি রাজিব এবং অনিক নামের আরো দুই জন পরীক্ষার্থীকে চর থাপ্পর মারেন। এ ঘটনার পর পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষে শরীয়তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে পরীক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কাছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিচার দাবী করেন। এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা পৃথকভাবে জেলা প্রশাসকের কাছে বিষয়টি অবহিত করে বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে এক পরীক্ষার্থীর বাবা ফারুক হোসেন খান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরীক্ষার্থীদের গায়ে হাত তুলবেন কেন? কোনো পরীক্ষার্থী যদি অপরাধ করে তাহলে তিনি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান বলেন, শরীয়তপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল চলছে শুনে আমি ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যাই। সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলি। আমি কোনো পরিক্ষার্থীর গায়ে হাত তুলিনি। কেন্দ্রটিকে নকলমুক্ত রাখার কারণে পরীক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো ছাত্র যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেজন্য কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তা তার গায়ে হাত তোলতে পারেন না। আমি এ বিষয়ে পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।