০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ শুক্রবার, ১০:৪৮ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
পরপর দু`দিন বৃদ্ধির পর বৃহস্পতিবার ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে। দরপতনের সার্বিক ধারা অব্যাহত ছিল অন্যসব খাতের। এতে বাজার সূচকও কমেছে। পাশাপাশি দুই শেয়ারবাজারের লেনদেন পৌনে ২০০ কোটি টাকা বা ২৪ শতাংশ কমে ৫৩৬ কোটি টাকায় নেমেছে। তবে এর মধ্যেও বহুজাতিক এবং জীবন বীমা কোম্পানির বেশিরভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। এসব শেয়ার কেনা বাড়িয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
অন্য এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১০০ টাকার বেশি মূল্যের শেয়ারগুলোর বেশিরভাগের দর বেড়েছে। এমন ৬৭টি শেয়ারের মধ্যে ৪৮টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৮টির। মাঝারি দরের শেয়ারগুলোর (৫০ টাকার বেশি, কিন্তু ১০০ টাকার কম) ক্ষেত্রে ছিল মিশ্রধারা। এমন ৪১ শেয়ারের মধ্যে ২০টির দর বেড়েছে, কমেছে ২০টির। অভিহিত মূল্যের নিচে বেচাকেনা হওয়া ৫৬ শেয়ারের মধ্যে ১৩টির দর বেড়েছে, কমেছে ২৪টির। এ ছাড়া ১০ থেকে ৫০ টাকার বাজারদরের শেয়ারগুলোর অধিকাংশ দর হারিয়েছে। এমন ১৮০ শেয়ারের মধ্যে ১২৩টিরই দর কমেছে।
আর সার্বিক বিচারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৩৪৩ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১১২টির বা প্রায় ৩৩ শতাংশের দর বেড়েছে। কমেছে ২০২টির বা প্রায় ৫৯ শতাংশের। বাকি ২৯টির দর অপরিবর্তিত থেকেছে। ব্যাংকসহ বড় খাতগুলোর দর কমায় বাজার সূচকও বেশ খানিকটা নিচে নেমেছে। ডিএসইএক্স ২৮ পয়েন্ট হারিয়ে নেমেছে ৫৩৩২ পয়েন্টে।
দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতেও ছিল প্রায় একই চিত্র। এ বাজারে ২৪৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ৭৪টির বা ৩০ শতাংশের দর বেড়েছে এবং কমেছে ১৫৩টির বা ৬২ শতাংশের। বাকি শেয়ারে দর ছিল অপরিবর্তিত। এ বাজারের প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৬৯ পয়েন্ট বা পৌনে ১ শতাংশ হারিয়ে ৯৮৭৮ পয়েন্টে নেমেছে।
ডিএসইর খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংক, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্র, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, সেবা ও নির্মাণ এবং বিবিধ খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর কমেছে। বীমা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, সিমেন্টসহ অন্যসব খাতে ছিল মিশ্রধারা। ব্যাংক খাতের আট কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে ১৭টির দর কমেছে। সর্বাধিক ২ শতাংশ দর বেড়েছে এক্সিম ব্যাংকের। বিপরীতে দেড় শতাংশের ওপর দর হারিয়েছে ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক, মার্কেন্টাইল ও শাহজালাল ব্যাংক। ব্যাংকের কারণে সূচক হারিয়েছে প্রায় ৭ পয়েন্ট। তবে ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের দরপতনের হার ছিল বেশি। এ খাতের ২৩ কোম্পানির মধ্যে ২০টিরই দর কমেছে। ১৪টিরই দর কমেছে ২ থেকে সাড়ে ৩ শতাংশ। খাতটির সার্বিক দরপতন হয়েছে ১ শতাংশের ওপর।
কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল বীমা খাতে। ২০ কোম্পানির শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২৬টির দর কমেছে। তবে সার্বিক বিচারে এ খাতের দর বেড়েছে প্রায় দেড় শতাংশ। ১২ জীবন বীমা কোম্পানির মধ্যে ডেল্টা ও প্রগ্রেসিভ লাইফ ছাড়া বাকি ১০টির দাম বৃদ্ধি এর কারণ। এর মধ্যে সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে (১০ শতাংশ বেশি) কেনাবেচা হয়েছে প্রগতি লাইফ ও প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্স। বিপরীতে ৩ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে গ্লোবাল, ইসলামিক, প্রভাতী এবং স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স।
বহুজাতিক ১২ কোম্পানির মধ্যে গতকাল ৮টির দর বেড়েছে। এর মধ্যে টানা তৃতীয় দিনে সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দর এক হাজার ৬৪৫ টাকা ৭০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের শেয়ার। এ ধারায় যোগ হয়েছে রেকিট বেনকিজার। শেয়ারটির দর ৫ শতাংশ বেড়ে দুই হাজার ২০৮ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। বাকি ৬টির দরবৃদ্ধি ১ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে আড়াই শতাংশ দর হারিয়ে লাফার্জ-হোলসিমের দর ৪২ টাকা ৮০ পয়সায় নেমেছে। বার্জারের দর কমেছে ১ শতাংশ।
এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ১৯ কোম্পানির মধ্যে গতকাল ১৮টির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ১১টির দর বেড়েছে, কমেছে পাঁচটির। সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দর ২২২ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে ইস্টার্ন কেবলসের শেয়ার। এ ছাড়া ন্যাশনাল টির পৌনে ৬ শতাংশ এবং রেনউয়িক যজ্ঞেশ্বরের প্রায় ৫ শতাংশ দর বেড়েছে। বিপরীতে ২ শতাংশের ওপর দর হারিয়েছে রূপালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।